শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা লালনের দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। দুই মন্ত্রণালয়ে আমাদের এমন কিছু কাজ করা প্রয়োজন যাতে আজকে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিতর্ক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেল তাদের এই প্রতিভা বিকাশের সুযোগ তৈরি করা।

আজ শনিবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাল্টিপারপাস কনফারেন্স হলে, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৫ এর শুভ উদ্বোধন ও প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৪ প্রদান অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি স্লোগান নিয়ে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে। শুধুমাত্র প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালায়ই নয়, সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা কি হওয়া উচিত এই স্লোগানের মধ্যে অন্তর্নিহিত রয়েছে। তাই আমাদের সীমিত সম্পদ, সরকারে আমাদের সীমিত সময় ও সুযোগের মধ্যে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সকলকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে দেশ গড়ার কারিগরদের তৈরি করার প্রতিষ্ঠান। এখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু একটা করার ক্ষেত্রে সরকারে সময় কম হলেও আমি দায়িত্বের চাপ অনুভব করছি।

সি.

আর. আবরার বলেন, ছোটবেলা থেকে বিভিন্ন ধাপগুলি পেরিয়ে শিক্ষার্থীদের টারসিয়ারি ইনস্টিটিউশন পর্যন্ত দেখভালের দায়িত্ব রাষ্ট্র বহন করছে। শিক্ষার্থীদের পরিবারগুলো এ দায়িত্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্পণ করেছে। কিন্তু আমরা জানি বহুলাংশে সেগুলোর ক্ষেত্রে নানা রকমের ব্যত্যয় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার সামাজিক অবস্থান ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট যদি ভালো কিছু করে ভালো হয়, খারাপ কিছু করলে খারাপ হয়। ভালো কিছু কারার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, শিক্ষকতা একটি মহান পেশা এটা বুলি নয়। শিক্ষকরা শুধু চাকুরি করতে আসেন না, তারা শিক্ষার্থীদের দেশ গাড়ার কারিগর হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব তারা নিয়েছেন। আমাদের সম্পদের অপ্রতুলতার কারণে শিক্ষকদের প্রাপ্য সম্মান দিতে পারছি না। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব রয়েছে এই মহান পেশায় যে শিক্ষকরা রয়েছে তাদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার। প্রাইমারি শিক্ষক থেকে শুরু করে বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য পর্যন্ত আমাদের আচার- আচারণে তাদের প্রাপ্য সম্মান দেয়া উচিত। আজকের প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি আমরা শিক্ষকদের মর্যাদা সমুন্নত রাখব।

তিনি আরও বলেন, গর্ভানিং বডি ছাড়া যারা অভিভাবক রয়েছেন তারা যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর রাখেন তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সমস্যা থাকবে না। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ, গান, আবৃতি, খেলাধুলা ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করলে শিক্ষার্থীরা উৎসাহিত হবে, পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটবে। এসকল আয়োজনে অভিবাক ও সমাজের সকল স্তরের লোকজনের সহযোগিতা প্রয়োজন। শিক্ষা হচ্ছে বৈষম্য দূরীকরণে সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার। একটি শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য শিক্ষা বড় রকমের ভূমিকা পালন করে। রাষ্ট্রের উচিত এই শিশুদের এমন পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া যাতে তার সুপ্ত প্রতিভাগুলি বিকশ ঘটাতে পারে। শিক্ষা শুধু চাকরি বা ব্যবসা করার জন্য না। শিক্ষা হচ্ছে একজনকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যাতে তারমধ্যে ন্যায় নীতি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে পড়ার চাপ কমিয়ে তাদের নাচ, গান, আবৃতি ও খেলাধুলায় আগ্রহী করে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

আলোচনা সভা শেষে বিজয়ীদের মাঝে প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৪ প্রদান করা হয়েছে।

অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মাননীয় উপদেষ্টা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ক ষ উপদ ষ ট স আর আবর র উপদ ষ ট র জন য আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে আরো অস্ত্র পাঠানোর ঘোষণা ট্রাম্পের

ইউক্রেনের ওপর লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। এই নিয়ে কয়েকদিন আগেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এবার তিনি ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন। 

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক আক্রমণের প্রেক্ষিতে দেশটিকে আত্মরক্ষার সুযোগ দিতে নতুন করে অস্ত্র পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি হোয়াইট হাউজে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের জানান, “আমরা আরো কিছু অস্ত্র পাঠাতে যাচ্ছি। আমাদের এটা করতেই হবে। ইউক্রেনকে আত্মরক্ষার সুযোগ দিতে হবে।”

কী কারণে এই সিদ্ধান্ত তাও জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “রাশিয়া এখন প্রচণ্ডভাবে ইউক্রেনকে আঘাত করছে। সেখানে এর ফলে অনেক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা ইউক্রেনে আরো কিছু অস্ত্র পাঠাতে চলেছি। এতে তারা নিজেদেরকে রক্ষা করতে সক্ষম হবে।”

আরো পড়ুন:

মার্কিন অস্ত্র সহায়তা স্থগিতে রুশ হামলা জোরদারের শঙ্কায় ইউক্রেন

ইউক্রেনের লুহানস্ক পুরোপুরি দখলে নেওয়ার দাবি রাশিয়ার

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই হোয়াইট হাউজ ইউক্রেনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মার্কিন অস্ত্রের চালান স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়ার পর, ইউক্রেনের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। তারা বলেছিল, অস্ত্র সরবরাহ কমলে রাশিয়ার আকাশ ও স্থল হামলা প্রতিহত করা কঠিন হবে। এই বিষয়টি নিয়ে মার্কিন রাজনীতিতেও সমালোচনা হয়েছে।

সোমবার (৭ জুলাই) সেই হোয়াইট হাউজেই সাংবাদিকদের ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর কথা জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, “ইউক্রেনে আমাদের আরো অস্ত্র পাঠাতে হবে। প্রাথমিকভাবে প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র পাঠানো হবে।” তবে কী ধরনের অস্ত্র পাঠানো হবে তা জানাননি তিনি।

এর আগে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, যেভাবে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে তাতে তিনি ‘অসন্তুষ্ট’।

তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের জন্য একাধিকবার পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ট্রাম্প। বৃহস্পতিবারও তাদের দুজনের মধ্যে ফোনে কথা হয়। তবে আলোচনা যে ফলপ্রসূ হয়নি তাও জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প বলেন, “পরিস্থিতি খুবই কঠিন। রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে আমি খুবই অসন্তুষ্ট। তিনি কেবল মানুষ হত্যা চালিয়ে যেতে চাইছেন। তা কখনই ভালো বিষয় নয়।”

সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনে, ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে ৬৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সামরিক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। কিন্তু ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনের জন্য সহায়তার বিষয়ে সন্দিহান এবং তিনি প্রতিশ্রুতি অনুসরণ করেননি। এই বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে কিয়েভের জন্য কোনো নতুন সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেননি।

রাশিয়া গত কয়েক দিনে ইউক্রেনের একাধিক শহরে বড় আকারে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার দাবিও জানান তিনি।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ