জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের সময় গুলিতে সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে বলে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো.

মাসুদ রানার সই করা প্রতিবাদ ও বিবৃতির মাধ্যমে এ কথা জানানো হয়। এই প্রতিবাদ ও বিবৃতির পত্রটি মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে তাজুল ইসলাম নিজেই তার ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, চিফ প্রসিকিউটর জুলাই মাসে গণহত্যা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন।’

এতে আরও বলা হয়, ‘‘চিফ প্রসিকিউটর নিজেই স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, জুলাইয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক এবং পদ্ধতিগত হত্যাযজ্ঞ বা Mass Murder সংগঠিত হয়েছে, যা বাংলায় সাধারণভাবে গণহত্যা বলা হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী Genocide অর্থ হচ্ছে জাতিগত নির্মূল (Ethnic Cleansing) অর্থে গণহত্যা। তবে তিনি এই ঘটনার জন্য ‘জেনোসাইড’ (Genocide বা জাতি/গোষ্ঠীনিধন) এর অভিযোগ আনেননি, বরং অভিযোগ এনেছেন ‘ক্রাইম এগেইনস্ট হিউম্যানিটি’ বা ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে, যার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ব্যাপক ও পদ্ধতিগত গণহত্যা।’’

চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের এই প্রতিবাদ ও বিবৃতিতে আইনের যথাযথ অর্থ না জেনে বা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত জ ল ইসল ম গণহত য অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে

সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।

শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।

পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।

শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাহরুখ খান: গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল