আজকের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি
Published: 24th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন দ্রুত করা, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার—এই তিন দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা–কর্মীরা।
আজ শনিবার বেলা আড়াইটাই বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা-কর্মীরা মধুর ক্যানটিনের সামনে জড়ো হয়ে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কলাভবন, হলপাড়া প্রদক্ষিণ করে সিনেট ভবনের সামনে এসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
এ সময় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আবদুল কাদের আজকের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে সময় বেঁধে দেন। তিনি বলেন, আর কোনো টালবাহানা নয়। আজকের দিনের মধ্যে ডাকসুর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করতে হবে।
উপাচার্য ও প্রক্টরের উদ্দেশে আবদুল কাদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসে শিক্ষক, কর্মকর্তা নির্বাচন হতে পারে, কিন্তু ডাকসু নির্বাচন হতে পারে না। যদি আপনারা নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত ও ডাকসু নির্বাচন না দিতে পারেন, তাহলে আপনারা এই আসনের যোগ্য নন।’ এ সময় তিনি তাঁদের তিন দফা দাবি তুলে ধরেন।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির বলেন, একটি শ্রেণি বর্তমান সময়ে পুলিশ ও প্রশাসনের নির্লিপ্ততার দোহাই দিয়ে ডাকসু নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি করা বিশৃঙ্খলার নিন্দা জানিয়ে তাহমিদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসন পুরোপুরি ব্যর্থ। এই ব্যর্থতার দায় ভিসি–প্রক্টরের ওপর দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে, আমরা এর নিন্দা জানাই।’
তাহমিদ দাবি করেন, ডাকসু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, তা পিছিয়ে দিতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য সংগঠক হাসিব আল ইসলাম বলেন, ‘এই ক্যাম্পাস এখনো নিরাপদ নয়। মাসকাসক্ত, ভবঘুরেদের অবাধ বিচরণের কারণে নারীরা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। আজ ১১ দিন হওয়ার পরও কোনো প্রকৃত আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। আবার একটা গোষ্ঠীকে দেখতে পাই সব সময় দলীয় স্বার্থে ডাকসুর বিরোধিতা করছে। আমরা চাই, দ্রুততম সময়ের ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিল ঘোষণা করা হোক।’
অবস্থান কর্মসূচিতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা–কর্মীরা ‘এক দুই তিন চার, ডাকসু আমার অধিকার’, ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘সাম্য ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘উই ওয়ান্ট উই ওয়ান্ট, ডাকসু ডাকসু’সহ নানা স্লোগান দেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’