গাজীপুর নগরের কাশিমপুরে শ্রমিক আন্দোলনের জেরে একটি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে কারখানার গেটে এ–সংক্রান্ত একটি নোটিশ টাঙানো হয়। এরপর ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন।

কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, কাশিমপুরের সুরাবাড়ি এলাকার মার্ক সোয়েটার লিমিটেডের কারখানা রয়েছে। বকেয়া বেতন, কাজের দরবৃদ্ধিসহ বেশ কিছু দাবি নিয়ে কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলনে নেমেছেন। শ্রমিকেরা আজ সকালে কারখানা গেটে গিয়ে অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ দেখতে পান। ওই নোটিশ দেখে শ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ওই কারখানা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

কারখানার গেটে টাঙানো নোটিশে বলা হয়েছে, চলমান বেআইনি ধর্মঘট ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী ১১ মে থেকে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো। নিরাপত্তা প্রহরী ও প্রশাসনিক কর্মীরা এই সিদ্ধান্তের আওতামুক্ত থাকবেন। পরিবেশ অনুকূলে এলে পুনরায় নোটিশ দিয়ে খোলার তারিখ জানানো হবে।

কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মনিরুজ্জামান বলেন, শ্রমিকেরা কাজের দরবৃদ্ধি, এক কর্মকর্তার অপসারণসহ বেশ কিছু দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এ কারণে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। আজ সকালে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কারখানার আশপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পাবনায় অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি কাটার অভিযোগে আটক ১৪

পাবনার সদর উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী ফসলি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কাটার অভিযোগে ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের তিন মাসের জেল দেওয়া হয়। এ সময় আটটি ট্রাক ও চারটি স্কেভেটর মেশিন জব্দ করা হয়।

রোববার রাতে উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চরঘোষপুরে অঞ্চলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুরাদ হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

আটককৃতরা হলো- পাবনা সদরের কৃষ্টপু্র গ্রামের কালু প্রামাণিকের ছেলে জুয়েল, হেরাজ প্রামাণিকের ছেলে হৃদয়, চর চরভাঙ্গা বাড়িয়ার রাসেল বিশ্বাসের ছেলে মারুফ, বধেরহাটের সাদেক মন্ডলের ছেলে বাবু মন্ডল, লাইব্রেরি বাজারের আব্বাস উদ্দিনের ছেলে বাপ্পি, চরঘোষপুরের মুক্তার মন্ডলের ছেলে হযরত আলী, বাংলাবাজারের মৃত আকবর আলী ছেলে মক্কার প্রামাণিক, মৃত রোস্তম আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম, গাছপাড়ার জাহের আলী জমির হোসেন, চক ছাতিয়ানির মৃত নূর হোসেনের ছেলে সাহাবুল ইসলাম, চাটমোহরের মৃত নুরুজ্জামানের ছেলে নাহিদ পারভেজ, পাবনা শহরের আটুয়া গ্রামের মৃত মানিক হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন, কাচারীপাড়ার সিদ্দিক মন্ডলের ছেলে পান্না, বাংলাবাজারের সোহরাব প্রামাণিকের ছেলে সাইফুল।

জানা গেছে, জেলার পদ্মার নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ফসলি জমির আবাদ হয়। কৃষকরা সারাদেশে সবজির চাহিদা মিটিয়ে থাকে। সেখানে কৃষকের ফসলি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নেওয়ার শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এর তথ্যের ভিত্তিতে রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পাবনা সদর উপজেলাধীন চরঘোষপুরে অবৈধভাবে মাটি কাটার অভিযোগে আটটি ট্রাক, চারটি স্কেভেটর মেশিন জব্দ এবং জড়িত ১৪ জনকে আটক করে তিন মাসের জেল দেওয়া হয়। এ সময় সেনাবাহিনী, এনএসআই সহকারী পরিচালক, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এই অঞ্চলে আজ প্রায় পাঁচ মাস ধরে ফসলি জমি থেকে মাটি ও বালু কাটা হচ্ছে। সব প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয় না। এলাকায় এসে এসব অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলে যায়। আবার প্রশাসন মাঝেমধ্যে এসে এদের আটকও করে।  কিন্তু দুয়েকদিনের মধ্যে জেল থেকে বের হয়ে এসে আবারও মাটি কাটা শুরু করে। এসব বালু ও মাটি কাটার সঙ্গে প্রশাসনও জড়িত। মাঝেমধ্যে দায়সারা অভিযান চালানো হয়। স্থায়ীভাবে ফসলি জমি থেকে বালু ও মাটি কাটা বন্ধের দাবি করেন তারা।

পাবনা সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুরাদ হোসেন বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতিকারী চরঘোষপুরে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে উত্তোলন করে আসছিল। যার ফলে উক্ত এলাকায় পরিবেশ নষ্ট হওয়াসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং আশেপাশের আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

এছাড়াও সম্প্রতি মাটিকাটা ট্রাক্টরের নিচে চাপা পড়ে বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান করে ১৪ জনকে আটক করে জেল দেওয়া হয়েছে। অবৈধ বালু ও মাটি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ