বিএনপির সমর্থনের কারণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস টিকে আছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আমরা যাকে সমর্থন দিচ্ছি তিনি হচ্ছেন মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি শক্তভাবে দাঁড়িয়ে আছেন বিএনপির সমর্থনের কারণে। বিএনপি সমর্থন প্রত্যাহার করলে, তারপর কী হবে, তিনি কিন্তু তা বুঝতে পারছেন না বা তাকে বুঝতে দেওয়া হচ্ছে না।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সাবেক মন্ত্রী সুনীল গুপ্তের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সুনীল গুপ্ত স্মৃতি সংসদ আয়োজিত স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।ৎ

শামসুজ্জামান বলেন, দেশে গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য আমরা তাকে (ড.

ইউনূস) সমর্থন করি, যেন দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু এখন নির্বাচনের কথা বললে মনে হচ্ছে বড় অপরাধ।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গত ১৫-১৬ বছর ধরে লড়াই করেছি। লড়াইটা এখনও আছে, এখনও রাজপথে আছি। সেই লড়াইটা শেষ হবে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। নির্বাচন যে পর্যন্ত না হয় সে পর্যন্ত আমাদের লড়াইটা চালু আছে। এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, কেউ কেউ বলেন- কোনো দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য গণঅভ্যুত্থান হয়নি। তাদের বলি- কোনো দল বাংলাদেশের ক্ষমতায় না এলে কে আসবে, সামরিক? তারা যদি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে তাহলে দেখবে, নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্রে উত্তরণে আর দ্বিতীয় কোনো পথ নাই।

দুদু বলেন, বাংলাদেশকে বহিঃশত্রু থেকে বাঁচাতে, দেশের ভেতরে যেসব শত্রু আছে, তাদের মোকাবিলায়, দেশকে বিকশিত ও সত্যিকারের বাংলাদেশের রূপান্তরিত করতে হলে একটি রাজনৈতিক সরকার দরকার। সেই রাজনৈতিক সরকার আসবে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে।

তিনি আরও বলেন, আমি বলছি না বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। যে দলই ক্ষমতায় আসুক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে হতে হবে এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তারা কাজ করবে।

কারও নাম উল্লেখ করে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, একদল আছে, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মানতে চায়নি। মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতা করেছে। তারা যেন বাংলাদেশের এখন সবকিছু।

‘দেশের সবাই জানে, আমরাও জানি বিএনপি ছাড়া এ দেশে আর দ্বিতীয় কোনো দল নাই, যারা ক্ষমতায় আসবে। যারা দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে। যারা বিএনপিকে বাদ দিতে চায়, তাদের বলব- শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সুনীল গুপ্ত- এদের দিকে তাকান তাহলে বুঝবেন রাস্তা সোজা নাকি আঁকাবাঁকা।’

সাবেক মন্ত্রী সুনীল গুপ্তের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, সুনীল গুপ্ত ইতিহাসের পাতায় জাতীয়তাবাদীর প্রগতিশীল রাজনীতির অন্যতম দিকপাল। তাকে স্মরণ করা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করার মতোই। মাওলানা ভাসানী, সুনীল গুপ্ত, মশিউর রহমান যাদু মিয়া- তাদের রাজনৈতিক জীবন থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। তাদের বিষয়গুলোকে আমরা যত এড়িয়ে যাব আড়াল করব বাংলাদেশ তত ভঙ্গুর হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু, বিজন কান্তি সরকার, ভাসানী জনশক্তি পার্টির সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ গণতন ত র ব এনপ র ক ষমত য র জন ত র জন য ইউন স রহম ন স মরণ

এছাড়াও পড়ুন:

এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শেষ পর্যন্ত কোনো অগণতান্ত্রিক কিংবা অপশক্তির কাছে বিনা শর্তে আত্মসমর্পণের পথে হাটতে হয় কি-না, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন তারেক রহমান। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মাঠে থাকা সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এমন বিপদের কথাও স্মরণ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।’

বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’

দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তবে তাঁর বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।

শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তাঁর দল।

তারেক রহমান বলেন, ‘দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।’

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব কি পৈতৃক সম্পত্তি
  • ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
  • গণতন্ত্রের পথে সংকট দেখছেন তারেক
  • এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান