পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি পল্টনের আগুন
Published: 3rd, May 2025 GMT
রাজধানীর পুরানা পল্টনে সাব্বির টাওয়ারে লাগা আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট কাজ করছে।
শনিবার (৩ মে) রাত ৮টা ২৫ মিনিটে ফকিরাপুল বিজয় নগরে পানির ট্যাংকির কাছে সাব্বির টাওয়ারের ছাদে অবস্থিত টিনশেড স্থাপনায় আগুল লাগে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কন্ট্রোল রুম ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান।
১১ তলা বাণিজ্যিক ভবনটির ছাদে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী সহায়তা করছে। বহুতল এ বাণিজ্যিক ভবনে বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানির অফিস রয়েছে। ছাদের একটি অংশে রয়েছে ইলেকট্রিক সামগ্রীর গুদাম। সেখানেই আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন জানান, রাত ৮টা ২৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে প্রথম ইউনিট রাত ৮টা ৩২ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, "পুরো ভবনটি বাণিজ্যিক। ভবনের ছাদে ইলেকট্রনিক সামগ্রীর গুদাম। সেখানেই আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ এখনও চলছে।"
তবে, এই অগ্নিকান্ডে এখনো কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায় নি।
ভবনের নিরাপত্তা কর্মী জসিম উদ্দিন বলেন, "এ ভবনের দোতালায় জাফরান রেস্টুরেন্ট নামে খাবার হোটেল রয়েছে। কোনো আবাসিক হোটেল নেই। প্রতিটি ফ্লোরে বিভিন্ন ধরনের অফিস। যেখানে আগুন লেগেছে সেটা মালিকের ইলেকট্রনিক সামগ্রীর গোডাউন।"
ঢাকা/সুকান্ত/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহের ‘আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল’ কাগজে-কলমেই সংরক্ষিত, বাস্তব চিত্র করুণ
ময়মনসিংহ নগরের ঐতিহাসিক স্থাপনার একটি ‘আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল’। স্থানীয়ভাবে এটা ‘লোহার কুঠি’ নামে পরিচিত। ময়মনসিংহ জেলা প্রতিষ্ঠার শতবার্ষিকী উপলক্ষে ১৮৮৯ সালে প্রাসাদটি নির্মাণ করা হয়। ময়মনসিংহ জেলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৭৮৭ সালের ১ মে। প্রাসাদটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৪৫ হাজার টাকা।
প্রাসাদটি নির্মাণ করেছিলেন তৎকালীন জমিদার মহারাজা সুকান্ত সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী। তৎকালীন ভারত সম্রাট সপ্তম অ্যাডওয়ার্ডের স্ত্রী আলেকজান্দ্রার নামানুসারে এর নামকরণ হয় ‘আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল’। ভবন নির্মাণে লোহার ব্যবহার থাকায় স্থানীয়ভাবে এটি ‘লোহার কুঠি’ নামে পরিচিতি পায়। বর্তমানে প্রাসাদটি ময়মনসিংহ শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজের গ্রন্থাগার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে ১৩৬ বছরের পুরোনো ভবনটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০১৮ সালের ৮ মার্চ এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষিত পুরাকীর্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। ময়মনসিংহে তালিকাভুক্ত ১১টি পুরাকীর্তির একটি এটি। তবে এখনো এটি অধিদপ্তরের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, সেখানে সংরক্ষিত পুরাকীর্তির কোনো সাইনবোর্ড নেই। নিচতলায় গ্রন্থাগার চালু থাকলেও দ্বিতীয় তলার লোহার সিঁড়িগুলো কাঁটাতারে ঘেরা। ভবনের সামনের দুটি ভাস্কর্যের বিভিন্ন অংশ ভাঙা। পেছনের বাগানে গরু চরানো হয়। ভবনের বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়ছে।
ভবনটি দেখতে আসা দর্শনার্থী জাহাঙ্গীর আলম ও ফিরোজা বেগম বলেন, স্থাপনাটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। ফলকে এর ইতিহাস উল্লেখ করলে নতুন প্রজন্ম অনেক কিছু জানতে পারবে।
এই প্রাসাদে অবস্থান করেছিলেন অনেক বরেণ্য ব্যক্তি। ১৯২৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ময়মনসিংহ সফরে এসে চার দিন আলেকজান্দ্রা ক্যাসেলে অবস্থান করেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পুত্রবধূ প্রতিমা দেবী, দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ইতালীয় অধ্যক্ষ জোসেফ তুচি।
সংস্কৃতিকর্মী শামীম আশরাফ বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ অনেক বরেণ্য ব্যক্তিত্বের স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনাটি কেবল কাগজ-কলমেই সংরক্ষিত। বাস্তবে এর চিত্র করুণ।
শশীলজ জাদুঘরের ফিল্ড অফিসার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আলেকজান্দ্রা ক্যাসেলসহ ময়মনসিংহের ১১টি পুরাকীর্তির সংস্কার প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। আগামী অর্থবছরে কাজ শুরু হবে। সংস্কারের পর এটি দর্শনার্থীদের উপযোগী করে তোলা হবে। দ্রুতই সেখানে সাইনবোর্ড লাগানো হবে।