বাংলাদেশে অনেক তরুণ ও উদীয়মান অর্থনীতিবিদ আছেন, যাঁরা আমার ছাত্র বা ছাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে মাহতাব উদ্দিন নিঃসন্দেহে অন্যতম সেরা।

মাহতাব বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং সানেমের (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) গবেষণা পরিচালক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে প্রথম হয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন। বর্তমানে তিনি কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন।

প্রায় এক দশক ধরে একাডেমিক ও নীতি গবেষণার সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত আছেন মাহতাব। তাঁর গবেষণার পরিধি ও বৈচিত্র্য প্রশংসনীয়। শ্রমবাজারের গঠন, কর্মসংস্থানের প্রবণতা, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য, অভিবাসনের ধারা ও প্রভাব, প্রবাসী আয়ের ব্যবহার এবং অর্থনীতিতে এর ভূমিকা—এই সব বিষয়ে গবেষণায় তাঁর সুস্পষ্ট দক্ষতা রয়েছে। পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচন কৌশল, সামাজিক বৈষম্য হ্রাস এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরির মতো জটিল নীতিগত প্রশ্ন নিয়েও তিনি গভীর অনুসন্ধানী কাজ করেছেন।

এসব গবেষণার প্রেক্ষাপটে মাহতাব এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), এশিয়া ফাউন্ডেশন, একশনএইড, ব্রিটিশ ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), আন্তর্জাতিক উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র (আইডিআরসি), আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচিসহ (ইউএনডিপি) একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পে তিনি গবেষক, বিশ্লেষক এবং নীতিমালা প্রণয়ন সহায়ক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

একাধিক গবেষণায় মাহতাবের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার সুযোগ আমার হয়েছে। এসব অভিজ্ঞতায় মাহতাবের মধ্যে যে গুণাবলির পরিচয় আমি পেয়েছি, তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। তাঁর অধ্যবসায় অবিস্মরণীয়—একটি জটিল গবেষণা প্রশ্নের গভীরে প্রবেশ করে, নানা তথ্যসূত্র সংগ্রহ করে এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে সুসংগত উত্তর বের করে আনার সক্ষমতা তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী। তাঁর বিশ্লেষণী দক্ষতা গভীর ও বহুমাত্রিক—তথ্য ও উপাত্তের ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে উন্নত পরিসংখ্যানপদ্ধতির প্রয়োগ পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে তাঁর দক্ষতা লক্ষ করার মতো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহতাব উদ্দিন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে

আগামী জাতীয় নির্বাচন দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘দেশে যাতে আর কখনো ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ, চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে বিষয়ে নারীসমাজকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। আমি বাংলাদেশের মা-বোনদের আহ্বান জানাই, আপনারা সচেতন ও সজাগ থাকুন।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের অবদান’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তারেক রহমান। তিনি লন্ডন থেকে সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পটভূমিতে নারীসমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে উল্লেখ করে সভায় তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা চাই, একজন মায়ের চোখে যেমন বাংলাদেশ হওয়া উচিত, তেমনই একটি ইনসাফভিত্তিক, গণতান্ত্রিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।’

তারেক রহমান বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে যেসব পরিবার আপনজন হারিয়েছে, তাদের আত্মত্যাগের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে। এসব পরিবারে একজন পুরুষ সদস্যের মৃত্যুর পর একজন নারী যেভাবে প্রতিদিন সংসার টেনে নিয়ে যাচ্ছেন, তা এক অনবদ্য সংগ্রাম।

নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীকে রাষ্ট্র এবং রাজনীতির মূলধারার বাইরে রেখে কখনোই নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয়। নারীশক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে কোনো রাষ্ট্রই এগিয়ে যেতে পারে না। তিনি বলেন, নারী-পুরুষ ভেদাভেদ না করে সবাইকে শিক্ষা ও দক্ষতার মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে।

নারীর অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তারেক রহমান বলেন, নারীদের স্বাবলম্বী করা গেলে বৈষম্য কমবে, পারিবারিক সহিংসতাও রোধ হবে। তাই বিএনপির স্লোগান হচ্ছে—‘ক্ষমতায়িত নারীশক্তি, পরিবারের মুক্তি।’

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি আগামী দিনে ক্ষমতায় এলে প্রান্তিক ৫০ লাখ পরিবারের জন্য ‘ফ্যামিলি কার্ড’ চালু করবে। এই কার্ড নারীদের নামে ইস্যু করা হবে। ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে প্রান্তিক পরিবারগুলোকে প্রতি মাসে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আর্থিক বা খাদ্যসহায়তা দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন ঘটবে এবং পরিবারগুলো ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হবে।

তারেক রহমানের বক্তব্যের আগে সভায় একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এই তথ্যচিত্রে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের অবদান তুলে ধরা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আফরোজা খানম বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা ছিল অসামান্য। এই লড়াইয়ে সবচেয়ে সাহসী ভূমিকা রেখেছে নারীসমাজ।

যাঁরা রক্ত-অশ্রু ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন, সেই নারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান ও সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তাজমেরি এস এ ইসলাম ও তাহসীনা রুশদির, বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব প্রমুখ।

এ ছাড়া বক্তব্য দেন মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম, টক শো উপস্থাপক হাসিনা আখতারের ধারণ করা বক্তব্য সভায় প্রচার করা হয়। সভার সঞ্চালক ছিলেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান। সভায় শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা জানানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিজিটাল মেশিনে ওজন নিন
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর রাজনীতি না করার ঘোষণা
  • যেসব মালিক ব্যাংকঋণ নিয়ে পালিয়েছেন, সেসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে: শ্রম উপদেষ্টা
  • ভারতে উড়োজাহাজে সহযাত্রীর থাপ্পড়ের পর খোঁজও মিলছে না যাত্রীর: পরিবারের দাবি
  • প্রলোভনের এই যুগে নিজেকে রক্ষার উপায়
  • নারীরা কেন পুরুষদের তুলনায় বেশিবার প্রস্রাব করেন?
  • গঙ্গাচড়ায় হিন্দুবাড়িতে হামলা ঠেকাতে ‘পর্যাপ্ত’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে