চেয়ারে এক পা তুলে বেত হাতে ক্রমাগত শিশু শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে চলেছেন মাদ্রাসার এক শিক্ষক। তিনি শিশুটিকে পেটাতে পেটাতেই কান ধরে ওঠবস করতে বলেন, কিন্তু তাতেও নিস্তার মেলেনি। যখন শিশুটি কান ধরে ওঠবস করছিল, তখনো তিনি তাকে পেটাচ্ছিলেন। পিটুনির এই দৃশ্য কেউ একজন ভিডিওতে ধারণ করে ছড়িয়ে দিয়েছে ফেসবুকে। আর তাতেই দেখা গেল এমন অমানবিক শিশু নির্যাতনের চিত্র।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিডিওটি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার আলীপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসার। শিশুটি সেখানে হেফজ বিভাগে পড়ে। বয়স মাত্র আট বছর। পিটুনির এই ভিডিও ছড়ানোর পর অনেকেই অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেছেন।

এর আগে, গত মঙ্গলবার জেলার আল মুঈন ইসলামী একাডেমি নামের একটি মাদ্রাসা থেকে সাত বছর বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই শিশুটিকে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ এনে তার পরিবার থানায় মামলা করেছে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত মাদ্রাসার শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

চেম্বারে ছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষক: স্থায়ী বহিষ্কার দাবিতে রাবিতে বিক্ষোভ

মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে আহত, শিক্ষক গ্রেপ্তার 

বৃহস্পতিবার ছড়িয়ে পড়া শিশু নির্যাতনের ভিডিওটি ছিল ৩৫ সেকেন্ডের। এর মধ্যে, প্রথম ২৩ সেকেন্ড পর্যন্ত শিশুটিকে মারতে দেখা যায় শিক্ষককে। এসময় ২১ বার বেত দিয়ে আঘাত করেছেন তিনি ওই শিশু শিক্ষার্থীর শরীরে।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষক মাদ্রাসায় আসছেন না। তার মুঠোফোনও বন্ধ। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। 

মাদ্রাসার আশপাশের বাসিন্দা, থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, ঘটনাটি গত সোমবারের। লেখাপড়ায় অমনোযোগীর অভিযোগে শিক্ষক ওই শিশুটিকে অমানবিকভাবে পিটিয়েছেন।

মারধরের এই ভিডিও নজরে এসেছে বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.

আব্দুল মোন্নাফ। তিনি বলেন, ‘‘ভিডিওতে যেভাবে বেত্রাঘাত করতে দেখেছি, তা অমানবিক। ওই শিক্ষক চরম অন্যায় করেছেন। এই বিষয়ে খোঁজখবর নিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা মিলেছে। গোয়েন্দা পুলিশও (ডিবি) বিষয়টি তদন্ত করছে। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ঢাকা/লিটন/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নোবিপ্রবির আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা স্থায়ী বহিষ্কার 

আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান ভূঁইয়াকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অশ্লীল ও শিষ্টাচার বহির্ভূত মন্তব্য করায় স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আরো পড়ুন:

জুলাই বিরোধিতা: ইবির ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’

আ.লীগে যোগ দেওয়া মুবিনকে আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার 

সোমবার (৩ নভেম্বর) নোবিপ্রবির রেজিষ্টার (ভারপ্রাপ্ত) মো. তামজীদ হোসাইন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের  রিজেন্ট বোর্ডের ৬৭তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  

নোটিশে বলা হয়েছে, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত বিদেশে গমন করেন, যা সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল ) বিধিমালা ২০১৮ এর ধারা ২(চ) অনুযায়ী ‘পলায়ন’ ।

এছাড়া একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়েও রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশ করায় ‘নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ,২০০১’ এর ধারা ৪৭(৫) এর স্পষ্ট লঙ্ঘন। 

নোটিশে আরো বলা হয়েছে, গত ২৮ মে  আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলে সেটির জবাব যথাযথ হয়নি। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি আপনাকে পুনরায় ৭ জুলাই বিজ্ঞ আইনজীবীর মতামত এবং ৩১ জুলাই প্রেরিত নোটিশের জবাব না দেয়ায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর নোবিপ্রবি রিজেন্ট বোর্ডের ৬৭ তম সভার আলোচ্যসূচি-১৮ এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০১ এর ৪৭(৮) ধারা অনুযায়ী এবং সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল ) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও (গ) অনুযায়ী নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর সহকারী পরিচালক (সামরিক বরখাস্ত) পদ থেকে চূড়ান্ত বা স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো লেনদেন থাকলে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও বিধি অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতির বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে থাকেন এই কর্মকর্তা।

ঢাকা/শফিউল্লাহ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ