মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে অনৈতিক প্রস্তাবের অপবাদ দিয়ে উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক এক বৃদ্ধকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃদ্ধকে মোটরসাইকেলে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীর ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যান শ্রমিক দল নেতা ও তাঁর সহযোগী। 

এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার ঘটনা তদন্তে মাঠে নামে পুলিশ। তদন্তের বিষয়ে জানতে পেরে অভিযুক্ত শ্রমিক দল নেতা রনি বেপারী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নিতে ভুক্তভোগী ইসমাইল খানকে (৭০) হুমকি দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। রনি টঙ্গিবাড়ীর ধীপুর ইউনিয়নের মৃত হায়দার আলী বেপারীর ছেলে।

থানা দেওয়া অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত রোববার উপজেলার ধীপুর ইউনিয়নের এক গৃহবধূ ইসমাইলের কাছে তিন হাজার টাকা ধার চান। তাঁকে টাকা ধার না দেওয়ায় তিনি স্থানীয় বাসিন্দা জুবায়ের ও শ্রমিক দল নেতা রনির কাছে অভিযোগ করেন ইসমাইল তাঁকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছেন। এতে তারা ইসমাইলকে মারধর করেন। এ সময় ইসমাইলকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে প্রতিবেশী আলমগীর ও দিলা মিয়াকেও মারধর করেন তারা। মারধরের পর ইসমাইলকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীর ধাওয়ায় রনি ও জুবায়ের পালিয়ে যান। পরে এলাকাবাসী ইসমাইলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। 

আহত ইসমাইল খান বলেন, ওই গৃহবধূ প্রায়ই তাদের বাড়িতে এসে সবজি নিয়ে যেতেন। কখনও টাকা দিতেন, কখনও দিতেন না। গত রোববার তাঁর কাছে তিন হাজার টাকা ধার চাইলে তিনি টাকা না দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রস্তাবের অপবাদ দেন এবং তাঁর আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে তাঁকে মারধর করান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রনি বেপারী বলেন, এক নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার কথা শুনে এলাকার ছেলেপেলে ইসমাইলকে মারধর করেছে। তিনি মারধর করেননি।

টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মহিদুল ইসলাম বলেন, মারধরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

পেরুর প্রেসিডেন্ট নিজের বেতন দ্বিগুণ করায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ

পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে নিজের মাসিক বেতন দ্বিগুণ বাড়িয়ে প্রায় ১০ হাজার ডলার (প্রায় ১২ লাখ ২৬ হাজার টাকা) করায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, এই অর্থ দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যয় করাই ছিল অধিক যুক্তিযুক্ত।

স্থানীয় সময় গত বুধবার রাতে পেরুর অর্থমন্ত্রী জানান, প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের নতুন বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৬৮ সোলেস (প্রায় ১০ হাজার ৬৭ ডলার), যা দেশটির ন্যূনতম মজুরির প্রায় ৩০ গুণ।

প্রেসিডেন্টের আগের বেতন ছিল ১৫ হাজার ৬০০ সোলেস (প্রায় ৪ হাজার ৪০০ ডলার), যা ২০০৬ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট অ্যালেন গার্সিয়া নির্ধারণ করেছিলেন। এর আগে প্রেসিডেন্টের বেতন ছিল ৪২ হাজার সোলেস।

সরকার বলেছে, লাতিন আমেরিকার ১২টি দেশের মধ্যে প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের আগের বেতন ছিল ১১তম স্থানে, যা শুধু বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি। রয়টার্স সরকারের এ দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। তবে গত বছর রিও টাইমসের এক প্রতিবেদনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর প্রেসিডেন্টদের বেতন ৩ হাজার ডলার থেকে শুরু করে ২২ হাজার ডলার বলে উল্লেখ করা হয়।

এই সিদ্ধান্তকে ‘একেবারে রসিকতা’ বলে মন্তব্য করেন রাজধানী লিমায় একটি পত্রিকার স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পেনশনভোগী বাসিন্দা রোলান্দো ফনসেকা। তিনি বলেন, ‘পেরুজুড়ে চরম দারিদ্র্য বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের উচিত সবার সামনে ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।’

বলুয়ার্তের জনপ্রিয়তা বর্তমানে তলানিতে নেমে এসেছে। সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুযায়ী, তাঁর সমর্থন মাত্র ২ থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তাঁর পূর্বসূরি পেদ্রো কাস্তিয়ো কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করায় তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বলুয়ার্তে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে শুরু করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে তদন্ত হয়েছে। তবে ৬৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিক সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পেরুর দারিদ্র্যের হার এখনো প্রায় ৩০ শতাংশের কাছাকাছি, যা করোনা মহামারির সময় বেড়ে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও জীবনমানে পরিবর্তন আসেনি বলেই মনে করছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির সাধারণ মানুষ।

প্রসঙ্গত, পেরু ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয়জন প্রেসিডেন্ট পেয়েছে, যাঁদের মধ্যে তিনজনই এখন কারাগারে। প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের জুলাইয়ে। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ