এনসিপির বক্তব্যের জবাব দিলেন ইশরাকের আইনজীবী
Published: 1st, May 2025 GMT
ইশরাক হোসেনের মামলার রায়ে এনসিপির উদ্বেগ অপ্রাসঙ্গিক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিচার বিভাগের প্রতি অশ্রদ্ধা এবং অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের আইনজীবী মো. রফিকুল ইসলাম।
বুধবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ইশরাকের আইনজীবী বলেন, ২০২০ সালে নির্বাচন কমিশন ও শেখ ফজলে নূর তাপসসহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ইশরাক হোসেন। দীর্ঘ প্রায় ৫ বছরের আইনি লড়াই শেষে গত ২৭ মার্চ আদালত রায় ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, মামলায় শেখ ফজলে নূর তাপস আইনজীবী নিয়োগের মাধ্যমে মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং মামলার জবাব দেন এবং একপর্যায়ে মামলা খারিজের জন্য দরখাস্ত করেন। কিন্তু আদালত তৎকালীন স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই উভয়পক্ষের শুনানি শেষে শেখ ফজলে নূর তাপসের আবেদন নামঞ্জুর করেন। সেই আদেশে অসন্তুষ্ট হয়ে বিবাদীপক্ষ হাইকোর্টে রিভিশন করে দীর্ঘদিন মামলাটি আটকে রাখে। এর ফলে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরেও তাপসের হস্তক্ষেপে মামলা হাইকোর্টে শুনানি বারবার পিছিয়ে যায় এবং শুনানি না করে ফেলে রাখে। ফলে বিবাদীপক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ও জবাব দাখিল করা স্বত্বেও মামলাটি দীর্ঘদিন অনিস্পন্ন থাকে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৫ আগস্টের পর দেশের বিচারব্যবস্থা আওয়ামী সরকারের রাহুমুক্ত হওয়ায় হাইকোর্ট রিভিশন খারিজ করিয়া নিম্ন আদালতে মামলাটি দ্রুত নিস্পত্তির জন্য প্রেরণ করেন। ফলে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল আবার মামলাটির শুনানি শুরু করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যে কোনো মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির আদালতের একটি সহজাত ক্ষমতা। তাছাড়া ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটি ২০২৫ সালে নিস্পত্তি হইয়াছে, যাহাতে দীর্ঘ ৫ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হইয়াছে। এটি মোটেও সংক্ষিপ্ত সময় নয়। বরং মামলাটি আরও আগেই নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল। একটি নির্বাচনা মামলার নিষ্পত্তি সংক্ষিপ্ত সময়ের হওয়া উচিত। এনসিপির এজাতীয় বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল।
আইনজীবী মো.
তিনি আরও বলেন, রায়ের কপি আইন মন্ত্রণালয়েও প্রেরিত হইয়াছে। রায়ে কোনো অসামঞ্জস্যতা না পেয়ে নির্বাচন কমিশন যথাযথ নিয়ম মেনে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইশর ক হ স ন ইশর ক হ স ন আইনজ ব র আইন
এছাড়াও পড়ুন:
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন, শুনানি হতে পারে রোববার
জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এই আবেদনের ওপর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আগামী রোববার শুনানি হতে পারে।
চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট আজ বুধবার রায় দেন। রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এর ফলে ওই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস জামিন পান।
এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদ উদ্দিন খান।
পরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, আবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে। শুনানি হয়নি। চেম্বার আদালত আগামী রোববার আবেদনটি শুনবেন।
এর আগে ওই মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ গত ২ জানুয়ারি চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করে আদেশ দিয়েছিলেন। এ নিয়ে হাইকোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে গত ১২ জানুয়ারি আবেদনটি করেছিলেন চিন্ময় দাস। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রুল দেন হাইকোর্ট। আবেদনকারীকে (চিন্ময়) কেন জামিন দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টে চিন্ময় দাসের পক্ষে আইনজীবী জেড আই খান পান্না, প্রবীর হালদার ও অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভুঞা, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদ উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ওই মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চিন্ময় দাসের জামিন নামঞ্জুর হওয়া নিয়ে গত বছরের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ হয়েছিল। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর চিন্ময় দাসকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন জামিন শুনানির দিন ধার্য থাকলেও আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিলে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরে আদালত গত ৩ ডিসেম্বর শুনানির দিন রাখেন। সেদিন চিন্ময়ের কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় আদালত শুনানির জন্য ২ জানুয়ারি পরবর্তী দিন রাখেন। সেদিন তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়।
আরও পড়ুনরাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় দাসের জামিন৩ ঘণ্টা আগে