রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে এক যুবকের (২৫) অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ১২ বছর বয়সী এক শিশু গুরুতর অসুস্থ হয়েছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ শনিবার বেলা তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন।

ওসি জয়নাল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, খিলক্ষেত এলাকায় কমলাপুরগামী সুরমা মেইল ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান ২৫ বছর বয়সী যুবক। অপর শিশুটি ট্রেনে কাটা পড়ে গুরুতর অসুস্থ হয়। পরে শিশুটিকে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঢাকা রেলওয়ে থানার ওসি বলেন, নিহত যুবকের পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিশুটির পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

ঢাকা রেলওয়ে থানার বিমানবন্দর ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, যে যুবক রেলে কাটা পড়ে মারা গেছেন, তিনি এবং শিশুটি রেল লাইন ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন। অসাবধানতার কারণে রেলে কাটা পড়ে যুবক মারা গেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

সরবরাহ পর্যাপ্ত, দামও নাগালে

‘হিমসাগর আমের কেজি ৮০’, ‘পেয়ারার কেজি নেন ৫০’– হ্যান্ডমাইকে রেকর্ড করা এমন প্রচারণা চালিয়ে ভ্যানগাড়িতে ফল বিক্রি করছেন শাহ আলম নামের এক বিক্রেতা। বুধবার বিকেলে ফার্মগেট এলাকায় তাঁকে ঘিরে দেখা গেল ক্রেতার ভিড়। কেউ আম কিনছেন, কেউ কিনছেন জাম কিংবা পেয়ারা। 

শাহ আলমের মতো আরও কয়েকজন ব্যবসায়ীকে সেখানে ভ্যানগাড়িতে করে বিভিন্ন দেশি মৌসুমি ফল বিক্রি করতে দেখা যায়। প্রত্যেকের ভ্যানে রয়েছে হ্যান্ডমাইক। দাম কত? ক্রেতার এমন প্রশ্নের বারবার জবাব দেওয়ার বিকল্প হিসেবে তারা এই মাইক ব্যবহার করছেন।

শুধু ফার্মগেট নয়, রাজধানীর সব বাজার এখন ভরপুর বিভিন্ন মৌসুমি ফলে। কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট ও শান্তিনগর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি ফলের দাপট বেশি। প্রতিটি দোকান থরে থরে সাজানো আম, জাম, লিচু, কাঁঠালসহ নানা মৌসুমি ফলে। দাম নাগালে থাকায় ক্রেতারাও কিনছেন চাহিদামতো।

বিভিন্ন জাতের আমের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হচ্ছে আম্রপালি। খুচরা পর্যায়ে আকারভেদে এ জাতের আমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি হাঁড়িভাঙা আম ৭০ থেকে ৮০, হিমসাগর ৯০ থেকে ৯৫ ও ল্যাংড়া আমের কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোম্বে, চায়না, জিরান নামের কয়েক ধরনের লিচু যাওয়া যাচ্ছে বাজারে। 

প্রতি একশটি বোম্বে লিচু ৪০০ থেকে ৪৫৫ ও জিরান লিচু ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। কালো জামের দামও বেশি নয়। প্রতি কেজি কেনা যাচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায়। লটকনের কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। পেয়ারার দর আরও কম। প্রতি কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। 
বিক্রেতারা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার দেশি ফলের উৎপাদন ভালো হয়েছে। দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল থেকে, বিশেষ করে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সাতক্ষীরা এলাকা থেকে প্রতিদিন ট্রাকে করে হাজার হাজার মণ আম আসছে ঢাকায়। দিনাজপুর, রাজশাহী, যশোর ও নরসিংদী অঞ্চল থেকে আসছে লিচু। এভাবে অন্যান্য জেলা থেকেও নানা ফল আসছে ঢাকায়। তবে প্রায় কাছাকাছি সময়ে সব ফল চলে আসার কারণে দাম কমে গেছে বলে জানা তারা। 

কারওয়ান বাজারের খুচরা ফল বিক্রেতা মামুন হোসেন সমকালকে বলেন, প্রতিদিন রাতে ট্রাক ভরে প্রচুর পরিমাণে ফল আসছে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। আম, জাম, লিচু, ড্রাগন সব একসঙ্গে আসছে। এ কারণে দাম পড়ে গেছে। তবে আম বেশি আসছে বলে জানান এই ফল বিক্রেতা। 

কথা হয় পাইকারি ফল ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের সঙ্গে। আম বিক্রি করা এই ব্যবসায়ী বলেন, এবার উত্তরাঞ্চল থেকে এত বেশি ফল আসছে যে বিক্রি করে শেষ করা যাচ্ছে না। ফল পাকলে বেশি সময় রাখা যায় না, পচে যায়। তাই দাম কম হলেও তাড়াতাড়ি বিক্রি করে দিতে হয়। পাইকারিতে জাত ও আকারভেদে আমের কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকা করে বিক্রি করেন বলে জানান তিনি।

দাম নিয়ে ক্রেতার অনেকেই খুশি। ফার্মগেটে ভ্যানগাড়ি থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে হাঁড়িভাঙা জাতের পাঁচ কেজি আম কিনেছেন গৃহিণী সায়েরা আলম। একই সঙ্গে ১৫০ টাকা দরে ড্রাগন ফল কিনেছেন দুই কেজি। দামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সমকালকে বলেন, ‘ঈদের আগে আমের কেজি কিনেছি ৯০ টাকা, ড্রাগন কিনেছি আড়াইশ টাকায়। সেই তুলনায় দাম এখন মোটামুটি অনেক কম।’

তবে দাম নিয়ে অসন্তোষও রয়েছে কারও কারও মধ্যে। কারওয়ান বাজার থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে এক পাল্লা (৫ কেজি) আম্রপালি কিনেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আমির হোসেন। কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে সমকালকে তিনি বলেন, ‘খবরে শুনতেছি ২০-৩০ টাকা কেজি দরে আম বিক্রি করছেন চাষিরা। তাদের খরচও উঠছে না। কিন্তু ঢাকায় কিনলাম ১০০ টাকায়। তাহলে আমাদের লাভ হইল কই! বেশি দামেই কিনতে হইল।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ