তাইজুলের আক্ষেপের জায়গা হলো তারকাখ্যাতি না পাওয়া। মিডিয়াতে এ নিয়ে বেশ কয়েকবার হতাশা প্রকাশ করে অবমূল্যায়নের কথা বলেছেন তিনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট পাওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে পুরোনো আক্ষেপ শোনা গেল তাঁর কণ্ঠে।

তাইজুল ২৭ ওভারে ৬৬ রানে পাঁচ উইকেট শিকার করার পর জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, দুনিয়ার সবচেয়ে ‘আন্ডার রেটেড’ বোলার তাইজুল। সত্যিই কি তাই? দেশে টেস্ট হলেই তাইজুল বাজিমাত করেন। তাঁর পারফরম্যান্স নিয়ে মিডিয়া ইতিবাচক লেখা কম লেখে না। একজন টেস্ট স্পিনার হিসেবে ভালো প্রচার পান তিনি। এরপরও তাইজুলের অসন্তুষ্টির কারণ জানা নেই কারোরই।

টেস্টের শেষ ১০ ইনিংসে চারবার পাঁচ উইকেট পেছেন তাইজুল। নিজের দিনে সম্মানিত হয়েছেন। এরপরও কেন যেন অতৃপ্তি ও হতাশার চোরাবালিতে ডুবে যেতে দেখা যাচ্ছে বাঁহাতি স্পিনারকে। সংবাদ সম্মেলনে জানতে চাওয়া হয়েছিল তামিমের স্ট্যাটাসের সঙ্গে একমত কিনা? উত্তরে চটজলদি সহমত প্রকাশ তাঁর। প্রশ্ন পছন্দ না হলে রেগেও যাচ্ছেন তিনি।

গতকালও প্রতিবাদের সুরে উত্তর দিলেন বেশ কয়েকবার। তাইজুলের এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করার পেছনে বড় কারণ হতে পারে প্রথম টেস্ট শেষে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর প্রতিক্রিয়া। বাঁহাতি এ স্পিনারের পারফরম্যান্সে খুশি ছিলেন না লিপু। সেই রেশ ধরে গতকাল তাইজুল বলেন, ‘এতগুলো টেস্ট খেলার পর যতগুলো উইকেট হয়েছে তাতে শুকরিয়া। তবে একটা ম্যাচ দেখে যারা সমালোচনা করেন আমার মনে হয় তারা খেলা বোঝেন না।’

সমালোচনায় অভিমান হলেও সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিতে পেরে খুশি হয়েছেন তাইজুল, ‘সিলেটে আমি যেভাবে বোলিং করেছি, তা ভালো ছিল না। এতগুলো টেস্ট খেলার পর এ রকম বোলিং করা হতাশার। এখানে ভালো করতে পেরেছি এটি ভালো লাগার বিষয়। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে দলকে আমি সাহায্য করতে পেরেছি।’ 

টেস্ট উইকেট শিকারে সাকিবের পেছনে তাইজুল। সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে ছাড়িয়ে যেতে আর বেশি দিন লাগার কথা না তাঁর। সাকিবকে ছুঁয়ে ফেলতে ২২ উইকেটের প্রয়োজন বাঁহাতি এ স্পিনারের। দেশি বোলারদের মধ্যে ইনিংসে পাঁচ উইকেটের রেকর্ড নিজের করে নিতে আর চারটি পাঁচ উইকেট লাগে। সাকিব ২৪৬ উইকেট ও ইনিংসে ১৯ বার পাঁচ উইকেট এখনও টেস্টে দেশের সেরা। 

এ সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার স্বপ্ন তাঁর, ‘প্রত্যেক খেলোয়াড়ের স্বপ্ন সেরাদের সেরা হওয়া। আমার লক্ষ্য থাকে নিজের ভালো করা নিয়ে। অনেক দূর না যাওয়া পর্যন্ত তৃপ্তি আসবে না। আমি চেষ্টা করব যত দূর যাওয়া যায়।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গতকাল পাঁচ উইকেট নিয়ে একটি মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছেন। বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে ইনিংসে পাঁচ উইকেট পাওয়া বিশ্বে পঞ্চম বোলার তাইজুল। ভারতের রবীন্দ্র জাদেজাকেও ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। ভারতের এ স্পিনারের ইনিংসে ১৫ বার পাঁচ উইকেট পেতে লেগেছে ৮০ ম্যাচ, তাইজুল সেখানে ৫৩ ম্যাচে ১৬ বার পাঁচ উইকেট শিকার করে বাজিমাত করেন। নিজের অর্জনের দিনে অফ স্পিনার নাঈমের প্রশংসা করতেও ভোলেননি বাঁহাতি এ স্পিনার।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ উইক ট প ত ইজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

ধোনি কেন আইপিএল ছাড়তে পারছেন না: পেছনে হাজার কোটি টাকার খেলা

বয়স ৪৪, শরীরও আর আগের মতো চলছে না। তবু মহেন্দ্র সিং ধোনি আইপিএল ছাড়েননি। সর্বশেষ মৌসুমে খেলেছেন, শোনা যাচ্ছে, পরের মৌসুমেও খেলবেন। অথচ তাঁর মাঠের পারফরম্যান্স বলছে, সময় ফুরিয়েছে। তবু তিনি খেলে যাচ্ছেন কেন? ক্রিকেট ছাড়তে পারছেন না তাই? নাকি খ্যাতির মোহ? সত্যিটা এসবের চেয়েও বড়—ধোনি এখন শুধুই একজন ক্রিকেটার নন, তিনি একটি বিশাল অর্থনৈতিক ইকোসিস্টেমের মূল স্তম্ভ, যাঁর বিদায় মানে অনেক কিছুর ধস।

চলুন দেখা যাক, কীভাবে ধোনির একটুখানি মাঠে থাকা বদলে দেয় বিশাল অঙ্কের হিসাব।২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ব্র্যান্ড ভ্যালু

২০২৫ আইপিএল ছিল চেন্নাই সুপার কিংসের (সিএসকে) জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিটির ইতিহাসেই সবচেয়ে বাজে মৌসুম। পয়েন্ট তালিকায় একেবারে তলানিতে থেকে মৌসুম শেষ করেছে তারা। কিন্তু অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার, এর কোনো প্রভাবই পড়েনি সিএসকের ব্র্যান্ড ভ্যালুতে; বরং সামান্য বেড়েছে!
হুলিহ্যান লোকির ‘আইপিএল ব্র্যান্ড ভ্যালুয়েশন স্টাডি ২০২৫’ প্রতিবেদন বলছে, ২০২৫ সালে সিএসকের ব্র্যান্ড ভ্যালু বেড়ে হয়েছে ২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা ২০২৪ সালে ছিল ২৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। যদিও আইপিএলের সবচেয়ে দামি ফ্র্যাঞ্চাইজির র‍্যাঙ্কিংয়ে চেন্নাই ১ নম্বর থেকে তিনে নেমে গেছে, কিন্তু সেটা পুরোপুরি মাঠের পারফরম্যান্সের কারণে নয়।
তুলনা করে দেখা যাক—রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) প্রথমবার আইপিএল জেতায় তাদের ব্র্যান্ড ভ্যালু দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারে, উঠে এসেছে ১ নম্বরে। অথচ সিএসকে কিছু না করেই সেরা তিনে আছে শুধু একজনের জন্য—ঠিক ধরেছেন, এম এস ধোনি!

আরও পড়ুনফিক্সিং, বিদ্রোহ এবং ষড়যন্ত্রে ভরা ড্রেসিংরুম: পাকিস্তান ক্রিকেটের অস্থির অধ্যায়২৭ জুলাই ২০২৫দর্শকসংখ্যায় ‘ধোনি ইফেক্ট’

২০২৩ আইপিএলের একটি মুহূর্তই বলে দেয়, ধোনির উপস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে মাত্র ৩ বল খেলেছিলেন ধোনি, করেছিলেন ১২ রান। তাতেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ভিউয়ারশিপ পৌঁছায় ১ কোটি ৭০ লাখে, যা ছিল সে মৌসুমের সর্বোচ্চ। এমনকি টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচের ১ কোটি ৬০ লাখ ভিউয়ারকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল ধোনির সেই ৩ বল স্থায়ী ইনিংসটা!
টিএএম মিডিয়া রিসার্চ বলছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরও ধোনি দিনে গড়ে বিভিন্ন প্লাটফর্মে ১৪ ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম ধরে রেখেছেন। ২০২৪ সালে তিনি ৪২টি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করেছেন, যা অমিতাভ বচ্চন (৪১) ও শাহরুখ খানের (৩৪) চেয়েও বেশি।

মহেন্দ্র সিং ধোনি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্বপ্নের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে জুয়েল, অর্থাভাবে অনিশ্চিত ভুটান যাত্রা
  • রোনালদোর অদম্য ক্ষুধা, দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জেতালেন আল-নাসরকে
  • ৪৭ দিন ক্যাম্পে থেকে ১০–১২ দিন অনুশীলন, হতাশ ক্রিকেটাররা
  • অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ 
  • বাঘ বাঁচলে সুন্দরবন বাঁচবে
  • ধোনি কেন আইপিএল ছাড়তে পারছেন না: পেছনে হাজার কোটি টাকার খেলা