একেকজন নেতার মনোযোগ ছিল আখের গুছিয়ে নেওয়ার: সারজিস আলম
Published: 30th, May 2025 GMT
রাজধানী থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেনের সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ৮ থেকে ১০ বছর লেগে গেলেও এখনো কাজ শেষ হয়নি উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘এই একটা উদাহরণই উত্তরাঞ্চলের মানুষের অবস্থার কথা বলে দেয়।’
আজ শুক্রবার দুপুরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চারমাথা মোড়ে আয়োজিত এক পথসভায় এ কথাগুলো বলেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘এর আগে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বড় বড় দলের বড় বড় মার্কার রাজনৈতিক নেতারা ছিলেন। একেকজন নেতাকে আমরা দেখেছি—যতটা না এলাকার উন্নয়নে মনোযোগ ছিল, তার চেয়ে বেশি মনোযোগ ছিল নিজেদের মধ্যে কামড়াকামড়ি করে নিজের আখের গুছিয়ে নেওয়ায়, নিজের ক্রেডিট নেওয়ায়।’
গোবিন্দগঞ্জ চিনিকলের জমিতে ইপিজেড স্থাপন প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, ‘গোবিন্দগঞ্জ ও গাইবান্ধার মানুষের একটি দাবি হচ্ছে ইপিজেড নির্মাণ। ইপিজেড একটি জেলা ও উপজেলার মানুষের ভাগ্য বদলে দিতে পারে। এর জন্য সরকারের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’
জনগণের উদ্দেশে সারজিস আলম বলেন, ‘আপনারা লক্ষ রাখবেন, কোনো স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের মধ্যে কামড়াকামড়ির কারণে যদি এই ইপিজেড নির্মাণে বাধা হন, তাহলে তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করবেন। সবার আগে জেলা ও উপজেলার স্বার্থ, তারপর ব্যক্তিস্বার্থ। আমরা বিশ্বাস করি, জেলা-উপজেলার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করলে গোবিন্দগঞ্জ এগিয়ে যাবে, গাইবান্ধা এগিয়ে যাবে। এনসিপি গাইবান্ধার গণমানুষের দাবির কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করবে।’
পথসভায় এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক আলী নাসের খান, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মাহমুদা মিতু, আসাদুল্লাহ গালিব, সাদিয়া ফারজানা, নাজমুল হাসান, কেন্দ্রীয় সংগঠক ফিহাদুর রহমান, সম্রাট শেখ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আগামী নিবার্চন প্রসঙ্গে এনসিপির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম আরও বলেন, ‘আমরা এনসিপি এসেছি, আপনাদের কথা শুনতে এবং বলতে। কিন্তু এটা নয় যে আমরা বলতে এসেছি, আমাদের আপনারা ভোট দিয়েন। আমরা আপনাদের এটা বলতে চাই, আপনাদের এলাকায় যারা ভালো কাজ করবে, ভালো মানুষ হিসেবে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে, যাদের ব্যক্তিত্ব আছে, চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট, ক্ষমতার অপব্যহার করে না। সেই মানুষটা, যে দলেরই হোক না কেন, আপনারা আপনাদের জায়গা থেকে তাঁকেই নেতা নির্বাচন করুন।’
প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সারজিস আলম বলেন, ‘গত ১৬ বছর আপনাদের দলীয় প্রশাসন বানানো হয়েছিল। অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে প্রশাসনের ইমেজ কীভাবে সংকটে পড়েছে, প্রশাসনের যে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন সময়ে অন্ধভাবে ক্ষমতার দালালি করেছে, তা সবাই দেখেছে। এমনকি পরবর্তী সময়ে তারা তো মানুষের সামনে এসে লজ্জিত হয়েছে’ তাদের সন্তান ও পরিবারে যারা ছিল, তারাও জনসমক্ষে আসার মতো অবস্থায় ছিলেন না। আপনাদের যে সাময়িক তোষামোদির চর্চা, সেটা আপনাদের প্রফেশনালিজমের সঙ্গে যায় না। আপনাদের যে শপথ, সেই শপথকে সামনে রেখে, আপনারা দেশকে সবার আগে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাবেন।’
সারজিস আলম আজ দিনভর গাইবান্ধার বিভিন্ন স্থানে পথসভা করেন। রংপুর থেকে এসে তিনি প্রথমে গোবিন্দগঞ্জে আসেন। এরপর তাঁর সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া, ফুলছড়ি উপজেলার কালিরবাজার, গাইবান্ধা জেলা শহরের পৌরপার্ক, পলাশবাড়ী উপজেলা সদরের শহীদ মিনার, সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট শহীদ মিনার ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সদরের স্বাধীনতা চত্বরে বক্তব্য দেওয়ার কথা আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ব ন দগঞ জ ম খ য স গঠক আপন দ র উপজ ল র ক জ কর আপন র এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’