সকালে উঠেই গরু নিয়ে বের হয়েছিল দুই বোন। দুপুরে গরুগুলো বাড়ি ফিরলেও ফেরেনি মারিয়া আক্তার (১২) ও ফারিয়া আক্তার (৯)। সন্ধ্যা নামতেই বাড়িতে নেমে আসে উৎকণ্ঠা। আজ শনিবার সকালে ফিরে এলো দুই বোন-নিঃশব্দ, নিথর হয়ে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে নিখোঁজের ২০ ঘণ্টা পর সিঙ্গার নদীর দুটি ভিন্ন স্থানে পাওয়া গেছে দুই বোনের মরদেহ। উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা। শুক্রবার দুপুরে গোকর্ণ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ এলাকায় সিঙ্গার নদী পার হতে গিয়ে রাতে ভেসে যায় তারা।

আজ শনিবার সকালের তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের মৃত্যুতে গোটা গ্রামে নেমে এসেছে লোকের ছায়া। কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার, প্রতিবেশী ও সহপাঠীরা।

নিহত দুজনই গোকর্ণ ইউনিয়নের গোকর্ণ গ্রামের সৌদি প্রবাসী মিনার আলীর মেয়ে। তারা গোকর্ণ মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।

পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল আকাশি হাওরের পাড়ে গরু চড়াতে যায় দুই বোন। প্রতিদিনের মতো দুপুরের মধ্যেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাদের। কিন্তু এদিন দুপুর পার হয়ে যায়, গরুগুলো ঠিকই বাড়িতে ফিরে আসে। ফারিয়া-মারিয়া ফেরে না। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। দুপুর গড়িয়ে বিকেল, তার পর সন্ধ্যা। পরিবারে বাড়ে উৎকণ্ঠা।

একপর্যায়ে স্থানীয়রা ধারণা করেন, নদী পার হতে গিয়ে হয়তো তারা পানিতে ভেসে গেছে। বিষয়টি জানানো হয় উপজেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসকে। নাসিরনগর ফায়ার সার্ভিস রাত ১২টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালায়। তবে প্রশিক্ষণ না থাকায় তারা পানিতে নামতে পারেননি। শনিবার সকালে ডুবুরি দল আসার আগেই স্থানীয়দের চোখে পড়ে দুটি মরদেহ। সকাল ৯টার দিকে নিখোঁজস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বড় বোন মারিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। আর সকাল ৯টার দিকে দেড় কিলোমিটার দূরে পাওয়া যায় ছোট বোন ফারিয়ার নিথর দেহ।

স্থানীয় শিক্ষক মো.

আকবর সমকালকে জানান, ‘প্রতি বছর গ্রীষ্মকাল ও বর্ষা মিলে এই হাওরের নদীগুলো ভয়ংকর হয়ে ওঠে। শিশু-কিশোর থেকে শুরুর করে বৃদ্ধরা গরু চরাতে গিয়ে তীব্র স্রোতে ভেসে যায়। গত দুই বছরে একই স্থানে চারজন মানুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

গোকর্ণ ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং সদস্য মো. আব্দুল আলীম বলেন, সকালে ওরা গরু নিয়ে বের হয়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত না ফেরায় আমরা নদীতে ভেসে গেছে বলে সন্দেহ করি। কারণ আকাশি হাওরে গরু চড়াতে সিঙ্গা নদী পার হতে হয়। পরে বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়।

নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা নাসরিন বলেন, উজানের ঢল ও নিম্নচাপের কারণে নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে গেছে। রাতে ছিল তীব্র। নদী পার হতে গিয়ে তারা ভেসে যায়। আমরা রাতেই উদ্ধার চেষ্টার সবকিছু করেছি। সকালে স্থানীয়রা লাশ ভেসে উঠতে দেখে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন স রনগর পর ব র গ কর ণ প র হত মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খালের পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় খালের পানিতে ডুবে মারিয়া (১১) ও লামিয়া (৯) নামে দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। 

শনিবার (৩১ মে) সকালে উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের খালের পানি থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

নিহত মারিয়া ও লামিয়া গোকর্ণ গ্রামের প্রবাসী মিনার আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে গোকর্ণ ইউনিয়নের তিতাসের সংযোগ স্থলে খাল পার হয়ে গরু আনতে যায় দুই বোন। এ সময় খালের পানিতে প্রবল স্রোত থাকায় দুই বোন পানিতে ভেসে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
 
পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন। গভীর রাত পর্যন্তও তাদের সন্ধান মিলেনি। অবশেষে আজ (শনিবার) সকাল ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে দুই বোনের মরদেহ খালের পানিতে ভেসে উঠে। 
 
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল আলম জানান, শিশুরা সম্পর্কে আপন দুই বোন, তারা কেউ সাঁতার জানতেন না। খালের প্রবল স্রোতে ভেসে যাওয়ার কারণে তাদের মরদেহ খুঁজে পেতে সমস্যা হয়। সকালে তাদের মরদেহ খালের পানিতে ভেসে উঠলে পুলিশ এবং স্বজনেরা তাদের নিথর দেহ বাড়িতে নিয়ে আসে।

পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলেও জানান তিনি। 

ঢাকা/পলাশ/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাসিরনগরে গরু আনতে গিয়ে নদে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খালের পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু
  • তামিমের জন্য উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে বাবা-মায়ের