বান্ধবীকে নিয়ে কথা বলায় মেজাজ হারান এনতুলি
Published: 29th, May 2025 GMT
শেপো এনতুলির আচরণ ছিল মারমুখী। কথার লড়াই থেকে বাগ্বিতণ্ডা, চোখ রাঙানি এবং শারীরিকভাবে হেনস্তা করার মতো ঘটনা ঘটান তিনি। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং দলের অফ স্পিনার এনতুলি মাঠের শৃঙ্খলা ভাঙেন বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের পেসার রিপন মণ্ডলের হেলমেট ধরে টানাটানি করে।
ম্যাচটি টিভিতে সম্প্রচার হওয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিত সেই ঘটনার ভিডিও মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওটি দেখে এনতুলি ও দক্ষিণ আফ্রিকা দলের দিকে আঙুল তোলা স্বাভাবিক। কেউই হয়তো পেছনের ঘটনার খোঁজ নেবে না।
বাস্তবতা হলো, প্রোটিয়া স্পিনারের উত্তেজিত হওয়ার পেছনে একটি কারণ আছে। ম্যাচ অফিসিয়াল ও টিম ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লুজ বল করে ছয় খেয়ে নিজের ওপর হতাশা প্রকাশ করতে ইংরেজি বিশেষ শব্দ ব্যবহার করেন এনতুলি। ইংরেজিভাষী মানুষ অবলীলায় শব্দটির চর্চা করেন। রিপন তা বুঝতে না পেরে প্রতি-উত্তর দেন এনতুলির বান্ধবীকে জড়িয়ে। বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে রিপনের দিকে তেড়ে গিয়ে বিতণ্ডা ও হেলমেট ধরে টানাটানির ঘটনায় জড়ান এনতুলি।
বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের ইনিংসে ১০৫তম ওভারে বোলার ছিলেন এনতুলি। তাঁর করা প্রথম বলটিই লং অন দিয়ে মাঠের বাইরে আছড়ে ফেলেন রিপন। বাজে বল করায় বোলার হতাশা প্রকাশ করেন নিজের মতো করে। রিপন তখন নন স্ট্রাইক ব্যাটার মেহেদীর কাছাকাছি ছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন, বোলার তাঁকে গালি দিয়েছেন। এনতুলি এগিয়ে আসার পরও রিপন নিজের ভুল বুঝতে না পারায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে বলে ম্যাচ অফিসিয়ালদের একজন জানান।
এনতুলি আক্রমণাত্মক হওয়ায় রিপন দুই হাতে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। এ সময় প্রোটিয়া বোলার দু’বার রিপনের হেলমেট ধরে টেনে নিচে নামান। আম্পায়ার মুহাম্মদ কামরুজ্জামান এনতুলিকে জাপটে ধরে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে, পাশ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার অন্য দুই ক্রিকেটার রিপনের দিকে তেড়ে যান। ক্রিকেটার মিকা এল প্রিন্স আঙুল উঁচিয়ে শাসাতে থাকেন রিপনকে। তখন লেগ আম্পায়ার আরমো জ্যাকবস ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
ঘটনা সেখানেই শেষ হয়নি। তিন বল পরে ক্রিজ না ছাড়লেও রিপনের দিকে আচমকা বল ছুড়ে মারেন এনতুলি। ব্যাট দিয়ে বল থামাতে না পারলে বড় ধরনের আঘাত পেতেন স্বাগতিক ব্যাটার। ওই ঘটনার পর প্রোটিয়াদের হতাশা বাড়িয়ে দুটি চারের সঙ্গে একটি ছয় মারেন রিপন। এনতুলির বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলার চেষ্টা করলে স্টাম্পিং হন তিনি। ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৮১ বলে করেন ৪৩ রান। দলীয় স্কোর ৩৭১ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ ইমার্জিং।
এনতুলি কেন চটেছিলেন– জানতে চাওয়া হলে রিপন বলেন, ‘ওর বলে কেউ ছয় মারলেই খারাপ ব্যবহার করে। আগেও করেছে।’ এ ব্যাপারে ম্যাচ রেফারি সেলিম শাহেদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আম্পায়ারদের রিপোর্ট হাতে পেলে বিষয়টি ভালোভাবে জানা যাবে।’
তবে মাঠে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় দুই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হবে বলে জানান ম্যাচ রেফারি। তিনি বলেন, ‘এটি সিরিজের শেষ ম্যাচ হওয়ায় আমরা শাস্তি কার্যকর করতে পারছি না। তাই দুই দলের ক্রিকেট বোর্ডের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।’ দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং দলের সঙ্গে বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের খেলোয়াড়দের লড়াই ওয়ানডে সিরিজ থেকেই লেগে আছে। রাজশাহীতে দ্বিতীয় ৫০ ওভারের ম্যাচে আনদিলে সিমেলানে ও জিসান আলম বিবাদে জড়িয়ে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অল্প পরিসরে, স্বল্প খরচে, ১০ গল্প
‘আজন্ম সলজ্জ সাধ, একদিন আকাশে কিছু ফানুস ওড়াই। হঠাৎ আবিষ্কার করলাম আমরা এই কয়জন বেঁচে আছি জীবনে একটা ফিল্ম বানাব বলে…’ আমন্ত্রণপত্রের শুরুতে ঠিক এমনভাবেই লেখা ছিল। আমন্ত্রণটি ছিল ফ্রেন্ডলি নেইবারহুড ফিল্মমেকার্সের পক্ষ থেকে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় প্রদর্শিত হয় ১০ জন নির্মাতার ১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা। এই শহরের কিছু স্বপ্নবাজ তরুণ ৯টা–৫টার চাকরির চক্করে কিংবা নিজেদের আলসেমির জন্য সিনেমাটা ঠিক বানিয়ে উঠতে পারছিলেন না। অনেক দিনের এই চাপা পড়া ইচ্ছাটাকে হঠাৎ করেই হাওয়া দেওয়া শুরু করলেন তাঁরা। সাহস করে অফিস পালিয়ে তাঁরা নেমে গেলেন অল্প পরিসরে, স্বল্প খরচে গল্প বানানোর চ্যালেঞ্জে। এদিন ছিল সেই ১০ সিনেমার প্রদর্শনী। সিনেমাগুলো হলো—
১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ও পরিচালক
‘হুদাই মিস’, জাহিদুল হক অপু
সুযোগ আসে অপ্রত্যাশিতভাবে, ক্ষণিকের মরীচিকার মতো। যখন আসে, তখন তা বোঝার ক্ষমতা না থাকলে মুহূর্তেই তা হাতছাড়া হয়ে যায়। ‘হুদাই মিস’ এমনই এক গল্প বলে, যেখানে দুজন আগন্তুকের সাক্ষাৎ ও জীবনের অমূল্য সুযোগগুলো রাগ, তাড়াহুড়া কিংবা ভুল সিদ্ধান্তের কাছে হার মানে।
‘হামাংকুলাস’, ইবনে নুর রাকিব
সকাল থেকে ব্রেকিং নিউজ চলছে, কেন যেন আয়নাতে আর মানুষের প্রতিবিম্ব দেখা যাচ্ছে না। চোখে কাজল আঁকতে পারছে না একটা মেয়ে। কিন্তু এটাই একমাত্র রহস্য নয়! মেয়েটা কখনোই খেয়াল করে না, তার পেছন পেছন সারা শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে তার মতোই দেখতে আরেকটা মেয়ে। এই মেয়েটা কে? সে কী চায়?
‘সোলমেট’, আদেল ইমাম অনুপ
গল্পটি একদিকে লয়ালিটির প্রতীক, অন্যদিকে ক্ষমতার পর বদলে যাওয়া সম্পর্কের নির্মম বাস্তবতা তুলে ধরে। এটি বোঝায়, যাকে একসময় সবচেয়ে প্রয়োজনীয় মনে হতো, সাফল্য পাওয়ার পর তাকেই ফেলে দেওয়া হয়। এটি রাজনৈতিক বা সামাজিক ব্যঙ্গ হিসেবে পড়া যেতে পারে, যেখানে ক্ষমতা পাওয়ার পর পুরোনো সঙ্গীদের ভুলে যাওয়ার প্রবণতা তুলে ধরা হয়েছে।