একটি পক্ষ সংস্কারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, ষড়যন্ত্র করছে: হাসনাত আবদুল্লাহ
Published: 25th, May 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ৫ আগস্ট আমাদের লড়াই-সংগ্রাম শেষ হয়েছে। কিন্তু একটা পক্ষ সংস্কারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, ষড়যন্ত্র করছে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ছোট ছোট মতপার্থক্য দূরে রেখে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক এলাকায় দলের এক পথসভায় হাসনাত আবদুল্লাহ এ কথাগুলো বলেন। জাতীয় নাগরিক পার্টির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এই পথসভার আয়োজন করে।
পথসভায় হাসনাত বলেন, ‘সরকারকে বিচার কার্যক্রম, সংস্কার কার্যক্রম ও নির্বাচনী রোডম্যাপ সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করতে হবে। আমরা মুজিববাদী সংবিধান চাই না। এটি সংস্কার করে অবিলম্বে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হয়, এমন সংবিধান বাস্তবায়ন চাই। সাম্য ও ন্যায্যতার বাংলাদেশ চাই, যেখানে নাগরিকের কাছে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা থাকবে।’
অসাম্প্রদায়িক নাম দিয়ে ধর্মহীনতার বাংলাদেশ পরিচালনার চেষ্টা করা হয়েছে বলে পথসভায় মন্তব্য করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই পরিবর্তিত বাংলাদেশ হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ। আর এখানে সবাই বসবাস করব।’
বাংলাদেশের প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে চান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর ওপর অনেকে বিরক্ত, কিন্তু পুলিশকে কারা ব্যবহার করেছে, সেটা নিয়ে কেউ কথা বলে না। পুলিশের প্রমোশন নিয়ে কেউ কথা বলে না, পুলিশের সংস্কার নিয়ে কেউ কথা বলে না। আমরা এমন একটা বাংলাদেশ গড়ব, যেখানে পুলিশকে কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। প্রশাসনকে জনতার কাতারে নেমে এসে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হবে।’
পথসভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মীর আরশাদুল হক, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মাহমুদা আলম, মো.
দুপুর ১২টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ আনোয়ারা উপজেলার চাতরী চৌমুহনী বাজারে লিফলেট বিতরণ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন। তিনি এ সময় বলেন, নতুন বাংলাদেশে একসঙ্গে দুবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। কেউ একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হতে পারবেন না।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পথসভ য়
এছাড়াও পড়ুন:
হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে থেকে নির্বাচনে জিতলে তাকে মেনে নেব: গয়েশ্ব
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, শেখ হাসিনা যদি দিল্লিতে পালিয়ে থেকে নির্বাচন করে আর জনগণ তাকে ভোট দেয়, আমি তাকে মেনে নেব। কারণ, এটা জনগণের রায়।
আগামী জাতীয় নির্বাচন কবে হবে, ডিসেম্বর নাকি জুন মাসে, তা ক্লিয়ার করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে খুলনা প্রেস ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ দাবি জানান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
খুলনা বিভাগীয় বিএনপির উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কিছু কিছু পত্র-পত্রিকা, সুশীল বুদ্ধিজীবী ষড়যন্ত্র করে ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি করেছিল। এক-এগারোর কুশীলবরা এ সরকারের ঘাড়ে চেপে বসেছে এবং বিরাজনীতিকরণের চক্রান্ত করছে বলে আমার ধারণা। তারা সদ্য ভূমিষ্ঠ একটি দলকে গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু, বিএনপিকে ক্ষমতায় যেতে দেবে না বলে পণ করেছে।
তিনি দাবি করেন, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পাগল নয়। কিন্তু, ভোটের অধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সেনা সদরে সভা হয়েছে। সেনাপ্রধান কিছু আশঙ্কা প্রকাশ করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে বলেছেন। তিনি রাষ্ট্র দখল, সরকার দখল, ক্ষমতা দখলের কথা বলেন নাই। সেন্ট মার্টিন, ট্রানজিট, মানবিক করিডোর ইত্যাদি সেনসেটিভ ইস্যুতে নির্বাচিত সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে জানিয়েছেন। রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার সংসদের মাধ্যমে হতে পারে। হাসিনা ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল, তখন তো সেনাবাহিনীকে এভাবে কথা বলতে হয় নাই।
প্রবীণ এ রাজনীতিক বলেন, আগে একরকম ষড়যন্ত্র ছিল, এখন ষড়যন্ত্রের রূপ ভিন্ন রকম। কিন্তু, ষড়যন্ত্র থামে নাই। ৫ আগস্টের আগে আমরা একত্রিত হয়েছিলাম। কিন্তু, এখন মতামত ভিন্ন। আমরা আগে জাতীয় নির্বাচন চাই, কেউ চায় আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কিন্তু, নির্বাচন হোক, এটাই আমাদের দাবি।
জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, তারা ট্রাভেল এজেন্সি খুলে মানুষকে বেহেশতের টিকিট দিচ্ছে। কিন্তু, নিজেরা বেহেশতে যেতে পারবে কি না সন্দেহ।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন—বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা, বাগেরহাট জেলার আহ্বায়ক আকরাম হোসেন তালিম ও সদস্য সচিব মোজাফফর আলম, সাতক্ষীরা জেলার আহ্বায়ক রহমত উল্লাহ পলাশ ও সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু, যশোর জেলার সভাপতি সাবিরুল হক সাবু ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, নড়াইল জেলার সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলার আহ্বায়ক এম এ মজিদ, কুষ্টিয়া জেলার সদস্য সচিব জাকির হোসেন সরকার, মেহেরপুর জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মাগুরার আহ্বায়ক আলী আহমেদ, সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন, খুলনা জেলার আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু প্রমুখ।
পাঁচ তরুণের সদস্য ফরম পূরণের মধ্যে দিয়ে খুলনা বিভাগীয় সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক