নিজ বিভাগের ছাত্রীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর দায়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) এক শিক্ষককে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

ওই শিক্ষক হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এইচএম মোস্তাফিজুর রহমান।

সোমবার (২৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তামজিদ হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫তম রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। 

আরো পড়ুন:

তিতুমীর কলেজে বৈষম্যবিরোধীসহ সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রদলের হামলা

রাবির ২ ইউনিটে ভর্তির বিভাগ পছন্দক্রম প্রক্রিয়া শুরু

অফিস আদেশে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগ, দাখিলকৃত প্রমাণাদি, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ এবং আইনানুগ মতামত প্রদান সংক্রান্ত কমিটির পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে অভিযোগটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

অভিযোগের জবাবও সন্তোষজনক না হওয়ায় ৬৫তম রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা বিধির আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শোকজ নোটিশে অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষক এইচএম মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে প্রতারণা করে অসদাচরণ করেছেন।

অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে নৈতিক স্খলন ঘটিয়েছেন। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে নিয়ে নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অবস্থিত শিক্ষক অ্যাপার্টমেন্ট ‘শঙ্খচিল’ এ অনৈতিক উদ্দেশ্যে অবস্থান করে অসদাচরণ এবং নৈতিক স্খলন ঘটিয়েছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষক এইচ.

এম. মোস্তাফিজুর রহমান নিজে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার দুইদিন পূর্বে (২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর) প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে নৈতিক স্খলন ঘটিয়েছেন।

গত বছরের ২৩ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অভিযোগত্রে ওই ছাত্রী বলেন, “২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ১৪ মার্চ পর্যন্ত দীর্ঘ তিনমাস তিনি (শিক্ষক) আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক জড়ানোর জন্য আমাকে মানসিক অত্যাচার করে। পরবর্তীতে আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না চাইলে ও সব জায়গা থেকে তাকে ব্লক দিলে তিনি (শিক্ষক) অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকতেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে কল দিয়ে তিনি বলতেন, আমাকে পেলে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন।”

তিনি বলেন, “পরে তিনি আমার মায়ের নম্বর জোগাড় করে ফোন দিয়ে বলেন, ‘পৃথিবীর সব সুখ আমি আপনার মেয়েকে দেব, কোনো স্বামী এই পৃথিবীতে দিতে পারবে কিনা আমি জানি না।’ তাও আমার মা নিষেধ করে দেন।”

অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থী আরো লেখেন, “২০২৩ সালের মার্চে শিক্ষক দেশে ফিরে এসে আমার আশপাশে থাকার আগ্রহ জানান, এবং একপর্যায়ে আমাকে ঢাকায় ডেকে নিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক চালিয়ে যান। কিন্তু ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রামে গিয়ে অন্য এক নারীকে বিয়ে করেন তিনি, যার সঙ্গে পূর্বে থেকেই সম্পর্ক ছিল।”

ঘটনার পর ৩০ অক্টোবর অভিযুক্ত শিক্ষককে সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং ৬ ফেব্রুয়ারি সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তদন্ত শেষে এখন স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ কর শ ক ষকক

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ