ছবি: সংগৃহীত

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত: হামলার মধ্যেই শান্তির চেষ্টা

ইরান ও ইসরায়েলের তীব্র লড়াইয়ের মধ্যেই কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুলছে। সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়ে কিনা– এমন জল্পনার মধ্যে হোয়াইট হাউস দুই সপ্তাহ পর সিদ্ধান্ত জানানোর ঘোষণা দিয়েছে। এ সময়কে সংকটের কূটনৈতিক সমাধানে কাজে লাগাতে চান ইউরোপের নেতারা। এ নিয়ে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড লামি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত কারও উপকারে আসবে না। 

এদিকে সংকট সমাধানে গতকাল শুক্রবার আলোচনায় বসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদও। সেখানে ইরান ও ইসরায়েল একে অপরকে দোষারোপ করে কথার লড়াইয়ে নামে।

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা অষ্টম দিনে গড়ায় গতকাল শুক্রবার। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ হলেই এ সংঘাত বন্ধ হবে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো সমঝোতার বার্তা শোনা যায়নি। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে সংঘাতে টেনে আনতে চাইছে এবং লড়াই চালিয়ে যাওয়ার হুংকার দিচ্ছে। এ অবস্থায় নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়িয়েছে রাশিয়া ও চীন। প্রশ্ন উঠছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলের পক্ষে ইরানে হামলা শুরু করে, তাহলে রাশিয়া ও চীন ইরানকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে কিনা? 

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বক্তব্য দেওয়ার পরই জেনেভায় বৈঠকস্থলে পৌঁছান আরাগচি। বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিকরা অংশ নেন। ইরানের সংবাদমাধ্যম ইরনার বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাকে ‘সম্মানজনক’ ও ‘গুরুত্ববহ’ বলে বর্ণনা করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। সাড় তিন ঘণ্টা ধরে এ আলোচনা চলে। সেখানে ইরানের পারমাণবিক নথি নিয়ে আলোচনা হয়। সম্মেলনে ইরানের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছলে ইসরায়েল তাতে সম্মত হবে কিনা– সেটা বড় প্রশ্ন হয়েই সামনে আসে। কারণ অতীতে ফিলিস্তিনের গাজা নিয়ে ইউরোপের দেশগুলো ইসরায়েলের ওপর চাপ দিলেও তারা তা আমলে নেয়নি। 

সংঘাতে মধ্যস্থতার ভূমিকা থেকে ইসরায়েলের পক্ষ নেওয়া যুক্তরাষ্ট্র আদৌ ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াইয়ে যাবে কিনা– তা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। অনেকে বলছেন, ইসরায়েলের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ওই অঞ্চলে সামরিক ঘাঁটিতে থাকা তাদের সেনাদের জীবন বিপন্ন করতে চাইবে না। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ জনগণের একটি বড় অংশ ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চাইছে না।

সম্প্রতি ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়ানো নিয়ে দ্য ইকোনমিস্ট বা ইউগভের জরিপে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ মার্কিনি মনে করে যুক্তরাষ্ট্রের এ সংঘাতে জড়ানো উচিত নয়। কেবল ১৬ শতাংশ মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সংঘাতে জড়ানো উচিত। ২৪ শতাংশ কোনো ‘জানে না’ বলে জানিয়েছে।

এর আগে ইরানে হামলা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে হামলা শুরুর বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। গত বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউস জানায়, ইরানের বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এক্সিয়সের বারাক ডেভিড বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে বড় উত্তেজনা ঠেকাতে ট্রাম্প কূটনৈতিক সমাধান বের করার সুযোগ হিসেবে এ সময় দিয়েছেন।

এ অবস্থায় নোবেল বিজয়ী নারগিস মোহাম্মদি ইরান ও ইসরায়েলে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। সিএনএনকে পাঠানো এক বিশেষ ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, বাসস্থান, অবকাঠামো ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বোমা ফেলে ধ্বংস করা হচ্ছে। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে যুদ্ধে না গিয়ে যুদ্ধবিরতির পথ বের করার আহ্বান জানান।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্তেজনা
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা গেছে। সিএনএন জানায়, দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার সময় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। ইরান-ইসরায়েলের সংঘাতকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এ আয়োজন করে। পরিষদে জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরাবানি বলেন, ইরান যতদিন প্রয়োজন তার আত্মরক্ষার অধিকারের চর্চা চালিয়ে যাবে; ইসরায়েল ও তার মিত্ররা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে।

জবাবে জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ডেনন ইরানের বিরুদ্ধে ‘ভুক্তভোগী হওয়ার খেলা’ চালানোর অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল থামবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত পারমাণবিক হুমকি নষ্ট করা ও নিরস্ত্র করা না হচ্ছে, ততক্ষণ থামবে না। এ সময় জাতিসংঘ মহাসচিব দুই পক্ষকে উস্কানির বিষয়ে সতর্ক করে দ্রুত সংযত হওয়ার আহ্বান জানান। 

টেক পার্কে ইরানের হামলা, পুড়ল মাইক্রোসফট কার্যালয়
গতকাল শুক্রবার ইসরায়েলের তেল আবিব, জেরুজালেম ও বিরশেবা শহরে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, জেরুজালেম ও তেল আবিবে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। দক্ষিণ ইসরায়েলের বিরশেবা ‘টেক সিটি’ বা প্রযুক্তির শহর হিসেবে পরিচিত। সেখানে মাইক্রোসফটের কার্যালয়ের একদম কাছে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। আবাসিক ভবনগুলোও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েল সরকার ক্ষয়ক্ষতির ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ধারণ নিষিদ্ধ করলেও কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা প্রকাশ পাচ্ছে। মাইক্রোসফটের কার্যালয়ে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। ইসরায়েলি জরুরি সেবা সংস্থা বলেছে, হামলায় আহত পাঁচজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

বিবিসি জানায়, ইসরায়েলের গাভ-ইয়াম টেকনোলজি পার্ক লক্ষ্য করে ইরান এ হামলা চালিয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভোরে কাছাকাছি স্থানে সোরোকা হাসপাতালেও হামলা চালায় ইরান। তবে ইরান বলছে, ওই হাসপাতালের পাশের ভবনে তারা হামলা চালিয়েছে, যেখানে সামরিক ও গোয়েন্দা কার্যালয় গড়ে তুলেছে ইসরায়েল। বিরশেবা শহরে ইরানের হামলার জেরে রেল সেবা সাময়িক বন্ধ রয়েছে।

গতকাল শুক্রবার ইসরায়েলের হাইফা বন্দরে ফের হামলা চালায় ইরান। সিএনএন জানায়, ইরানের হামলায় গতকাল শুক্রবার ২৩ জন আহত ও একজন নিহত হয়েছে। এ পর্যন্ত ইসরায়েলে ২৫ জন নিহত ও কয়েকশ জন আহত হয়েছে। উত্তরাঞ্চলীয় কারমেল শহরে এক নারী নিহত হন।

ইসরায়েলের হামলা
ইরানের রাজধানী তেহরানের গিশা এলাকায় আবাসিক একটি ভবনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার তিনটি কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে। এতে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কেন্দ্রে থাকা ইরানের এক কমান্ডার নিহত হন। ওই তিন কেন্দ্র থেকে ইসরায়েলের উদ্দেশে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ঠিক আগমুহূর্তে হামলা চালানো হয়। তাদের দাবি, কেন্দ্রে থাকা এক কমান্ডার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তাদের হামলায় নিহত হয়েছেন।

আইডিএফের উদ্ধৃতি দিয়ে আলজাজিরা জানায়, গতকাল শুক্রবার ইরান থেকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উদ্দেশে ছোড়া হয়। ইসরায়েল এগুলোকে ডেড সি এলাকায় প্রতিহত করেছে। ইরান জানিয়েছে, আট দিনে ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ২৪০ জন নিহত ও ১ হাজার ২৭৭ জন আহত হয়েছেন। 

এটা যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ নয়: ইরানের মন্ত্রী
ইসরায়েলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিলে পুরো অঞ্চলের জন্য নরক নেমে আসবে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খতিবজাদে। তিনি বলেন, ‘এটা যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ নয়।’ যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ যুদ্ধে জড়ান, তাহলে তিনি ইতিহাসে চিরকাল এমন এক প্রেসিডেন্ট হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন, যিনি এমন এক যুদ্ধে পা রেখেছিলেন, যা তার নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা এ সংঘাতকে জটিল ফাঁদে পরিণত করবে বলে মন্তব্য করেন সাঈদ খতিবজাদে। তিনি বলেন, এতে আগ্রাসন চলতে থাকবে। নৃশংস নির্যাতনের অবসান আরও বিলম্বিত হবে।

কূটনৈতিক সমাধানের সুযোগ আছে: ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, ইরান-ইসরায়েলের সংঘাত নিয়ে আগামী দুই সপ্তাহে কূটনৈতিক সমাধানের সুযোগ আছে। গতকাল শুক্রবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে আলোচনার জন্য জেনেভা যাচ্ছেন ল্যামি। এর আগে তিনি ইসরায়েল-ইরান পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দেন। তাতে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না ইরান কখনও পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করুক। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কূটনৈতিক সমাধানের সুযোগ তৈরি হয়েছে।’ ল্যামি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের ভয়াবহতা শেষ হওয়ার সময় এখনই। এই আঞ্চলিক সংঘাত থামাতে হবে। এটি কারও উপকারে আসবে না।’ এর আগে গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে আলোচনা করেন ল্যামি। 

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও বাহরাইন যুবরাজের বৈঠক
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার লন্ডনে বাহরাইনের যুবরাজ সালমান বিন হামাদ আল খলিফার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এতে তারা মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংকট প্রশমনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক মুখপাত্র জানান, স্টারমার ও সালমান আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে টেকসই ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত। তারা উভয়ে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানান।

তেহরানে ব্যাপক বিক্ষোভ
ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। আলজাজিরা জানায়, গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাস্তায় নেমে তেহরানের বাসিন্দারা এ বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভে অংশ নেন ইরানের প্রধান বিচারপতি গোলাম-হোসেন মোহসেনি ও সাবেক রেভল্যুশনারি কমান্ডার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলি জাফরি। প্রতিবেশী ইরাক এবং ইয়েমেনেও বিক্ষোভ হয়েছে।

ট্রাম্পের সংঘাত সামলানো নিয়ে উদ্বেগ মার্কিন-ইরানি কংগ্রেস সদস্যের
ডেমোক্র্যাট ও ইরানি বংশোদ্ভূত মার্কিন কংগ্রেসের সর্বকনিষ্ঠ নারী সদস্য ইয়াসামিন আনসারি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত সামলাচ্ছেন, তা নিয়ে তিনি ‘চরম উদ্বিগ্ন’। বিবিসির নিউজডে অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন একজন প্রেসিডেন্ট আছেন, যিনি প্রতিদিন তাঁর মত পাল্টান। কেউই তাঁর কথা বিশ্বাস করেন না।’ ইরাক যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভালো বা ‘সফল’ ইতিহাস নেই। তাই হস্তক্ষেপ উচিত হবে না।

আগ্রাসন বন্ধই সংঘাত বন্ধের উপায়, বলছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইসরায়েলের আগ্রাসন নিঃশর্তভাবে বন্ধ করাই এ সংঘাত বন্ধের একমাত্র উপায়। গতকাল শুক্রবার এক্স পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমরা সব সময় শান্তি ও স্থিতিশীলতা চেয়েছি। চলমান চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের অবসানের একমাত্র পথ হলো শত্রুর আগ্রাসন নিঃশর্তভাবে বন্ধ করা এবং জায়নবাদী সন্ত্রাসীদের দুঃসাহসিক তৎপরতা চিরতরে বন্ধের সুনির্দিষ্ট নিশ্চয়তা।’ আলজাজিরা জানায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইসরায়েলকে যদি থামানো না হয়, তাহলে ইরান আরও কঠোর জবাব দেবে।

সরকারি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা জোরদারের নির্দেশ ইসরায়েলের
ইরানের ‘শাসন ব্যবস্থার প্রতীক’ হিসেবে চিহ্নিত লক্ষ্যবস্তুতে হামলা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। আলজাজিরা জানায়, এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এসব হামলার উদ্দেশ্য হচ্ছে ইরান সরকারকে দুর্বল করা।

ইসরায়েল হামলা চালিয়ে গেলে আলোচনা নয়: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, ইসরায়েল হামলা চালিয়ে গেলে তিনি কারও সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত নন। আলজাজিরা জানায়, ইউরোপীয় দেশের নেতাদের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠকে অংশ নিতে জেনেভা রওনা হওয়ার আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে তিনি এ কথা বলেন।

ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ চায় ইহুদি সংগঠন
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রগতিশীল ইহুদিদের সংগঠন জিউইশ ভয়েস ফর পিস (জেভিপি) ইসরায়েলকে ইরানের ওপর হামলা অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনটি বলেছে, এ হামলা পুরো অঞ্চলে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করছে। আলজাজিরা জানায়, যুক্তরাষ্ট্রকে এখনই ইসরায়েলকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করতে বলেছে সংগঠনটি। এক বিবৃতিতে জেভিপি বলেছে, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল সরকারের যুদ্ধাপরাধে আন্তর্জাতিক সমর্থনে দীর্ঘদিনের দায়মুক্তি ও যুক্তরাষ্ট্রের নিঃশর্ত সামরিক সহায়তা আজকের এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

বেঁচে আছেন খামেনির সেই উপদেষ্টা আলি শামখানি
ইরানের প্রভাবশালী নেতা ও সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা আলি শামখানি জীবিত আছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইসরাইলের দাবি ছিল, সাম্প্রতিক বিমান হামলায় শামখানি নিহত হয়েছেন। দৈনিক সমকাল স্বতন্ত্রভাবে খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ