রামপাল-রূপপুর পারমাণবিককেন্দ্র বন্ধের রাস্তা খোঁজা উচিত: আনু মুহামম্মদ
Published: 24th, May 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যের প্রতীক। এটিসহ রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র বন্ধ করার রাস্তা খোঁজা উচিত। তাতে কিছু আর্থিক ক্ষতি হবে। অব্যাহত রাখলে ক্ষতি হবে আরও বেশি। রামপাল বাতিলের মধ্য দিয়ে পরিবর্তনের সূচনা ঘটাতে পারে সরকার। এই দুটি খাতসহ সব খাতে জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন তিনি।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘বিগত শাসনামলে জ্বালানি খাতে লুণ্ঠনের দায়’ নিয়ে ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাবির সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বিগত সরকারের সময়; অর্থাৎ গত ১৫ বছরে দেশে এত বেশি দুর্নীতি ও লুণ্ঠন হয়েছে, তা টাকার অংকে হিসাব করা খুবই দুরুহ। এই দুর্নীতি, লুণ্ঠন ও সম্পদ অব্যাহত রাখতেই দুর্নীতিবাজদের স্বৈরশাসন ও দমন-পীড়ন করে টিকে থাকতে হয়েছে। মানুষের ভোট ছাড়াই এবং নির্বাচন না দিয়ে জোর করে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে সেই সরকারের পতনের পর পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। সেই পরিবর্তনের জায়গাটা তৈরি করতে সজাগ ও সরব জনগোষ্ঠী থাকতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের বিজয় এনে দেওয়া তরুণদেরও বড় ভূমিকা নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বিগত শাসনামলে পতিত প্রধানমন্ত্রীর একক পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে হরিলুটের ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা আর্থিক খাতের মতো জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতেও অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল। লুটেরাদের সুযোগ করে দিতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিতর্কিত ইনডেমনিটি আইন পাস করেছিল, যার মেয়াদ দফায় দফায় বাড়িয়ে দুর্নীতির ক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়াও বিতরণ, সঞ্চালন ও মিটার কেনাকাটার নামে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। এতেও ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য মিলেছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ১০ দফা সুপারিশ করে তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সম্পাদিত সব চুক্তি পুণর্মূল্যায়ন করে জনসম্মুখে প্রকাশ এবং কোনো চুক্তি দেশের স্বার্থবিরোধী হলে, তা বাতিল করতে হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০১০ সালের ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে জ্বালানি খাতের মাফিয়াদের বিচার করতে হবে। জবাবদিহিমূলক ও স্বচ্ছ গণশুনানি নিশ্চিত করে নিরবিচ্ছিন্ন মানসম্পন্ন জ্বালানি সরবরাহ করতে হবে।
ছায়া সংসদে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
থামেনি বৃষ্টি, পাহাড় থেকে নামছেন না অনেকেই
কয়েক দিন ধরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। অতি বৃষ্টির কারণে কক্সবাজার জেলায় পাহাড় ধসের শঙ্কা বাড়ছে। তবুও নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন না অনেকেই। আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার পুরাতন পল্লানপাড়া গ্রামে পাহাড়ের পাদদেশ ঝুঁকি নিয়ে হাজারও মানুষকে বসবাস করতে দেখা গেছে। টানা বৃষ্টির পরও তারা সেখান থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে না যাওয়া বিপাকে পড়েছে প্রশাসন।
পুরাতন পল্লানপাড়ায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী আবদুল্লাহ বলেন, ‘বৃষ্টি আসলে ভয়ভীতির মধ্য থাকতে হয়। তবে চলে যাওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন মাইকিং করছে। কিন্তু আমাদের ঘরে ছাগল-হাস-মুরগি রয়েছে, সেগুলো নিয়ে চিন্তিত। তাই এখনও বাড়ি ছেড়ে যাইনি। যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে মনে এখানে থাকা আর সম্ভব হবে না।’
আবু ছৈয়দ বলেন, ‘প্রতিবছর বর্ষায় যাওয়া-আসা খুব কষ্ট। সরকারের পক্ষে থেকে যদি নিরাপদ একটা আশ্রয় দেয় তখন আর পাহাড়ে কেউ থাকবে না।’
জুহুরা বেগম বলেন, ‘পাহাড় ধসে বাড়িঘর ভেঙে গেছে। পরিবারের সাত সদস্য রয়েছে। গতকাল আশ্রয় কেন্দ্রে চলে এসেছি। বৃষ্টি কমলে এখান থেকে কোথায় ফিরব জানি না।’
টেকনাফ পুরাতন পল্লান পাড়ার সিপিপি লিডার কুলসুমা আক্তার বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে আমাদের সিপিপির টিম পাহাড়ে অবস্থানরত বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে আসতে বলছে। এখন পর্যন্ত দেড়শ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছে। অনেক মানুষ সেখানে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে।’
জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে যারা বসবাস করছেন, তাদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
২০১০ সালের ১৪ জুন সকাল থেকে রাতভর টানা বর্ষণে টেকনাফ উপজেলায় পাহাড় ধসে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া উখিয়ায় ২০১০ ও ১২ সালের টানা বর্ষণে পাহাড় ১৫ জন নিহত হয়েছিল।