বন্দরে বৃদ্ধ দাদন হত্যার ঘটনায় মামলা, জামাতা গ্রেপ্তার
Published: 21st, May 2025 GMT
বন্দরে পারিবারিক কলহের জের ধরে বৃদ্ধ দাদন আহাম্মেদ নাছির(৬৫) হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী রিনা বেগম ওরফে রমিজা বেগম বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে পাষন্ড সৎ মেয়ে ও জামাতাকে আসামি করে বন্দর থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ ধৃত ঘাতক জামাতা চঞ্চল (৫৫) কে বুধবার (২১ মে) দুপুরে ১৬৪ ধারা জবানবন্দী প্রদানের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছে। গ্রেপ্তারকৃত চঞ্চল সুদূর সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার রামঘাতি এলাকার মৃত শাকিলাল মিয়ার ছেলে।
বর্তমানে সে বন্দর রেল লাইন কলাবাগ খালপাড় এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করে আসছে। এর আগে গত মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ১০টায় বন্দর রেললাইন কলাবাগ খালপাড় এলাকায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী রিনা বেগম ওরফে রমিজা জানান,প্রথম সংসারের মেয়ে ও জামাতা পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার সংসারের মেয়ে ঝিনুক আক্তারের সঙ্গে ঝগড়া ও মনমানল্য চলছিল।
এ ধারাবাহিকতায় গত সোমবার দুপুরে মেয়ে ঝিনুক আক্তার সৎ মেয়ে আনোয়ারা বেগমের বাসার সামনে দিয়ে নিজ বাসায় আসার পথে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা অবস্থায় থুথু ফালায়।
পরবর্তীতে বসত বাড়িতে এসে থুথু ফালানোর বিষয়কে কেন্দ্র করে পরিবারের লোকজনদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আনোয়ারা বেগম।
দাদন আহাম্মেদ নাছির মেয়েকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করে। এসময় বাবাকে সুযোগমতো পেলে প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে।
গত মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে প্রতিদিনের ন্যায় বন্দর রেল লাইন কলাবাগ খালপাড় মেয়ে আনোয়ারার বসত বাড়ির সামনে দিয়ে কাজে হোশিয়ারীতে যাচ্ছিলাম। এসময় আমাকে পথরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
তাকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করে প্রথমে আমাকে এলোপাতারী ভাবে কিল ঘুষি ও লাথি মারিয়া শরীরের বিভিন্নস্থানে নিলাফুলা জখম করে মেয়ে ও জামাতা।
এ মুহুর্তে স্বামী দাদন অটো রিক্সা নিয়ে হাজির হয়। রিক্সাতে উঠা মাত্রই মেয়ের জামাতা চঞ্চল মিয়া শশুরের দাড়িতে টেনে ধরে বুকের মধ্যে এলোপাতারী কিল ঘুষিতে মাটিতে লুটে পড়ে।
পরে ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে আমার স্বামীকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর মা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ গ ল গ ল জ কর ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
‘আপনারা রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি হয়ে গেছেন?’
পটুয়াখালী বাউফল উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি এ এইচ এম শহীদুল হককে (এমরান হাসান সোহেল) জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বলেছেন, ‘‘আপনারা রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি হয়ে গেছেন? আমি আপনার ফোন ধরতে বাধ্য না।’’
বাউফল গার্লস স্কুলে দুর্নীতি দমন কমিশন পটুয়াখালী জেলা কার্যালয় ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, বাউফল উপজেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে স্কুল পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব চলাকালে গতকাল সোমবার (১৯ মে) দুপুরে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও বাউফল দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি সূত্রে জানা যায়, সোমবার ওই বিদ্যালয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে স্কুল পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে ইউএনওকে আমন্ত্রণ জানাতে গত বৃহস্পতিবার, শনিবার ও রবিবার তিন দফায় তার কার্যালয়ে যান সাংবাদিক সোহেলসহ উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা।
তবে তাকে না পেয়ে তিন দফাই তারা ফেরত আসেন। এছাড়া প্রতিবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। রবিবার সন্ধ্যায় ফোন করলেও ইউএনও ফোন কেটে দেন। শেষ পর্যন্ত সোমবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম সরাসরি ইউএনওকে আমন্ত্রণ জানানোর পর তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। সেখানেই ইউএনও ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিক সোহেলকে জেলে পাঠানোর হুমকি দেন।
বাউফল উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপিত ও সাংবাদিক সোহেল বলেন, “সোমবার দুপুরে বিতর্ক প্রতিযোগিতার স্থানে এসে ইউএনও আমিনুল ইসলাম আয়োজক কমিটির সভাপতির কাছে কৈফিয়ত চান, কেন তাকে পূর্বে অবহিত করা হয়নি। তাঁর প্রশ্নের জবাবে আমি বলি, আপনাকে একাধিকবার কার্যালয়ে গিয়ে পাইনি। এমনকি আপনাকে তিনদিন বিভিন্ন সময় ফোন করেছি আপনি রিসিভ করেননি। এতে হঠাৎ করে ইউএনও উত্তেজিত হয়ে যান।”
এসময় ইউএনও আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, “আপনারা একটা অ্যারেজমেন্ট করতেছেন ইউএনও জানে না। আপনারা কিসের অ্যারেজমেন্ট করতেছেন? আশ্চর্য ব্যাপার! ইউএনওকে অবহিত না করে আপনাকে এ আয়োজন করার এখতিয়ার কে দিয়েছে?’’
এসময় ওই সাংবাদিক জবাব দেন, ‘‘আপনাকে আমন্ত্রণের জন্য আপনার কমপ্লেক্সে তিনদিন যাওয়া হয়েছে। কিন্তু আপনাকে পাইনি।’’
জবাবে ইউএনও বলেন, “উপজেলা কমপ্লেক্সে কে গেছে? কমপ্লেক্সে তো কাউয়া-বক থাকে। আপনি আমার বাংলোতে গেলেন না কেন? আমার বাংলো একটা অফিস।’’
এমন প্রশ্নে সাংবাদিক সোহেল বলেন, ‘‘আপনার বাংলোতে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় না।” এর জবাবে ইউএনও বলেন, ‘‘বাংলোতে যখন অ্যালাউ করব তখন ঢুকবেন। আপনারা প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি হয়ে মনে করছেন রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি হয়ে গেছেন? আমি আপনার ফোন ধরতে বাধ্য না। আপনি আপনার ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ফোন দিলে আমি ধরব কেন?’’
এসময় সোহেল বলেন, ‘‘আপনি ফোনই ধরলেন না, তাহলে ব্যক্তিগত স্বার্থ, নাকি রাষ্ট্রীয় কোনো কাজ বুঝলেন কীভাবে? আপনি একজন কৃষকের ফোনও ধরতে বাধ্য।’’
এরপর ইউএনও আমিনুল আবার বলেন, ‘‘আমি প্রজাতন্ত্রের এমন চাকর, মালিককেও শাস্তি দিতে পারি।’’
তখন সোহেল বলেন, ‘‘ক্ষমতা আছে, আপনি দেন শাস্তি।’’
এসময় ইউএনও খবরপত্রের সাংবাদিক এইচ বাবলুকে তার পিয়ন দিয়ে ভয়ভীতিও দেখান। ওই সাংবাদিককে দেখা করে ‘সরি’ বলতে চাপ প্রয়োগ করেন ইউএনওর গাড়ি চালক।
এ বিষয়ে জানতে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেনি।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, “আমার কাছে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য এখনও আসেনি। তথ্য পেলে মন্তব্য করতে পারব।”
ঢাকা/ইমরান/এস