চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী হাজি তোবারাক আলী চৌধুরী (টিএসি) উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে জোরপূর্বক পদচ্যুত কান্তি লাল আচার্য একই প্রতিষ্ঠানে আবার যোগ দিয়েছেন। পদত্যাগের ৪২ দিন পর গতকাল বুধবার তিনি সেখানে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক পদে যোগদান করলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

এর আগে ১৬ এপ্রিল একদল লোক অনিয়মের অভিযোগ তুলে মিছিল নিয়ে বিদ্যালয়ে ঢুকে কান্তি লাল আচার্যকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ ছাড়তে বাধ্য করেন। এ সময় তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করারও অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর থেকে তিনি অসুস্থতাজনিত ছুটিতে ছিলেন।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৬ এপ্রিল বিএনপির নেতা-কর্মীরা কান্তি লাল আচার্যকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড এ বিষয়ে তদন্ত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দেন। এরপর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক না থাকায় জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে বর্তমানে মোহাম্মদ আলীকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মোহাম্মদ আলীকে দায়িত্ব দেওয়ায় জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বলেন, কান্তি লাল আচার্য আর দায়িত্ব নিতে চান না। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে দ্বিতীয় শিক্ষকও দায়িত্ব নিতে অপারগতা জানিয়েছেন। ফলে তৃতীয় জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে মোহাম্মদ আলীকে বাধ্য হয়ে দায়িত্ব দিতে হয়েছে।

কান্তি লাল আচার্য বলেন, জোরপূর্বক পদত্যাগ করানোর পর তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকেরা আরও কিছুদিন বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রতি ভালোবাসার কারণে তিনি আবার যোগদান করেছেন। এখন আর কোনো দায়িত্ব নিতে চান না। বাকি প্রায় দুই বছরের চাকরি জীবনটুকু সুস্থভাবে শেষ করতে চান। ওই শিক্ষক আরও বলেন, ১৬ এপ্রিল হামলাকারীদের বেশির ভাগই তাঁর নিজের ছাত্র ছিল। এ জন্য তিনি কারও ওপর অভিমান রাখতে চান না, সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস মোস্তফা আলম সরকার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সীতাকুণ্ডে যোগদানের পর থেকেই হাজী টিএসি উচ্চবিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে। বেশ কয়েকবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে দিয়েও কাজ হয়নি।

ইউএনও ফখরুল ইসলাম বলেন, কান্তি লাল আচার্যকে জোর করে পদত্যাগ করানোর ঘটনাটি তদন্তে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাঁকে চিঠি দিয়ে তদন্ত করতে বলেছিলেন। তদন্ত চলাকালে আরেকটি চিঠিতে ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। এ বিষয়ে তিনি আর তেমন কিছু জানেন না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পদত য গ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

শেরপুরে বেশি দামে সার বিক্রি: ২ ব্যবসায়ীকে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা

শেরপুরে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করায় দুই সার ব্যবসায়ীকে প্রায় সোয়া লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শেরপুর পৌর শহরের আখের মাহমুদ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় এক বিএডিসি সার ডিলারকে ১ লাখ টাকা ও লাইসেন্সবিহীন সার বিক্রি করায় আরেক ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

আরো পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে মহাসড়কে ১০০০ স্থাপনা উচ্ছেদ

ঝিনাইদহে ২৫০টি অবৈধ জাল জব্দ, বাঁধ উচ্ছেদ

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুইয়া আদালত পরিচালনা করেন। তিনি জরিমানার তথ্য জানান।  

ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুইয়া বলেন, ‘‘সার বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই অসাধু ব্যাবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। কৃষকের উপর জুলুম মেনে নেওয়া হবে না।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের বিভিন্ন সোর্স এ সব অসাধু ব্যবসায়ীদের খোঁজখবর রাখছেন। যার বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’’ জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।

অভিযানকালে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসলিমা খানম নীলু, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে কৃত্রিম সার সংকট দেখিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করছেন। বেশি দাম নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের আখের মাহমুদ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে বেশি দামে সার বিক্রির প্রমাণ পেয়ে বিএডিসি সার ডিলার মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন। একইসঙ্গে লাইসেন্সবিহীন সার বিক্রয় করায় একই বাজারের কীটনাশক বিক্রেতা শিশির এন্টারপ্রাইজকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

শেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসলিমা খানম নীলু বলেন, ‘‘আমন মৌসুসে সারের দাম ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষায় আমরা নিয়মিত অভিযান করছি। আমরা যেখানে অভিযোগ পাচ্ছি, সেখানে অভিযান পরিচালনা করছি। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রির সুযোগ নেই।’’

ঢাকা/তারিকুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাবনায় পুলিশ দেখে পালালেন শিকারিরা, উদ্ধার ৪৫টি ঘুঘু অবমুক্ত
  • শেরপুরে বেশি দামে সার বিক্রি: ২ ব্যবসায়ীকে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা