সাড়ে সাত বছর আগে ঢাকার কেরানীগঞ্জে মফিজুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান মুন্নি আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন মাকসুদা আক্তার ও তাঁর দেবর সালাউদ্দিন। পলাতক থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

রায়ের তথ্য অনুযায়ী, মাকসুদা কেরানীগঞ্জে এক ছেলে নিয়ে বাস করতেন। তাঁর স্বামী মালয়েশিয়া থাকতেন। মফিজুরও কেরানীগঞ্জে থাকতেন। তিনি স্বর্ণের ব্যবসার পাশাপাশি কবিরাজি করতেন। মাকসুদার একাধিকবার সন্তান মারা যায়। এ জন্য তিনি মফিজুরের শরণাপন্ন হন। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানতে পারেন মাকসুদার প্রবাসী স্বামী। তিনি মুঠোফোনে মফিজুরকে এই সম্পর্ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। এরপর মফিজুরের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন মাকসুদা। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে মাকসুদার সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখেন মফিজুর। এতে ক্ষুব্ধ হন মাকসুদা। তিনি বিষয়টি নিয়ে তাঁর দেবর সালাউদ্দিনের সঙ্গে পরামর্শ করেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর মফিজুরকে বাসায় দাওয়াত দেন মাকসুদা। বাসায় আসার পর খাবার ও চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন আসামিরা। খাওয়ার পর অচেতন হয়ে ঘুমাতে থাকেন মফিজুর। তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন মাকসুদা ও সালাউদ্দিন। তাঁরা লাশটি ১০ টুকরা করে একাধিক স্থানে ফেলে দেন।

এই ঘটনায় মফিজুরের ভাই বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি তদন্ত করে মাকসুদা ও সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। পরের বছরের ৩০ অক্টোবর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৯ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়। আজ রায় ঘোষণা করলেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ঢাকা জেলা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর খান মো.

জহিরুল ইসলাম।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

‎পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আরো পড়ুন:

সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা

‎গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি। 

এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

‎ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • পুলিশের ৯ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর