এশিয়া ও আফ্রিকার তিন দেশে ৪টি ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা
Published: 2nd, May 2025 GMT
চলতি বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে এশিয়া ও আফ্রিকার তিনটি দেশে সফর করবে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। এ সফরে মোট চারটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে তারা। আর্জেন্টিনার শীর্ষ ক্রীড়া দৈনিক ‘ওলে’ এবং টিওয়াইসি স্পোর্টস জানিয়েছে, এই সফরে দলের সঙ্গে থাকবেন লিওনেল মেসিও।
অক্টোবরের ফিফা উইন্ডোতে প্রথমে চীন সফরে যাবে আর্জেন্টিনা। সেখানে তারা দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে। যদিও এখনো প্রতিপক্ষ চূড়ান্ত হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, চীনের পাশাপাশি আরেকটি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে।
চীন সফর শেষে নভেম্বরে আফ্রিকার দেশ অ্যাঙ্গোলায় পাড়ি জমাবে স্কালোনির দল। দেশটির স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১১ নভেম্বর একটি ম্যাচ আয়োজন করবে অ্যাঙ্গোলা ফুটবল ফেডারেশন। এ উপলক্ষে সম্প্রতি অ্যাঙ্গোলার ফেডারেশন সভাপতি ফার্নান্দো আলভেস সিমোয়েসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) সভাপতি ক্লদিও তাপিয়া।
বৈঠকে তাপিয়া সরাসরি ফোন করেন মেসিকে এবং ২০০৬ সালের একটি প্রীতি ম্যাচের স্মৃতি তুলে ধরেন, যেখানে আর্জেন্টিনা ২-০ গোলে অ্যাঙ্গোলাকে হারিয়েছিল। এতে মেসির অ্যাঙ্গোলা সফরের সম্ভাবনা আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সিমোয়েস।
অ্যাঙ্গোলা সফর শেষে মেসিদের দলটি যাবে কাতারে। ২০২২ সালে এই দেশেই নিজেদের তৃতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। সেখানে তারা একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে, যদিও প্রতিপক্ষ এখনও নির্ধারিত হয়নি।
এদিকে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আগেই সাফল্য পেয়েছে আর্জেন্টিনা। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের (কনমেবল) বাছাইয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে তারা। গত মার্চে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে ৪-১ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করে দলটি।
আগামী জুন ও সেপ্টেম্বরে বাকি চারটি বাছাই ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষ—চিলি, কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইকুয়েডর। বিশ্বকাপ শুরুর আগ পর্যন্ত নিয়মিত ম্যাচ খেলার লক্ষ্যেই এই প্রীতি সফরের আয়োজন করছে এএফএ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন আর জ ন ট ন ব শ বক প
এছাড়াও পড়ুন:
’৬৪ বছর সাংবাদিকতার আদর্শ ধরে আছে পাবনা প্রেস ক্লাব’
‘‘৬৪ বছর ধরে সাংবাদিকতার ঐক্য, আদর্শ, ঐতিহ্য ধারণ করেছে উত্তরের অন্যতম প্রাচীণতম সংগঠন পাবনা প্রেস ক্লাব। ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জড়িয়ে রয়েছে এই প্রেস ক্লাবের নাম। পাবনা প্রেস ক্লাবের ৯ সাংবাদিক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ৩ জন সদস্য একুশে পদকপ্রাপ্ত। সারা দেশে সাংবাদিকদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য ও সাংবাদিকদের একাধিক প্রতিষ্ঠান থাকলেও পাবনা প্রেস ক্লাব সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এই প্রতিষ্ঠান এখনো দেশের মধ্যে অখণ্ড এবং ঐক্যের অনন্য নজির হিসেবে দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। আগামীতেও ঐক্য আদর্শের ধারা অটুট থাকবে।’’
বৃহস্পতিবার (১ মে) পাবনা প্রেস ক্লাবের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৬৫ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন সুধীজন ও সাংবাদিকরা। এ দিন উৎসবে আনন্দে নেচে-গেয়ে পাবনা প্রেস ক্লাবের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল ১১টায় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। সাংবাদিকতার প্রতীক হিসেবে কলম, টেলিভিশন, রেডিও, ক্যামেরা, টেলিভিশনের বুম বা মাইক্রোফোন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর লোগোসহ নানা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বাদ্য বাজনার তালে তালে নেচে গেয়ে শোভাযাত্রা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে বুধবার (৩০ এপ্রিল) প্রেস ক্লাব ভবন আলোকসজ্জাকরণসহ নানা সাজে সাজানো হয়।
আরো পড়ুন:
সিরাজগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান, সম্পাদক শরীফুল
পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর খান আর নেই
শোভাযাত্রা শেষে প্রেস ক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে চলে শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের পর প্রেস ক্লাবের প্রয়াত সদস্যদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তারপর প্রেস ক্লাবের নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। পরে পাবনা প্রেস ক্লাব সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতারের সভাপতিত্বে ও সাহিত্য সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইয়াদ আলী মৃধা পাভেলের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রেস ক্লাব সম্পাদক জহুরুল ইসলাম।
অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, পাবনা জেলা প্রশাসক মফিজুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম আব্দুল আওয়াল, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মশিউর রহমান মণ্ডল, এনএসআই এর উপ-পরিচালক তৌফিক ইকবাল, জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার আফরোজা আক্তার, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আব্দুল আওয়াল মিয়া, শহীদ বুলবুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বাহেজ উদ্দিন, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মাহাতাব উদ্দিন বিশ্বাস, পাবনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রফেসর শিবজিত নাগ, সাবেক সম্পাদক আব্দুল মতীন খান, প্রবীণ সাংবাদিক হাবিবুর রহমান স্বপন, সাবেক সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, সাবেক সম্পাদক আঁখিনূর ইসলাম রেমন, উৎপল মির্জা, প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিফাত রহমান সনম, সহ-সভাপতি এস এম আলাউদ্দিন, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক নেছার আহমেদ নান্নু, চাটমোহর প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলালুর রহমান জুয়েল, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ হাফিজ, সাঁথিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মানিক মিয়া রানা, সুজানগর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম এ আলিম রিপন প্রমুখ।
শুভেচ্ছা পর্ব শেষে পাবনা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ যাবত পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকারী সভাপতি ও সম্পাদকদের সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। যারা প্রয়াত হয়েছেন তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন। পরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন অতিথিরা। শেষে উপস্থিত সবাইকে মিষ্টি মুখ করানো হয়। দুইদিনব্যাপী আয়োজনের শেষ দিন শুক্রবার (২ মে) সন্ধ্যায় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছে।
১৯৬১ সালের ১ মে পাবনা শহরে পাবনা প্রেস ক্লাবের গোড়াপত্তন ঘটে। প্রেস ক্লাব প্রতিষ্ঠার বছরেই ৮ ও ৯ মে পাবনায় অনুষ্ঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান মফস্বল সাংবাদিক সম্মেলন। যে সভা থেকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় পূর্ব পাকিস্তান মফস্বল সাংবাদিক সমিতি। যা বর্তমানে বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি হিসেবে পরিচিত।
পাবনা প্রেস ক্লাব প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে সেদিন সংবাদপত্রে মফস্বলে কর্মরত প্রতিনিধিদের পেশার স্বীকৃতি ঘটেছিল। এখন ঢাকার বাইরে অনেকে এটাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে স্বচ্ছল জীবন যাপন করছেন। তাই অনেক প্রবীণ সাংবাদিক পাবনা প্রেস ক্লাবকে মফস্বল সাংবাদিকতার বাতিঘর হিসেবে চিহিৃত করেছেন। পাবনা প্রেস ক্লাবের অতীত ঐতিহ্য ও বিশাল ইতিহাস থাকলেও আজও পাবনা প্রেস ক্লাবের নিজস্ব ভবন হয়নি। পরিত্যক্ত সম্পত্তির উপর গড়ে ওঠা এই ক্লাবটির শরীর শীর্ণ হলেও মর্যাদা ও আভিজত্যে অনন্য।
ঢাকা/শাহীন/বকুল