মেয়েটির স্বামী আছে জানার পর ক্ষিপ্ত হয়ে জোড়া খুন করেন ‘প্রেমিক’
Published: 29th, May 2025 GMT
রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকায় এক দম্পতিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার গাউস মিয়া আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
পুলিশের পল্লবী অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সালেহ মুহম্মদ জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, পল্লবীতে দম্পতি খুনের ঘটনায় গাউস মিয়া দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ময়নাতদন্ত শেষে দুজনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গাউস মিয়ার জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, খুন হওয়া দোলনা আক্তার ওরফে দোলার সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দোলনা আক্তারের বিয়ে হয়েছে, সেটি তিনি জানতেন না। গতকাল বুধবার সকালে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। বিষয়টি তিনি মেনে নিতে পারেননি। এরপর তিনি দোলনা আক্তার ও তাঁর স্বামী নাজমুল হাসান পাপ্পুকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
পুলিশ জানায়, দোলনা আক্তার ও তাঁর স্বামী নাজমুল হাসানের বাড়ি বরগুনায়। কয়েক বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। দোলনা আক্তার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলএমে পড়ছিলেন। এ কারণে তিনি মিরপুর-১১ নম্বরে একটি ভবনের পাঁচতলায় ‘সাবলেট’ থাকতেন। তাঁর স্বামী নাজমুল বরগুনায় একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সেখান থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়া করতেন। দুই দিন আগে তিনি বরগুনা থেকে ঢাকায় আসেন।
জবানবন্দিতে গাউস মিয়া বলেছেন, তাঁর বাড়ি গোপালগঞ্জে। তিনি সৌদিপ্রবাসী। ফেসবুকে দোলনা আক্তারের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তারপর তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত জানুয়ারিতে তিনি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে মিরপুরে একটি বাসা নেন। তার পর থেকে দোলনা আক্তারের সঙ্গে নিয়মিত দেখা হতো। তবে দোলনা আক্তার বিবাহিত, সেটি তিনি জানতেন না। গতকাল সকালে দোলনা আক্তার ও তাঁর স্বামী নাজমুল হাসানকে একসঙ্গে দেখে তাঁদের অনুসরণ করেন গাউস মিয়া।
তাঁদের দুজনকে একসঙ্গে বাসায় উঠতেও দেখেন তিনি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, দোলনা আক্তার বিবাহিত। সেটি জানার পরই বাসায় গিয়ে দোলনা আক্তার ও তাঁর স্বামী নাজমুল হাসানকে কুপিয়ে হত্যা করেন।
আরও পড়ুনপল্লবীতে স্বামী-স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, সৌদিপ্রবাসী যুবক গ্রেপ্তার২৮ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শন করলেন দুই বিদেশি পর্যটক
‘এটি খুবই আনন্দায়ক খবর যে এই স্কুলে আদিবাসী ও বাঙালি শিক্ষার্থীরা একসঙ্গেই বসে শান্তিপূর্ণভাবে পাঠ গ্রহণ করে। যেখানে ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরাও একই আসনে বসে পাঠ নিচ্ছে। সম্প্রীতি-ভালোবাসার এ দৃশ্য আমাদের বিমোহিত করেছে।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শনে এসে জার্মান নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক মাথিয়াস রিচার্ড এ মন্তব্য করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত রসায়নবিদ সিলভিয়া মাউরিজিও। ‘দেশ ঘুরি’ নামের একটি ট্যুরিস্ট সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা এ বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন।
বেলা সাড়ে ১১টায় তাঁরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলে ফুলের তোড়া ও মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ ঘুরিয়ে দেখান প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর। তাঁরা শ্রেণিকক্ষগুলোতে গিয়ে পাঠ উপস্থাপন দেখেন। কথা বলেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। শিক্ষার্থীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁদের সঙ্গে ভাববিনিময় করে।
এ সময় দুই পর্যটক জানতে পারেন, এ বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বাঙালি শিশুরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে। ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ না করে একবেঞ্চে বসে পাঠ গ্রহণ করে। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁরা খুবই খুশি হন।
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুমা খাতুন দুজনকে একটি গান গেয়ে শোনায়। বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সামনে ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান প্রদর্শন করে। সিলভিয়াও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নাচে অংশ নেন। সৃষ্টি হয় একটি আনন্দদায়ক পরিবেশের। এ সময় বাঙালি ও কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতি-ভালোবাসা ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ দেখে খুশি হন।
বিদেশি দুই পর্যটকের সামনে আলোর স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা