রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সাসাকাওয়ার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
Published: 28th, May 2025 GMT
জাপানে সফররত বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মানে দ্য নিপ্পন ফাউন্ডেশনের প্রধান ইয়োহেই সাসাকাওয়া বুধবার টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে এক নৈশভোজের আয়োজন করেন। এ সময় দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট, মিয়ানমারের উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বজুড়ে মানবিক সংকটে অনুদান ও সহায়তা দ্রুত হ্রাসের বিষয়ে আলোচনা করেন। প্রধান উপদেষ্টা প্রেস উইং এসব তথ্য জানিয়েছে।
ড.
নিপ্পন ফাউন্ডেশন এবং সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশনের প্রধান হিসেবে ইয়োহেই সাসাকাওয়া ১৫০ বারেরও বেশি বার মিয়ানমার সফর করেছেন এবং মিয়ানমার সরকার ও দেশটির ১০০টিরও বেশি জাতিগোষ্ঠী তাকে অত্যন্ত সম্মান করে।
ড. ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট সমাধান এবং বাংলাদেশে বসবাসরত প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে সাসাকাওয়ার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি মিয়ানমারের সব দিক থেকে আপনি গভীর শ্রদ্ধার পাত্র।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতি বছর বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় ৩৫ হাজার শিশু জন্মগ্রহণ করে এবং তারা কোনও ধরনের আশা ছাড়াই বেড়ে উঠছে।’
মাদকের চোরাচালান বেড়ে যাওয়ায় ক্যাম্পগুলোর নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য বিস্ফোরক ও বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আগেই আমাদের সাহায্য করুন।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের অবসান ঘটাতে হবে। এটি একটি ভালো মুহূর্ত। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।’
প্রধান উপদেষ্টা ইউএসএআইডি সহায়তা স্থগিতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত আইসিডিডিআর’বি’র জীবন রক্ষাকারী স্বাস্থ্যসেবা গবেষণার জন্য নিপ্পন ফাউন্ডেশনের সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা সাসাকাওয়াকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
নৈশভোজে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।