পাড়ার গলিতে ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়ায় পিটিয়ে খুন করা হয়ছে এক যুবকে। ঘটনাটি ঘটেছে ২৭ এপ্রিল কর্নাটকের ম্যাঙ্গালুরু জেলার কুডুপু এলাকার ভাত্রা কাল্লুর্তি মন্দিরের কাছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

পুলিশ জানিয়েছে, ২৭ এপ্রিল বিকেল ৩টা নাগাদ এলাকায় ক্রিকেট ম্যাচ চলছিল। টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিল ১০টি দলের প্রায় শতাধিক খেলোয়াড়। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ম্যাচ চলাকালে দুই ব্যক্তির মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। হঠাৎ করেই ওই ঘটনায় আরো একাধিক ব্যক্তি জড়িয়ে পড়েন। সেখানে অনেকেই লাঠিসোটা নিয়ে এক ব্যক্তির উপরে চড়াও হয়।  নিহত ওই ব্যক্তি কেরলের বাসিন্দা এবং শ্রমিক ছিলেন। তবে এখনো পর্যন্ত পুলিশের পক্ষে তার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত করা হয়নি। 

বিকেল ৩টায় ওই ঘটনা ঘটলেও সাড়ে ৫টা নাগাদ ঘটনাস্থল থেকে ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের পর বিষয়টি জানতে পারে স্থানীয় পুলিশ। এই ঘটনায় কুলশেখর চৌকির বাসিন্দা দীপক কুমার নামে এক ব্যক্তি কিছু ছবি এবং ভিডিও সহ থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। অভিযোগ পেয়েই একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

রাতেই ওয়েনলক জেলা হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসে তাতে জানা যায়, অনবরতভাবে আঘাতের কারণে ওই ব্যক্তির শরীরের ভিতরে প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয়। তার পিঠ, নিতম্ব ও যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

এই ঘটনায় ম্যাঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার অনুপম আগরওয়াল বলেন, “এটি অত্যন্ত নিষ্ঠুর এবং নজিরবিহীন ঘটনা। এর আগে ম্যাঙ্গালুরুতে এই ধরনের ঘটনা দেখা যায়নি, ওই ব্যক্তির শরীরের আঘাতের পরিমাপও যথেষ্ট ভয়ংকর এবং সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।”

পুলিশ কমিশনার জানান, এখনো পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা সবাই কুডুপু, নির্মারগা, ভামঞ্জুর এবং আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান এই ঘটনার পিছনে ২৫ জন জড়িত রয়েছে। 

এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরা বলেন, “প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী আমরা যেটা জানতে পেরেছি, ওই ব্যক্তি একটি ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালে স্লোগান শাউটিং করে ওঠেন, তাতেই সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে তার উপরে চড়াও হয়।” 

শাহেদ/সুচরিতা

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এই ঘটন ঘটন য

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ