নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দলীয় ব্যানারে কর্মসূচি পালন করায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল রোববার ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাঁদের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার প্রক্টর মোখলেসুর রহমান স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখা ৮ এপ্রিল ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে একটি মানববন্ধন করে, যা প্রশংসনীয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন এবং ২১ এপ্রিল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ব্যানারে মানববন্ধন ও র‍্যালি করেন, যা কিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় একটি শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধ করেছেন এবং অপরাপর ছাত্রসংগঠনগুলোর ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তাই আপনাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্টর বরাবর লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

গত ১৪ মার্চ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে সভাপতি হিসেবে সফটওয়্যার প্রকৌশল বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাহাত জামান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের নাঈম সরকার মনোনীত হন।

গত বছরের ৬ নভেম্বর ক্যাম্পাসে দলীয় ব্যানারে রাজনৈতিক কার্যক্রমে আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে দলীয় ব্যানারে কর্মসূচি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান প্রথম আলোকে বলেন, 'যে দুইটা বিষয়ে কর্মসূচি করেছি, সেগুলো জাতীয় ইস্যু। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে লুকিয়ে স্বার্থ হাসিল করতে চাইনি। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাউকে জোর করিনি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষেধাজ্ঞা যদি অমান্য হয়ে থাকে, আমরা তিনদিনের মধ্যে শোকজের জবাব দেব।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোখলেসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে শৃঙ্খলাভঙ্গের কাজ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। আইন অমান্য করে কর্মসূচির কারণে ছাত্রদলের নেতাদের শোকজ করা হয়েছে। লিখিতভাবে তাঁদের জবাব পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে ‍শিবচর থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।

মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন