কর্মক্ষেত্রে নারীদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ করাসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে কর্মজীবী নারী নামের একটি সংগঠন।

বৃহস্পতিবার (১ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহান মে দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

কর্মজীবী নারীর সহ-সভাপতি শাহিন আক্তার পারভীনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা।

এ সময় সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের মো.

শফিক, অক্সফাম ইন বাংলাদেশের সভাপতি সুলতানা বেগম, রেডি সংগঠনের প্রতিনিধি মো. সাখাওয়াত হোসেন, শ্রমিক নেত্রী শেখ শাহনাজ ও নার্গিস আক্তার এবং কর্মজীবী নারীর কর্মকর্তা হুরমত আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো, 
ভ্যালু চেইনে কর্মরত গৃহভিত্তিক (হোম-বেজড) শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী গৃহভিত্তিক (হোম-বেজড) শ্রমিকদের ঠিকাদার বা নিয়োগকারীকে দায়বদ্ধতায় আনা। গৃহভিত্তিক (হোম-বেজড) গার্মেন্টস শ্রমিক, গৃহশ্রমিকসহ অন্যান্য অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত নারী শ্রমিকদের জন্য ন্যায্য মজুরি, ছুটি, মাতৃত্বকালীন সুবিধা, শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং সব সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। 

এছাড়া গৃহভিত্তিক (হোম-বেজড) শ্রমিকদের সমষ্টিগত দর কষাকষির অধিকার নিশ্চিত করাসহ তাদের সংগঠনগুলোকে সরকার থেকে স্বীকৃতির দাবি। 

হোম-বেজড কিশোর-কিশোরী শ্রমিকদের জন্য পুনর্বাসন কর্মসূচি যেমন: শিক্ষা, উপযোগী কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং মানসিক সহায়তাসহ পর্যাপ্ত কর্মসূচি গ্রহণ, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালের হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যকর আইন প্রণয়ন করা ও আইএলও কনভেনশন ১৯০ (কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন) অনুসমর্থন করতে হবে।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স গঠন হয়র ন

এছাড়াও পড়ুন:

ঘাড়ব্যথার কারণগুলো কী কী, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা জেনে রাখুন

অনেক কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—

১. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস

২. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস

৩. সারভাইক্যাল রিবস

৪. সারভাইক্যাল ক্যানেল স্টেনোসিস বা স্পাইনাল ক্যানাল সরু হওয়া

৫. সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রলেপস বা হারনিয়েশন যেখানে হারনিয়াটেড ডিস্ক নার্ভের ওপর চাপ প্রয়োগ করে

৬. মাংসপেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, ডিস্ক (দুই কশেরুকার মাঝখানে থাকে) ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি

৭. অস্বাভাবিক পজিশনে নিদ্রা

৮. উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্‌রোগ

৯. হাড় ও তরুণাস্থির প্রদাহ এবং ক্ষয়

১০. অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা রোগ

১১. হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া

১২. রিউমাটয়েড-আর্থ্রাইটিস ও সেরো নেগেটিভ আর্থ্রাইটিস

১৩. সারভাইক্যাল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস

১৪. ফাইব্রোমায়ালজিয়া

১৫. সামনে ঝুঁকে বা পাশে কাত হয়ে ভারী কিছু তুলতে চেষ্টা করা

১৬. হাড়ের ইনফেকশন

১৭. ডিস্কাইটিস (ডিস্কের প্রদাহ)

১৮. পেশাগত কারণে দীর্ঘক্ষণ ঘাড় নিচু বা উঁচু করে রাখলে ইত্যাদি।

উপসর্গ

ঘাড়ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুল পর্যন্ত ছড়াতে পারে।

কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে অস্বাভাবিক অনুভূতি বা অবশ ভাব।

বাহু, হাত ও আঙুল দুর্বল হতে পারে।

সব সময় ঘাড় ধরে বা জমে আছে মনে হয়।

ঘাড়ের মুভমেন্ট করলে, ঘাড় নিচু করে ভারী কিছু তোলার পর তীব্র ব্যথা।

হাঁচি, কাশি দিলে বা সামনে ঝুঁকলে ব্যথা বেড়ে যায়।

ব্যথা মাথার পেছন থেকে শুরু হয়ে মাথার সামনে আসতে পারে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

ঘাড়ব্যথার কারণ নির্ণয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি পরীক্ষা হতে পারে—রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, ঘাড়ের এক্স-রে, এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।

চিকিৎসা

চিকিৎসা এর কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।

কনজারভেটিভ চিকিৎসা: ১. ব্যথা বা প্রদাহনাশক ওষুধ ২.ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। বিভিন্ন ধরনের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা যেমন ম্যানুয়াল বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোমেডিকেল ইকুইপমেন্ট যেমন ইন্টারফ্যারেনশিয়াল থেরাপি, অতি লোহিত রশ্মি, মাইক্রোওয়েভ ডায়াথারমি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি ও ইন্টারমিটেন্ট ট্র্যাকশন ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা: মেডিকেল চিকিৎসায় ভালো না হলে, ব্যথা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে, স্নায়ু সমস্যা দেখা দিলে, বাহু, হাত ও আঙুলে দুর্বলতা এবং অবশ ভাব দেখা দিলে এবং প্রস্রাব বা পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দ্রুত সার্জিক্যাল চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

ঘাড়ব্যথা প্রতিরোধে করণীয়

১. সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করবেন না।

২. মাথার ওপর কোনো ওজন নেবেন না।

৩. প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে হবে।

৪. শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন।

৫. শোবার সময় একটা মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করবেন, যার অর্ধেকটুকু মাথা ও অর্ধেকটুকু ঘাড়ের নিচে দেবেন।

৬. তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ঘাড় নিচু বা উঁচু করা, মোচড়ানো (টুইসটিং) বন্ধ করা।

৭. সেলুনে কখনোই ঘাড় মটকাবেন না।

৯. কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন না বা টেলিভিশন দেখবেন না।

১০. কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর চোখের লেভেলে রাখবেন।

১১. গরম প্যাড, গরম পানির বোতল দিয়ে গরম সেঁক দেবেন।

১২. ঘাড়ের পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।

এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ঢাকা

আরও পড়ুনকাঁধের ব্যথা বা কাঁধ জমে যাওয়ার কারণ ও করণীয়১৭ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ