বস্ত্রকলে গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
Published: 28th, April 2025 GMT
বস্ত্রকলগুলোতে গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এ খাতের শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের কাছে লেখা এক চিঠিতে গতকাল রোববার এ আহ্বান জানান সংগঠনের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল।
চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ শিল্প খাতে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে বিদ্যুৎ খাতে বাড়িয়েছে। এ কারণে নোমান গ্রুপের ২৮টি কারখানার অধিকাংশেরই উৎপাদন প্রায় বন্ধ। গ্রুপের বাকি কারখানাগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম মারাত্নকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাস সংকটের কারণে মিলগুলো কাঙ্খিত উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছে না। এ কারণে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের বস্ত্র সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বস্ত্রকলগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
পেট্রোবাংলার ওয়েবসাইট থেকে তিতাসের গ্যাস সরবরাহের একটি চিত্র তুলে ধরা হয় চিঠিতে। এতে দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারি–এপ্রিল সময়ে তিতাস গ্যাস শিল্প খাতে দৈনিক ১০ কোটি ঘনফুট কম গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ একই পরিমাণ অর্থাৎ, ১০ কোটি ঘনফুট বেশি সরবরাহ করা হয়েছে।
তথ্যমতে, ঢাকা মহানগরীতে আবাসিক পর্যায়ে গ্যাস সরবরাহ স্থিতিশীল রাখা হয়। অথচ শিল্প খাতে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ না কমিয়ে যদি ১২৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হতো তাহলে শিল্প কারখানাগুলো ন্যুনতম চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হতো। গ্যাস সরবরাহে এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বস্ত্রকলগুলোর উৎপাদন কমে এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
আগামী ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে শ্রমিকদের বেতন–বোনাস পরিশোধ নিয়ে সংকট এবং শ্রমিক অসন্তোষের আশঙ্কাও রয়েছে।
এ অবস্থায় তিতাস গ্যাস কর্তৃক শিল্প খাতে প্রাপ্যতার ভিত্তিতে যৌক্তিক অনুপাতে গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। চিঠির একটি অনুলিপি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যানকেও দেওয়া হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ য স সরবর হ গ য স সরবর হ
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
আক্কেলপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর ভিড় বেড়েছে। শয্যাসংকটে রোগীদের মেঝে ও বারান্দায় থাকতে হচ্ছে। এদিকে হাসপাতালে খাওয়ার স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। বাইরে থেকে বেশি দামে রোগীদের স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ৫০টি। গতকাল সোমবার পর্যন্ত এখানে ভর্তি ছিলেন ৭৫ জন রোগী। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ২৯ জন। শয্যা না পেয়ে তাদের অনেককেই বারান্দায়, মেঝেতে ঠাঁই নিতে হয়েছে। এ সময় কথা হয় রামশালা গ্রামের আসমা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাতে ডায়রিয়া ও বমি শুরু হলে হাসপাতালে ভর্তি হই। রোগী বেশি থাকায় শয্যা পাইনি। বারান্দার মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। হাসপাতাল থেকে একটি স্যালাইন পেলেও ৪টি স্যালাইন বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে। একই অভিযোগ করেন তেমারিয়া গ্রামের নুর বানু। তিনি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ১০ মাস বয়সী মেয়েকে রোববার হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। এদিকে রোগীর চাপ বাড়লেও এ হাসপাতালে রয়েছে চিকিৎসক সংকট। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ২৬টি পদের বিপরীতে মাত্র ৩ জন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন। রয়েছে তীব্র স্যালাইন সংকট। রোগীদের বাইরে থেকে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কলেরা স্যালাইনের জন্য সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে চাহিদা দেওয়া হয়েছিল চার হাজার পিস। এর মধ্যে এক হাজার মি.লি. স্যালাইন ২ হাজার পিস ও ৫০০ মি.লি. স্যালাইন ২ হাজার পিস। পাওয়া গেছে মাত্র ৬০০ পিস। ইতোমধ্যে ৩০০ পিস রোগীদের মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে।
আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আসিফ আদনান জানান, হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। অন্য সময়ের তুলনায় ৩ গুণ বেশি ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে আসছে। রোগীর চাপ বাড়লেও চিকিৎসক সংকট রয়েছে। স্যালাইনের সরবরাহও কম। রোগীদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। নানা সীমাবদ্ধতায় সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা আমাদের। তিনি ডায়রিয়া হলে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থেকে কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফি মাহমুদ বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে কয়েকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সরকারিভাবে নিয়োগ না হওয়ায় আমরাও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক পাচ্ছি না। স্যালাইনের সরবরাহ বাড়াতে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে।