পুঁজিবাজার খুব দ্রুত নতুন উচ্চতায় উঠবে : প্রেস সচিব
Published: 25th, May 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘‘যদিও সার্বিক অর্থনীতির অবস্থা খুব ভালো হয়, এখানে যদি ডিপ রিফর্ম হয়, আশা করা যায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজার একটা নতুন উচ্চতায় উঠবে খুব দ্রুত। এছাড়া এফডিআই যদি ঠিক করতে পারি, আর সামষ্টিক অর্থনীতি ঠিক থাকে, তাহলে আমরা মনে করছি যে এটার প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়বে। পুঁজিবাজার গ্রো করতে বাধ্য।’’
রবিবার (২৫ মে) পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।
শফিকুল আলম বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি একটা ব্রডার ইকোনমিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যেখানে আমাদের বাংলাদেশের ইকোনমি টেক অফ করে। ইকোনমির গ্রোথ যদি টেক অফ করে তাহলে এটার ইমপ্যাক্ট অটোমেটিক্যালি পুঁজিবাজারে পড়বে।’’
তিনি বলেন, ‘‘অতীতে যারাই পুঁজিবাজারের সংস্কারে দায়িত্ব নিয়েছেন, তারাই বিভিন্ন গোষ্ঠীর তাবেদারি করেছে। একটা বড় বিষয় হচ্ছে যে, ঐতিহাসিকভাবে বিএসইসিতে বা বাংলাদেশের ক্যাপিটাল মার্কেটের যে রিফর্মগুলো যারা করেছেন, তারা সবাই গোষ্ঠী স্বার্থের দিকে তাকিয়েছিলেন। এই গোষ্ঠীটা একটা পারপাস সার্ভ করছে, ওই গোষ্ঠীর প্রতিপক্ষ এসে আরেকটা পারপাস সার্ভ করেছে। ফলে দেখা গেছে যে, যারা বড় বড় প্লেয়ার, তারা সবসময় বেনিফিটেড হয়েছেন। জেনারেল, যারা খুব ছোট ট্রেডার, যারা সেভারস, বলা যায় শেয়ার মার্কেটে শেয়ার কিনে সেভিং করছেন, তারা সবসময় বেশিরভাগ সময় বেনিফিটেড হন নাই, বরং চিটেড হয়েছেন। ম্যানিপুলেশনের শিকার হয়েছেন।’’
পুঁজিবাজারে ছন্দময় প্রক্রিয়ায় কারসাজি ঘটানো হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, ‘‘ম্যানিপুলেশনটা খুবই ওয়েল অরকেস্টেড ওয়েতে এই গোষ্ঠী, কিছু কিছু গোষ্ঠী, যারা ভেস্টেড ইন্টারেস্ট গ্রুপ, এই কাজগুলো করেছে। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে হিস্টোরিক্যালি কি কোনো সরকার ঠিকভাবে কোনো অ্যাকশন নিয়েছে?’’
পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘ওই মিটিংয়ে এই ধরনের কথা, মানে এই ডিসকাশনটা খুবই জোরালোভাবে এসেছে যে, আসলে আমরা কেন ব্যবস্থা নিতে পারছি না। এটার কারণ হচ্ছে, পুরো শেয়ার মার্কেটটা হয়ে গেছে ডাকাতদের আড্ডা। পুঁজিবাজারে এই ডাকাত গেলে আরেকটা ডাকাত আসতেছে।’’
শফিকুল আলম বলেন, ‘‘পুঁজিবাজার সংস্কারের জন্য আপনি যাকে নিয়ে আসতেছেন, সে আরেকটা ডাকাত। তো এই জায়গাতে রিফর্মের জায়গা প্রফেসর ইউনূস বলছেন, এখানে খুব স্ট্রং এবং খুব গভীর রিফর্ম করতে হবে। এই রিফর্মটা যে করবে, তারা হচ্ছে এই গোষ্ঠী স্বার্থের অনেক দূরের লোক। তারাই এসে করবে। তারা নির্মহভাবে রিফর্ম করবে। পুরো বিশ্বেই শেয়ার মার্কেটের খুব গভীর রিফর্ম হয়। ভালো জায়গায় যায়। কিন্তু তো বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে যে, যারা রিফর্ম করতে চান, তারা আসলে আরেকটা ধান্দাবাজ গ্রুপ।’’
তিনি যোগ করেন, ‘‘এই জন্য প্রফেসর ইউনূস গত মিটিংয়ে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন যে, সেট অফ ফরেন এক্সপার্ট, যাতে শেয়ার মার্কেট কীভাবে গ্লোবালি রিফর্ম করা যায়, গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডে আনা যায়, সেটাই যেন খুব দ্রুত হয়, তাদেরকে নিয়ে আসা হয়। এটার জন্য একটা তিন মাসের টাইমলাইন দেওয়া হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে তারা এসে শেয়ার মার্কেটের কী কী করণীয়, সেটা তারা বলবেন এবং সে অনুযায়ী খুব দ্রুত অ্যাকশন নেওয়া হবে।’’
বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কোনো গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি থাকবে না উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, ‘‘কোনো গোষ্ঠী যেন মনে না করেন যে, এখান থেকে আমি আমার মতো করে টাকা বানাব। বছরের পর বছর হয়েছে, আমরা দেখেছি, আমাদের আশেপাশে যারাই একটু শেয়ার মার্কেটে ইনফ্লুয়েনশিয়াল পিপলের আশেপাশে ছিলেন, তারা সবাই কোটিপতি হয়ে গেছেন। সেই জায়গাটা যাতে না হয়, অর্ডিনারি শেয়ারহোল্ডারের জন্য ইন্টারেস্টটা প্রটেক্ট হয়। এই জায়গাটা প্রফেসর ইউনুস বারবার এটা এমফাসিস দিয়েছেন।’’
ব্যাংকিং খাতকে গহ্বর থেকে টেনে তোলা হচ্ছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থা একদম দুর্বল ছিল। স্যার (ড.
তিনি বলেন, ‘‘দুই সপ্তাহ হলো কারেন্সি ফ্লোট করা হয়েছে। কিন্তু টাকার অবমূল্যায়ন হয়নি। এটা নির্দেশ করে যে, সংস্কার ভালো সংকেত দিচ্ছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘পুরো ওয়ার্ল্ডের এখন ট্রেডের যে একটা প্রটেকশনিজম চলছে গ্লোবাল ট্রেডে, সেই জায়গায় আমরা একটা বেনিফিটের জায়গায় আছি। আমরা খুব দ্রুত এটা থেকে বেনিফিট পেতে পারি। কী রকম? যেমন ধরেন, আপনারা বড় বড় দেশ একে অপরের বিপরীতে ট্যারিফ ইম্পোজ করছে। এই ট্যারিফ ইম্পোজ করার কারণে যেই ফ্যাক্টরিগুলো হচ্ছে লো কস্ট ম্যানুফ্যাকচারিং ফ্যাক্টরি, তারা আসলে খুঁজছে যে, তারা কোন দেশে গেলে তাদের এই ধরনের ট্যারিফ ফেস করতে হবে না। কোন দেশে গেলে লেবারটা লো কস্টে করতে পারবে। তো বাংলাদেশের চেয়ে বেটার ডেস্টিনেশন পুরো বিশ্বে এখন নাই। তো সেই আলোকেই আমাদের চিফ এডভাইজার চাচ্ছিলেন বাংলাদেশকে একটা ম্যানুফ্যাকচারিং হাব তৈরি করা।’’
তিনি বলেন, ‘‘আরেকটা বিষয় হচ্ছে যে ইনফ্লেশনকে কমানো। এটা আমাদের একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা ইন্টারেস্ট রেটকে হাই করে করতে করতে এখন বোধহয় ১০ শতাংশের বেশি, ওটা করার পরে আমরা দেখছি যে, ইনফ্লেশন কমা শুরু হয়েছে। আমাদের আশা, যেটা আমাদের সেন্ট্রাল ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, এই বছরের শেষে মূল্যস্ফীতি ১ শতাংশেরে নিচে আনবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘এফডিআই আসা শুরু হয়েছে। জুনে আপনি দেখবেন যে, চায়না থেকে আসছেন একজন কমার্স মিনিস্টারের নেতৃত্ব ১৫০ জনের মতো চাইনিজ ইনভেস্টর। চাইনিজরা যদি বাংলাদেশে আসেন, আমরা যেই জব গ্রোথটা চাচ্ছি, এটা খুব দ্রুত হবে।’’
এনবিআর দুই ভাগ করাটা সরকারের অগ্রাধিকার ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ট্যাক্স কালেকশনটা সবসময় কম ছিল। এটার কারণ আমরা প্রচুর ট্যাক্স এক্সেমশন দিয়েছি এবং ট্যাক্স কালেকশনের যে সিস্টেমটা, খুব ইনিফিশিয়েন্ট ছিল। সরকার এই জায়গাটায় খুব ফোকাস দিয়েছেন। সেই আলোকেই কিন্তু এনবিআরকে দুভাগ করা হয়েছে। এটার ফলে যেটা হয়েছে যে আমরা মনে করি যে ট্যাক্স কালেকশন বাড়বে।’’
ঢাকা/এনটি/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
মাকে মারধর করায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর হাট বাঘাইরপাড়া এলাকায় মাকে মারধর করায় এক মাদকাসক্ত যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
বুধবার (৯ জুলাই) রাতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত মাহাবুবুল ইসলাম বাবু (২৮) বাঘাইরপাড়া গ্রামের শীষ মোহাম্মদের ছেলে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মতিউর রহমান জানিয়েছেন, মাহাবুবুল ইসলাম বাবু মাদক কেনার জন্য বুধবার সকালে তার মায়ের কাছে টাকা চায়। টাকা না পেয়ে মাকে মারধর করে সে। বাবুর ইটের আঘাতে আহত হন মা। এ ঘটনার পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাবু বাড়িতে ফিরলে তার স্বজন ও প্রতিবেশীরা শাসন করার উদ্দেশ্যে তাকে বেঁধে পেটায়। এতে ঘটনাস্থলেই বাবু মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
আরো পড়ুন:
স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, স্বামীকে পুলিশে সোপর্দ
মুরাদনগরে ৩ জনকে হত্যা: ৮ জন রিমান্ডে
এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি মতিউর রহমান।
ঢাকা/শিয়াম/রফিক