হাসিনা পালানোর পর অন্য ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে: গয়েশ্বর
Published: 22nd, May 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আমরা এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চাই না। নির্বাচনের কথা বললে তাঁরা সময় লাগবে বলছেন। কত সময় লাগবে? জুন না ডিসেম্বর, পরিষ্কার করে বলুন।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে বিএনপির সদস্য ফরম বিতরণ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘১৭ বছরের ষড়যন্ত্র ছিল একপক্ষীয়। কিন্তু হাসিনা পালানোর পর এখন অন্য ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যেমন ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, তেমনটি এখন নেই। কেউ বলছে সংস্কার, কেউ বলছে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচিত সংসদ ছাড়া সংবিধান সংশোধন করা সম্ভব নয়। সংবিধানের জনবিরোধী ধারা নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে সংশোধন করতে হবে। দেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়, তারা কথা বলতে চায়। একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক অবাধ নির্বাচন সমস্যার সমাধান করতে পারবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি ১৫টি বছর দৌড়াতে দৌড়াতে এখানে না আনতে পারতাম, আপনাদের পক্ষে হাসিনাকে তাড়ানো সম্ভব হতো না। যদি ছদ্মবেশে আমার যুবক, আমার স্বেচ্ছাসেবক, আমার ছাত্রদল না ঢুকত।’ তিনি বলেন, ‘এই ছাত্রদের রক্ষা করার জন্য অভিভাবক হয়ে যাঁরা রাস্তায় নামলেন, সেই জনতা আমজনতা নয়, সেই জনতা রাজনীতিসচেতন জনতা।’
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলামের (অমিত) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম (মনা)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম (তুহিন)।
খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং পাঁচজন তরুণ সদস্যের ফরম পূরণের মধ্য দিয়ে খুলনা বিভাগীয় সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।
সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।
সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’
নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।