বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার কোম্পানির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ব্যবসা সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা বাড়াতে বেসিস কোরিয়া ডেস্ক ঘোষণা করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়া উদ্ভাবনমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি দেশ, যেখানে বাংলাদেশের আইসিটি খাতের জন্য রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশি আইসিটি খাতের সব প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কার্যকর অংশীদারিত্ব বাড়াতে পারবে। বেসিস কোরিয়া ডেস্ক হবে কৌশলগত প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে জ্ঞান বিনিময় ও যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ সহজ ও বাজার সম্প্রসারণের দ্বার উন্মোচিত হবে।
নতুন ডেস্ক প্রসঙ্গে বেসিস সহায়ক কমিটির সদস্য (অর্থ) ফৌজিয়া নিগার সুলতানা বলেন, বেসিস কোরিয়া ডেস্কের সদস্যরা এখন থেকে উদ্ভাবনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। যার মধ্যে রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘কোরিয়া ডে’ পালন, কোরিয়ান বাজারে প্রবেশে নীতিগত সহায়তা, কোরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণার সঙ্গে সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা আয়োজন। অন্যদিকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যৌথ উদ্যোগ বা ফ্র্যাঞ্চাইজিংয়ের সুযোগ তৈরি হবে।
উদ্যোক্তারা বলেন, নতুন ডেস্কের কারণে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে প্রাপ্ত ব্যবসায়িক অনুসন্ধান বা লিড সদস্যের মধ্যে শেয়ার করা হবে, কোরিয়াভিত্তিক কয়েকটি আইসিটি ইভেন্টে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকবে। অন্যদিকে কোরিয়ান কোম্পানির সঙ্গে নেটওয়ার্কিং ও বিটুবি সেশনের সুযোগ তৈরি হবে। বাংলাদেশে অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসের সঙ্গে প্রকল্প গ্রহণ ও কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কয়কা), কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সির (কট্রা) মতো কোরিয়ান উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও নীতিগত সহায়তা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং সিক দুদেশের জন্য পারস্পরিক সুবিধা উপস্থাপন করে বলেন, বেসিস কোরিয়া ডেস্ক আইসিটি সেক্টরে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সমন্বয়ের মাইলফলক হবে। বেসিস-কোরিয়া ডেস্ক কোরিয়ার রপ্তানি বাজারকে সমৃদ্ধ করবে। নতুন উদ্যোগ দুই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার কোম্পানির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ব্যবসা সম্প্রসারণ ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা ফলপ্রসূ হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্মসচিব (আইসিটি প্রমোশন ও গবেষণা অনুবিভাগ, অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড.
বেসিস-কোরিয়া ডেস্কের চেয়ারম্যান অ্যাডওয়ার্ড কিম বলেন, বাংলাদেশি ও কোরিয়ান প্রযুক্তি কোম্পানির মধ্যে কৌশলগত বন্ধুত্ব তৈরিতে কাজ করবে ডেস্কটি। নতুন ডেস্কের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যেকার তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের সেক্টরে পারস্পরিক ব্যবসায়িক সুসম্পর্ক তৈরিতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার ট্রিলিয়ন-ডলারের প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি ও ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই) কৌশলগত সহযোগিতার জন্য আদর্শ মডেল তৈরি করেছে। বাংলাদেশ তার দৃঢ়, প্রাণবন্ত তরুণ জনগোষ্ঠী ও সংস্কারভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্ভাবনী প্রবৃদ্ধির সঙ্গে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।
সভাপতির বক্তব্যে বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির বলেন, বেসিস-কোরিয়া ডেস্ক প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে কোরিয়ার বিশাল বাজারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত করা। ফলে প্রযুক্তি ও জ্ঞান বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা আমাদের আইটি পেশাজীবীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সহয গ ত ব যবস য ক জ করব র জন য সদস য আইস ট
এছাড়াও পড়ুন:
মার্কিন পণ্যের জন্য বাজার আরও উন্মুক্ত করতে প্রস্তুত ভিয়েতনাম
যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য রপ্তানির জন্য ভিয়েতনাম নিজেদের বাজার আরও উন্মুক্ত করতে ও অতিরিক্ত প্রণোদনা দিতে প্রস্তুত। দেশটির শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী গুয়েন হং দিয়েন গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন সিনেটর রজার মার্শালের সঙ্গে এক বৈঠকে এ তথ্য জানান।
ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী গুয়েন হং জানান, পার্টির সাধারণ সম্পাদক তো লাম ও প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিনের বার্তা তিনি সিনেটর রজার মার্শালের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। বার্তায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও জোরদারে ভিয়েতনাম দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং উভয় দেশের জনগণ ও পারস্পরিক ব্যবসার স্বার্থে দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা আরও বাড়াতে আগ্রহী। খবর ভিয়েতনাম নিউজের
চলমান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে হং দিয়েন বলেন, আলোচনায় ভিয়েতনাম বরাবরের মতোই নিরপেক্ষ ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে আছে। তিনি জানান, আলোচনার ভিত্তি হবে পরস্পরের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, স্বার্থের ভারসাম্য ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং উভয় দেশের উন্নয়ন।
হং দিয়েন আশা প্রকাশ করেন, সিনেটর রজার মার্শাল যেহেতু রিপাবলিকান পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং বাণিজ্য, কৃষি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ সেহেতু তিনি আলোচনার সময় নিজ দেশের (ভিয়েতনাম) পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবেন। এই দৃষ্টিভঙ্গি মার্কিন সরকার, বিশেষ করে কানসাস রাজ্যের সঙ্গে ভিয়েতনামের সহযোগিতা আরও জোরদারে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করবে। কারণ, কৃষিসহ মহাকাশপ্রযুক্তি ও জীবপ্রযুক্তিতে কানসাসের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে।
মার্কিন সিনেটর রজার মার্শাল ভিয়েতনামের আন্তরিকতা, অগ্রগামী মনোভাব ও সদিচ্ছার প্রশংসা করেন। তিনি জানান, আলোচনার বিষয়টি তিনি শিগগিরই প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিপরিষদের সংশ্লিষ্ট সদস্যদের সামনে উপস্থাপন করবেন। আলোচনায় উভয় দেশের জন্য ইতিবাচক ফলাফল আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন মার্শাল।
একই দিনে ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী গুয়েন হং দিয়েন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বখ্যাত সুপারশপ ওয়ালমার্ট এবং অ্যাথলেটিক বা খেলাধুলার জুতা ও ক্রীড়াসামগ্রীর প্রতিষ্ঠান নাইকির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। এই দুটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ভিয়েতনামে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক বিনিয়োগ ও ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।
নাইকির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে গুয়েন হং দিয়েন তাঁর দেশে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীল ও দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির প্রশংসা করেন। বর্তমানে নাইকির বিশ্বব্যাপী জুতার প্রায় ৫০ শতাংশই ভিয়েতনামে তৈরি হয়, যা সরাসরি ৪ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করেছে।
বিশ্বের বৃহত্তম খুচরা বিক্রেতা ওয়ালমার্টের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী দিয়েন বিশ্ববাজারে ভিয়েতনামি পণ্যের প্রচারে ওয়ালমার্টের অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি প্রস্তাব দেন, ওয়ালমার্ট যেন উচ্চমূল্যের ও পরিবেশবান্ধব পণ্যের ক্রয় বাড়ায় এবং ভিয়েতনামে একটি কৌশলগত সোর্সিং হাব প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বিবেচনা করে।