দুপুরের খাবারের পর অসুস্থ চার কারখানার শ্রমিক, একজনের মৃত্যু
Published: 30th, May 2025 GMT
ঈশ্বরদী ইপিজেডের চারটি পোশাক কারখানায় দুপুরের খাবার খেয়ে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
অসুস্থ শ্রমিকদের ঈশ্বরদী ইপিজেডের নিজস্ব হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাবনা ও রাজশাহীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নাকানো ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি, আইএমবিডি কোম্পানি, ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও লিমিটেড ও রেনেসাঁ বারিন্দ লিমিটেড নামের চারটি প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ম অনুযায়ী তাদের সব শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার দুপুরেও খাবার দেওয়া হয়। খাবার খাওয়ার কিছু সময় পর একজন দু’জন করে বেশ কয়েক শ্রমিক পেটে ব্যথা অনুভব করেন। সন্ধ্যায় ছুটির সময় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের প্রথমে ইপিজেডের নিজস্ব হাসপাতাল ও ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহতদের পাবনা ও রাজশাহীতে পাঠানো হয়।
পোশাক শ্রমিক মনোয়ারা খাতুন বলেন, প্রতিদিনের মতো দুপুরের খাবার খেয়ে তারা কাজ শুরু করেন। বিকেলের দিকে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করার পর থেকে বারবার পায়খানা ও বমি হতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে অন্য সহকর্মীরাও অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে ভর্তি আরও বেশ কয়েক শ্রমিকের সঙ্গে কথা বললে তারাও একই ধরনের কথা বলেন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নাকানো ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির ম্যানেজার (এইচআর) মেহেদী হাসান বলেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করার পর বোঝা যাবে কী কারণে একসঙ্গে এত মানুষ অসুস্থ হলো।
রেনেসাঁ বারিন্দ লিমিটেডের লজিস্টিক অফিসার আব্দুল্লাহ্-আল-মামুন বলেন, ইপিজেডের চারটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা প্রায় একযোগে অসুস্থ হয়েছেন বলে তিনি জেনেছেন। কী কারণে এত শ্রমিক অসুস্থ হয়েছেন, তা ধারণা করতে পারছেন না তিনি।
এ ঘটনায় ঈশ্বরদীর ভারপ্রাপ্ত ইউএনও শাহাদাত হোসেন খান, ওসি আ স ম আব্দুন নূরসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থ শ্রমিকদের খোঁজখবর নিয়েছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রকিবুল হাসান বলেন, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪৫ শ্রমিককে ভর্তি রাখা হয়েছে। বাকিদের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের পাবনা ও রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে শুক্রবার দুপুরে এক শ্রমিক মারা গেছেন। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসা শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.
ভারপ্রাপ্ত ইউএনও শাহাদাত হোসেন খান বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া ও তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স হয় ছ ন ন বল ন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভাসানীরা না থাকলে শেখ মুজিব কখনো তৈরি হতেন না: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “ভাসানীরা না থাকলে শেখ মুজিব কখনো তৈরি হতে পারতেন না। বাংলাদেশে শুধু একজন জাতির পিতা নন, অনেক জাতির পিতা রয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম মওলানা ভাসানী।”
তিনি বলেন, “মওলানা ভাসানী কৃষক ও শ্রমিকদের জন্য লড়াই করেছিলেন। তিনি গণমানুষের জন্য লড়াই করেছিলেন। মওলানা ভাসানীর আদর্শকে ধারণ করে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি।”
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থান না হলে নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না: নাহিদ
‘পারলে শেখ হাসিনাকে পুশইন করুন’, ভারতের উদ্দেশে নাহিদ
নাহিদ বলেন, “আমরা এই সমাবেশে মওলানা ভাসানীকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে চাইা। মওলানা ভাসানীকে ইতিহাসে স্মরণ করা হয় না। ভাসানীর মতো মহান রাজনৈতিক পুরুষ, বাংলাদেশের স্থপতি থাকা সত্ত্বেও শুধু একজনকে জাতির পিতা ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৫৪ বছর একজন ব্যক্তিকে পূজা করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “মওলানা ভাসানী শুধু বাংলাদেশ নয়, উমহাদেশের রাজনৈতিক পুরুষ ছিলেন। তার রাজনীতি শুরু হয়েছিল আসামে। সেই আসামে তিনি বাঙালি মুসলিম কৃষকদের অধিকার ও তাদের ভূমির অধিকারের জন্য লড়াই করেছিলেন। সেই লড়াই এখন পর্যন্ত আসামের বাঙালি মুসলমান ও হিন্দুদের লড়তে হয়। সেখানে তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে পরিচিত হতে হয়।”
তিনি আরো বলেন, “মওলানা ভাসানী প্রথম ব্যক্তি যিনি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীদের বিদায় ঘোষণা করেছিলেন কাগমারী আন্দোলনের মাধ্যমে। মওলানা ভাসানী হচ্ছেন, এমন রাজনৈতিক পুরুষ যিনি স্বাধীনতার পরে বলেছিলেন ‘আমার পিঞ্জির ভেঙেছি, দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়, দিল্লির গোলামী করার জন্য নয়’।”
টাঙ্গাইল শাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নামে জিআই পণ্যের স্বীকৃতির কড়া সমালোচনা করে এনসিপির এই নেতা বলেন, “তাঁত শিল্পকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, দেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে আমরা কৃষকদের সংগঠিত করতে চাই।”
সমাবেশে এনসিপির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক আজাদ খান ভাসানী , টাঙ্গাইল জেলার মুখ্য সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান রাসেলসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, এনসিপির নেতারা টাঙ্গাইল সার্কিট হাউজের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। তারা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশস্থল শহীদ মিনার চত্বরে যান।
এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে টাঙ্গাইল শহরে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ