সরকারের ২ হাজার কোটি টাকার সুকুকের নিলামের জন্য ১৯ মে দিন ধার্য করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা তাদের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।

সুকুকটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘আরডিআইআরডব্লিউএসপি সোসিও ইকোনমিক ডেভলাপমেন্ট সুকুক’, যার মেয়াদ ধরা হয়েছে সাত বছর। 

এই সুকুকের বিনিয়োগের অর্থ দিয়ে রাজশাহী বিভাগের উপজেলা ও ইউনিয়নের সড়ক প্রশস্ত ও শক্তিশালী করা হবে বলে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আরো পড়ুন:

নড়াইলে মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কা, শিশু নিহত

ফেনীতে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শরিয়াহ্ অ্যাডভাইজরি কমিটি এই সুকুক ইস্যুর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। সেই সঙ্গে নিলামের নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছে।  

এর আগের ৯ এপ্রিল এই সুকুক ইস্যুর সিদ্ধান্ত ছিল সরকারের।

সুকুক হলো শরিয়াহ্ ভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা, যেখানে সাধারণ বন্ডের মতো সুদ দিতে হয় না। বরং সম্পদ থেকে আসা আয়ের ভাগ দেওয়ার শর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটি ইস্যু করে থাকে। 

বাংলাদেশে সরকার ও কর্পোরেশনগুলো অবকাঠামো প্রকল্পের তহবিল গঠনের জন্য এই ধরনের সুকুক ইস্যু করে থাকে।

রাজশাহী বিভাগের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ঘোষিত সুকুকের প্রোসপেক্টাস অনুযায়ী, নিলামের মাধ্যমে ২ হাজার কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের এই সুকুক ইজারা পদ্ধতিতে ইস্যু করা হবে। এর মেয়াদ উত্তীর্ণের সময় ধরা হয়েছে ২০৩২ সালের ২০ মে। এর বিনিয়োগের বিপরীতে ছয় মাস অন্তর বিনিয়োগকারীদের বার্ষিক ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে ভাড়া পরিশোধ করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যে সব ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পারি চলতি বা আল-ওয়াদিয়াহ্ চলতি হিসাব রয়েছে তারা নিলামে অংশ নিতে পারবে। 

দেশি-বিদেশি ব্যক্তিপর্যায়ের বিনিয়োগকারীসহ বীমা কোম্পানি, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স ফান্ডও অংশ নিতে পারবে নিলামে। 

বিনিয়োগকারীরা ১০ হাজার টাকার গুণিতক পরিমাণে সুকুক কেনার জন্য ১৮ মে সকাল ১০টা থেকে ১৯ মে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে নিলাম-নোটিশে বর্ণিত পদ্ধতিতে বিড দাখিল করতে পারবেন। 

বিডে কৃতকার্য বিডারদের আবেদনের বিপরীতে বরাদ্দকৃত সুকুকের পরিমাণ নিলামের তারিখে ই-মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

নিলাম-পরবর্তী কার্যদিবসে অর্থাৎ ২০ মে নিলামে অংশগ্রহণকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে থাকা চলতি বা আল-ওয়াদিয়াহ্ চলতি হিসাবে বিকলন এবং সিকিউরিটিজ হিসাব আকলন করে এই লেনদেন সম্পন্ন করবে।

সুকুকটি সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের বিপরীতে ইস্যু করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের আটটি জেলার ৬৫টি উপজেলায় পল্লি এলাকায় সড়ক প্রশস্ত ও শক্তিশালী করে আধুনিক সুবিধার অবকাঠামো তৈরি করা হবে। 

এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে রাজশাহীর পল্লি সড়কের ধারণক্ষমতা ও নিরাপত্তা বাড়বে; এতে করে কৃষি ও অকৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার সুযোগ হবে, কৃষি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ সুবিধা সম্প্রসারণ হবে। সেই সঙ্গে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

ঢাকা/এনএফ/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন র ব পর ত এই স ক ক র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ