‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) চালু হচ্ছে রোল ও নামহীন খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতি। এতে পরীক্ষায় অধিকতর স্বচ্ছতা, খাতা সঠিকভাবে মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থী হয়রানি বন্ধ করতে সাহায্য করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. মো. ইলিয়াছ প্রামানিক।

‎তিনি জানান, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ফাইনাল পরীক্ষায় রোল ও নামহীন খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতি চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ পদ্ধতি চালু হওয়ার পর কোনো পরীক্ষক বুঝতে পারবে না খাতা কোন শিক্ষার্থীর। এতে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয় পরীক্ষায় নাম্বার কম বা বেশী দেওয়ার, তা আর থাকবে না।

‎এদিকে, রোল ও নামহীন খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু হওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

তারা বলছেন, প্রায় প্রতিটি বিভাগে কিছু শিক্ষক রয়েছেন, যারা তাদের পছন্দের শিক্ষার্থীকে নম্বর বেশি দিয়ে থাকেন। আবার বাহ্যিক কোনো বিষয়ে শিক্ষকের সঙ্গে মতের অমিল হলে তিনি রোল নম্বর চিহ্নিত করে পরীক্ষায় নম্বর কম দিয়ে থাকেন। তখন ভালো লিখেও আশানুরুপ ফল পাওয়া যায় না।

তারা আরো বলেন, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে এমন অভিযোগ থাকলেও কিছু করার ছিল না। আমরা আশা করছি এবার রোল ও নামহীন খাতা মূল্যায়ন চালু হলে প্রত্যেকের খাতা যথাযথভাবে মূল্যায়ন হবে।

সম্প্রতি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড.

তানজিউল ইসলাম জীবন এবং পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. রশীদুল ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র সিংহ এর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর যৌন নিপিড়ন ও ফলাফল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় রোল ও নামহীন খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ য়

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ