জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে আজ। 

রবিবার (৪ মে) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে, ৩০ এপ্রিল দুপুরে চিন্ময় দাসের জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো.

আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। এরপরই বিকেলে রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হকের আদালত তার জামিন স্থগিত করেন।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করা পর্যন্ত এ জামিন স্থগিত করা হয়। ফলে বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি মিলছে না সনাতনী জাগরণ জোটের নেতার।

গত ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন চট্টগ্রামের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান।

পরবর্তীতে ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় ২৫ নভেম্বর তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন জামিন চাইলে নামঞ্জুর করে চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।

এ নিয়ে ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই দিনই চিন্ময়কে কারাগারে নেওয়া হয়। পরদিন জামিন শুনানির দিন ধার্য থাকলেও আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিলে বন্ধ থাকে আদালতের কার্যক্রম।

পরে গত ৩ ডিসেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। ওই দিন চিন্ময়ের কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় শুনানির জন্য ২ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়। সেদিনও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন বিচারক। পরবর্তীতে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী। গত ৪ ফেব্রুয়ারি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কেন জামিন দেওয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

ঢাকা/এম/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

মামলার ঘটনার বিষয়ে জানেন না মোশাররফ, আনিসুল বলেন, ‘এ কথা বলে কোনো লাভ নেই’

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের কাঠগড়ায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে তোলার পর তাঁর দুই হাত পেছনে নিয়ে পরানো হাতকড়া খুলে দেয় পুলিশ। তাঁর বাঁ হাতে পরানো ছিল হাতকড়া। তখন সকাল ১০টা ৩ মিনিট। বিচারক এজলাসে আসেননি।

আনিসুল হকের সামনে এগিয়ে যান তাঁর আইনজীবী আসিফুর রহমান। তখন আনিসুল তাঁর আইনজীবী আসিফুরকে বলেন, আজ কোন কোন মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে?

জবাবে আসিফুর বলেন, ‘স্যার, আজ আপনার দুটি মামলা রয়েছে। একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন, অন্যটি রিমান্ড শুনানি।’

আনিসুলের সামনে তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা দাঁড়িয়ে ছিলেন। আনিসুলের ডান পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি আনিসুলের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

মোশাররফের কাছে আনিসুল জানতে চান, আজ কোন মামলায় তাঁর শুনানি। হাসিমুখে মোশাররফ জানান, কোন মামলায় আজ তাঁকে আনা হয়েছে, তা তিনি জানেন না।

সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে বিচারক এজলাসে আসেন।

তখন একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলতে থাকেন, বনানী থানার একটি মামলায় আনিসুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছে। পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করার পর বিচারক আসামি আনিসুলের নাম ধরে ডাকেন। আনিসুল তখন আদালতে উপস্থিত আছেন জানিয়ে দেন।

এরপর বিচারক আনিসুলের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাকে বনানী থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো।’

পরে মোশারফকে পল্টন থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। একই সঙ্গে তাঁর ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। তখন মোশাররফের পক্ষের আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘আমার মক্কেলের বয়স এখন ৮২। তাঁর হার্টে রিং পরানো হয়েছে। তিনি খুব অসুস্থ। তাঁকে ১৫টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল। প্রতিটি মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। যখনই তিনি কারাগার থেকে ছাড়া পাবেন, তখনই তাঁকে নতুন নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।’

মোশাররফের আইনজীবী আদালতকে আরও বলেন, ‘আমার মক্কেল একজন বয়স্ক মানুষ। আপনার (বিচারক) সামনেই দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর শরীরটা ভালো নেই। তিনি কোনো ধরনের হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত নন। তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’

মোশাররফের রিমান্ডের সপক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি আদালতকে বলেন, ‘আপনার সামনে যিনি দাঁড়িয়ে আছেন, তিনি ফ্যাসিস্ট হাসিনার অন্যতম সহযোগী। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। যিনি গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে আসেন, তিনি সাফাই গান, কোনো অপরাধের সঙ্গে তিনি জড়িত নন।’

উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত মোশারফের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে আনিসুলের সঙ্গে মোশাররফ কথা বলেন। তিনি আনিসুলের কাছে বলেন, মামলার ঘটনার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

তখন মোশাররফকে আনিসুল বলেন, ‘এ কথা বলে কোনো লাভ নেই।’ আনিসুলের এ কথা শুনে মোশারফ তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে হেসে দেন।

এ সময় আনিসুলের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্য সেন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা মাঈন হাসান সজীব। শাহবাগ থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। তিনি আনিসুলকে বলেন, ‘স্যার, আমার লেখাপড়া এখনো শেষ হয়নি। কবে লেখাপড়া শেষ করব, কপালে কী আছে জানি না, স্যার।’ তখন আনিসুল ওই ছাত্রলীগ নেতাকে সান্ত্বনা দেন।

‘আমি ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি’

আগে থেকে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন আনিসুল ও মোশাররফ। তাঁদের সামনে ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। বিচারক এজলাসে ছিলেন। তবে তখনো শুনানি শুরু হয়নি।
এ সময় দুজন পুলিশ সদস্য বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারীকে কাঠগড়ায় হাজির করেন। তখন তিনি কাঠগড়ায় পায়চারি করছিলেন। তাঁর স্ত্রী নাজমা আক্তার কাঠগড়ার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাবুল সরদার তাঁর স্ত্রীর দিকে ছুটে যাচ্ছিলেন। কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বাবুল চাখারীর নাম ধরে ডাকা হয়। তিনি কাঠগড়ার সম্মুখভাগে এগিয়ে যান।

বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারীকে আদালত থেকে হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইউনূস সরকারের ৩০০ দিন: পুনর্মিলন নাকি বিভাজন, কোন পথে বাংলাদেশ
  • মামলার ঘটনার বিষয়ে জানেন না মোশাররফ, আনিসুল বলেন, ‘এ কথা বলে কোনো লাভ নেই’
  • খামেনির ‘যুদ্ধ শুরু’ ঘোষণার পর ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের
  • ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশের তালা বিএনপিকে ভোগাবে
  • জাবিতে ৬ ইউনিটে ৫৫০ আসন ফাঁকা
  • ৫৫০ শূন্য আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি নেবে জাবি
  • লন্ডন বৈঠক পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বৃটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে: মঈন খান
  • বাস-ট্রাক সংঘর্ষে ইবির শিক্ষার্থী নিহত
  • শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে হাজির হতে ২ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ 
  • স্থায়ী গুমবিষয়ক কমিশন গঠন করা হবে: আইন উপদেষ্টা