জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ৫ আগস্ট আমাদের লড়াই-সংগ্রাম শেষ হয়েছে। কিন্তু একটা পক্ষ সংস্কারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, ষড়যন্ত্র করছে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ছোট ছোট মতপার্থক্য দূরে রেখে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক এলাকায় দলের এক পথসভায় হাসনাত আবদুল্লাহ এ কথাগুলো বলেন। জাতীয় নাগরিক পার্টির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এই পথসভার আয়োজন করে।

পথসভায় হাসনাত বলেন, ‘সরকারকে বিচার কার্যক্রম, সংস্কার কার্যক্রম ও নির্বাচনী রোডম্যাপ সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করতে হবে। আমরা মুজিববাদী সংবিধান চাই না। এটি সংস্কার করে অবিলম্বে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হয়, এমন সংবিধান বাস্তবায়ন চাই। সাম্য ও ন্যায্যতার বাংলাদেশ চাই, যেখানে নাগরিকের কাছে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা থাকবে।’

অসাম্প্রদায়িক নাম দিয়ে ধর্মহীনতার বাংলাদেশ পরিচালনার চেষ্টা করা হয়েছে বলে পথসভায় মন্তব্য করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই পরিবর্তিত বাংলাদেশ হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ। আর এখানে সবাই বসবাস করব।’

বাংলাদেশের প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে চান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর ওপর অনেকে বিরক্ত, কিন্তু পুলিশকে কারা ব্যবহার করেছে, সেটা নিয়ে কেউ কথা বলে না। পুলিশের প্রমোশন নিয়ে কেউ কথা বলে না, পুলিশের সংস্কার নিয়ে কেউ কথা বলে না। আমরা এমন একটা বাংলাদেশ গড়ব, যেখানে পুলিশকে কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। প্রশাসনকে জনতার কাতারে নেমে এসে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হবে।’

পথসভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মীর আরশাদুল হক, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মাহমুদা আলম, মো.

আতাউল্লাহ; সংগঠক আরমান হোসেন, আজিজুর রহমান ও কেন্দ্রীয় সদস্য জোবায়ের আলম প্রমুখ। পথসভা শেষে মইজ্জারটেক এলাকায় প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়।

দুপুর ১২টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ আনোয়ারা উপজেলার চাতরী চৌমুহনী বাজারে লিফলেট বিতরণ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন। তিনি এ সময় বলেন, নতুন বাংলাদেশে একসঙ্গে দুবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। কেউ একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হতে পারবেন না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পথসভ য়

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির

আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।

সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।

সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’

নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’

সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু
  • অদৃশ্য শক্তি ও ফ্যাসিষ্টরা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত খোরশেদ
  • নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির