জুলাই আন্দোলনের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক আহমেদ। সরকারের চাওয়ায় ক্রীড়া পরিষদের কোটায় সরাসরি বিসিবি পরিচালক হন তিনি। পরে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পান। দায়িত্ব পালনের ৯ মাস না যেতেই সরকার বোর্ডে তাকে চাচ্ছে না। যে কারণে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন।

বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে ক্রীড়া উপদেষ্টার বাস ভবনে বৈঠক করেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। সেখানে বিসিবি সভাপতিকে পদত্যাগ করতে বলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। সরকারের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনা আছে বলে জানানো হয়েছে বর্তমান বোর্ড সভাপতিকে।

তবে সাবেক ক্রিকেটার, বিসিবির সাবেক নির্বাচক ও বর্তমান সভাপতি এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেননি বলেও জানা গেছে। সূত্র জানিয়েছে, তিনি ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কিছুটা সময় চেয়েছেন।

ফারুক আহমেদকে পদত্যাগ করতে বলার মধ্যেই খবর এসেছে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে বোর্ড সভাপতির দায়িত্ব দিতে চায় সরকার। বিষয়টিয়ে নিয়ে বুলবুল সমকালকে বলেছেন, তার সঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি কাজ করতে আগ্রহী।

আমিনুল ইসলাম বুলবুল সমকালকে বলেন, ‘ক্রীড়া উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আমাকে বলা হয়েছে। আমি বলেছি, কাজ করতে আগ্রহী। আইসিসি থেকেও সবুজ সংকেত দিয়েছে (বুলবুল আইসিসির এশিয়ান ক্রিকেটের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার)। তবে আমি নির্বাচনে দাঁড়াবো না। বিসিবিকে একটা জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিয়ে চলে যাবো।’

বিসিবির সভাপতি হওয়ার পর বারবার বিতর্কিত হয়েছেন ফারুক আহমেদ। বিপিএলে দেশি-বিদেশি ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফের পাওনা ঠিকঠাক শোধ করেনি ফ্র্যাঞ্জাইজি। যা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। বিপিএলে ফ্র্যাঞ্জাইজি বন্টন নিয়ে ফারুক আহমেদের পছন্দ-অপছন্দ গুরুত্ব পেয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল।

এরপর নিজের পছন্দ মতো ব্যাংকে বিসিবির এফডিআর স্থানান্তর করেছেন ফারুক আহমেদ, এমন অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধ। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দলের হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে ব্যক্তিগত তীক্ততার জেরে চাকরিচ্যুত করেছেন বলেও অভিযোগ আছে। এসব কারণে তাকে পদত্যাগ করতে বলে থাকতে পারেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে ফারুক আহমেদকে পদত্যাগ করতে বললেও পদত্যাগ করা না করার সিদ্ধান্ত নিতান্ত বোর্ড সভাপতির। কারণ কাগজে-কলমে তিনি নির্বাচিত বিসিবি সভাপতি। সরকারের তাই তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তাকে জোরপূর্বক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলে সেটা সরকারি হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। এতে করে আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট। ফারুক আহমেদ তাই পদত্যাগ না করলে ক্রীড়া উপদেষ্টা বা বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কিছু করার নেই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ র ক আহম দ য ব ও ক র ড় উপদ ষ ট পদত য গ করত ফ র ক আহম দ উপদ ষ ট র সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত নেতার অনুসারীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর রেলগেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

সেখানে বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রতিবাদ মিছিলও করেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষীপুর এলাকাতেও সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।

বিক্ষোভকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সোহরাব উদ্দিনকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার।

এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।

জানতে চাইলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হাসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণ করেছি।’

কুষ্টিয়ার অন্য তিনটি সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ