রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন এক কর্মকর্তা। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মিছিলে তাকে সামনের সারিতে দেখা গেছে।

রাজশাহী নগরের সাহেববাজার এলাকায় শনিবার (৩ মে) বিকেলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে এনসিপি, রাজশাহী। কর্মসূচির ব্যানারটি ধরে সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন রুয়েটের সংস্থাপন ও প্রশাসন শাখার জুনিয়র সেকশন অফিসার আশিক ইকবাল।

রুয়েট কর্তৃপক্ষ ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট এক অফিস আদেশে সব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, “রুয়েট আইন ২০০৩-এর ৪৪(৪) ও ৪৫(৫) ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা, শিক্ষক বা কর্মচারী রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না।” একই সঙ্গে ছায়া সংগঠন ও রাজনৈতিক কার্যক্রমেও শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সংশ্লিষ্টতা নিষিদ্ধ করা হয়।

আরো পড়ুন:

ছাত্র আন্দোলনে হামলা: রুয়েট কর্মকর্তাকে পুলিশে দিলেন শিক্ষার্থীরা

সাতক্ষীরায় কলেজছাত্রীর গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আদেশটি জারি হয়েছিল, যার লঙ্ঘনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথাও বলা হয়। এমনকি তারও আগে, ২০২৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রুয়েট প্রশাসন একই ধরনের একটি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।

এই অবস্থায় এনসিপির কর্মসূচিতে উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তা সরাসরি স্বীকার করেছেন রুয়েটের কর্মকর্তা আশিক ইকবাল। তাঁর ভাষায়, “আমি কাগজে-কলমে এনসিপির কোনো পদে নেই। ওই সময় এলাকায় ছিলাম, একজন ডাকে, তাই কর্মসূচিতে অংশ নিই।”

রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আরিফ আহম্মদ চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, “বিষয়টি আমি দেখিনি। তবে এমন কিছু হয়ে থাকলে তা স্পষ্টতই বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার লঙ্ঘন।”

এখন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি এখনো অফিসিয়ালি কিছু জানি না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”
 

ঢাকা/কেয়া/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত র জন ত ক এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

১০ বছরে বিকাশের আয় বেড়ে ৯ গুণ, মুনাফা ১৭ গুণ

মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা বা এমএফএস প্রতিষ্ঠান বিকাশের জন্য ২০২৪ সালটি ছিল রেকর্ডের বছর। এ বছর প্রতিষ্ঠানটির আয় প্রথমবারের মতো পাঁচ হাজার কোটি টাকার মাইলফলক ছাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে প্রথমবারের মতো মুনাফা ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকার ঘর। সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশের গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদন থেকে বিকাশের রেকর্ড আয় ও মুনাফার এই তথ্য পাওয়া গেছে।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর শেষে বিকাশের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৮ কোটি টাকায়। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিকাশের আয় ৮৬৭ কোটি টাকা বা ২১ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি গত বছর শেষে প্রতিষ্ঠানটির প্রথমবারের মতো ৩১৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৯৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিকাশের মুনাফা বেড়েছে ২১৭ কোটি টাকা বা ২১৯ শতাংশ।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিকাশ এত মুনাফা ও আয় করেনি। ২০১১ সালে যাত্রা শুরুর পর বিকাশের সর্বোচ্চ মুনাফা ছিল ২০২৩ সালে, ওই বছর প্রতিষ্ঠানটি ৯৯ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। গত বছর একলাফে তা ৩০০ কোটি টাকার মাইলফলক ছাড়িয়ে যায়। বিকাশের এই মুনাফার ওপর ভর করে ব্র্যাক ব্যাংকও সমন্বিতভাবে ১ হাজার ৪৩২ কোটি টাকার রেকর্ড মুনাফা করেছে। কারণ, বিকাশের সিংহভাগ মালিকানা ব্র্যাক ব্যাংকের হাতে রয়েছে।

এদিকে বিকাশের গত ১০ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১০ বছরের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির আয় বা ব্যবসা বেড়ে হয়েছে ৯ গুণ। আর একই সময়ের ব্যবধানে মুনাফা বেড়ে ১৭ গুণ হয়েছে। ১০ বছর আগে ২০১৪ সালে বিকাশের আয় ছিল ৫৭৩ কোটি টাকা। আর ওই বছর প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা করেছিল ১৯ কোটি টাকা। দুটোই এখন বেড়ে বিকাশকে বড় অঙ্কের লাভজনক এক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।

তিন বছর ধরে বিকাশের মুনাফা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটি ১১৭ কোটি টাকা লোকসান করেছিল। এরপর ২০২২ সালে ১৮ কোটি এবং ২০২৩ সালে ৯৯ কোটি টাকা মুনাফা করে বিকাশ। তবে ২০১৪ সাল থেকে প্রতিবছরই প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা বা আয় বেড়েছে। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে মুনাফায় ছেদ পড়ে। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিকাশের মুনাফা ধারাবাহিকভাবে বেড়েছিল। ২০১৮ সালে এসে তা কমে যায়। এরপর ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিন বছর বিকাশ লোকসানে ছিল। গত বছর শেষে মুনাফায় বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটে।

জানতে চাইলে বিকাশের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা বা সিএফও মঈনুদ্দিন মোহাম্মদ রাহগীর প্রথম আলোকে বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় এমএফএস প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিকাশ সব সময় ব্যবসা টেকসই করতে দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যকে সামনে রেখেছে। ক্যাশলেস দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে বিকাশ এক দশক ধরে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিষেবা অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও গ্রাহকসহ অংশীজনদের ডিজিটাল শিক্ষা বাড়াতে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ করেছে। এই কৌশলগত উদ্যোগ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজস্ব প্রবৃদ্ধিতে স্থিতিশীলতা এনেছে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতের টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথকে সুগম করেছে।

২০১১ সালে এমএফএস প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করা বিকাশের এখন গ্রাহক প্রায় ৮ কোটি। দেশজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার এজেন্ট ও সাড়ে ৫ লাখ মার্চেন্ট পয়েন্ট। আর্থিক লেনদেন ছাড়াও বিকাশে রয়েছে বিভিন্ন পরিষেবা বিল পরিশোধ, ন্যানো ঋণ ও ডিপোজিট সুবিধা। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানার সঙ্গে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানি ইন মোশন, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন বা আইএফসি, গেটস ফাউন্ডেশন, অ্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল ও সফটব্যাংক।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি গত বছর ১৮৯ কোটি টাকা সরকারকে কর দিয়েছে। আর ওই বছর ব্যাংক থেকে সুদ বাবদ প্রতিষ্ঠানটি আয় করেছে ১৯০ কোটি টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নোবিপ্রবিতে ৪ বছরে স্নাতকে ভর্তি হয়েছেন ৫৭৩৪ শিক্ষার্থী
  • বরাদ্দকৃত ট্রেনের দাবিতে নোয়াখালীতে ছাত্র জনতার রেলপথ অবরোধ
  • হাজার কোটি টাকার মুনাফার ঘরে ব্র্যাক এবং সিটি ব্যাংক
  • ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের নিট মুনাফা কমে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে
  • ২৬ বার ছুরিকাঘাতে ফিলিস্তিনি-মার্কিন শিশুকে হত্যা করা ব্যক্তির ৫৩ বছরের কারাদণ্ড
  • ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত
  • পানি সংকট দূরীকরণ প্রকল্পের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি
  • ১০ বছরে বিকাশের আয় বেড়ে ৯ গুণ, মুনাফা ১৭ গুণ