গাজীপুরে আলোচনার কেন্দ্রে ‘ভাওয়াল রাজা’
Published: 31st, May 2025 GMT
নাম তার ‘ভাওয়াল রাজা’। নাম ধরে ডাকলেই মাথা ঘুরিয়ে তাকায় সে। চোখে কৌতূহল, পায়ে রাজকীয় ভঙ্গি। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার লোহাগাছ গ্রামে মাস্টার এগ্রো নামের খামারে প্রতিপালিত হচ্ছে ‘ভাওয়াল রাজা’ নামের এই দর্শনীয় ষাঁড়। ওজন ১২০০ কেজি।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গাজীপুরে এখন আলোচনার কেন্দ্রে লোহাগাছ গ্রামের ‘ভাওয়াল রাজা’।
খামারটির মালিক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘‘তিন বছর আগে মাত্র ৮৫ হাজার টাকায় ষাড়টি কিনেছিলাম। প্রথমে সাধারণই মনে হয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তার চলাফেরা, আচরণ আর ভাবসাব দেখে মনে হলো এটি আর দশটা গরুর মতো নয়। তখনই নাম দিই-ভাওয়াল রাজা।’’
আরো পড়ুন:
কেরানীগঞ্জের হাটগুলোতে আসছে কোরবানির পশু
রাজধানীতে বসছে ১৯টি অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট
তিনি বলেন, ‘‘সেই নামই হয়ে ওঠে তার পরিচয়। ষাড়টিকে বড় করতে কোনো কৃত্রিম বা ক্ষতিকর উপকরণ ব্যবহার করা হয়নি। দেশীয় খাবার খুদের ভাত, ঘাস, ভুসি আর ছোলা দিয়ে রাজাকে পোষা হয়েছে। কোনো স্টেরয়েড, হরমোন বা কৃত্রিম মোটাতাজাকরণ প্রয়োগ করা হয়নি।’’
ভাওয়াল রাজার একান্ত সঙ্গী ও পরিচর্যাকারী জুয়েল বলেন, ‘‘ও আমার সন্তানের মতো। দিনে তিনবার খাওয়ানো, নিয়মিত গোসল, শরীর পরিষ্কার- সব নিজের হাতে করি। আমি ডাক দিলে সাড়া দেয়, আমার সঙ্গে খেলে। এখন ঈদে বিক্রি হবে। মনে হচ্ছে নিজের সন্তানকে হারিয়ে ফেলছি।’’
জুয়েল জানান, ভাওয়াল রাজার সঙ্গে তার সম্পর্ক শুধুই কাজের নয়, আবেগেরও। অনেক সময় খামারে নিঃসঙ্গ মুহূর্তে রাজাকেই সঙ্গী মনে করেন তিনি।
ভাওয়াল রাজাকে ঘিরে এখন গাজীপুরের লোহাগাছ গ্রাম বেশ আলোচনায়। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন রাজাকে দেখতে। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন, কেউ আবার দরদাম করছেন।
মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘‘সাড়ে ৮ লাখ টাকা দাম চেয়েছি। তবে রাজাকে এমন কারও হাতেই দিতে চাই, যিনি ওকে স্নেহ করবেন, বোঝেন পশু মানে শুধু মাংস নয় এটা একটা জীবন, একটা ভালোবাসা।’’
ভাওয়াল রাজা বিক্রি হবে-এটাই বাস্তবতা। কিন্তু যারা তাকে পালন করেছেন, তাদের চোখে এ যেন রাজাকে বিদায় দেওয়ার মুহূর্ত। সে চলে যাবে, কিন্তু রেখে যাবে একটি ব্যতিক্রম সম্পর্কের গল্প।
ঢাকা/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলপন্থি বিক্ষোভে পেট্রোল বোমা হামলা
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের বোল্ডার শহরে ইসরায়েলপন্থি একটি বিক্ষোভে পেট্রল বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ছয়জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় রবিবার (১ জুন) দুপুরের দিকে এ হামলা হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে বোল্ডারে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’ বলে চিৎকার করে এবং ঘরে তৈরি মলোটভ ককটেল (পেট্রোল বোমা) ছুঁড়ে মারলে ছয়জন আহত হন।
আরো পড়ুন:
শিগগিরই আলোচনায় বসবেন ট্রাম্প ও শি জিনপিং
ইরানের কাছে পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) এটিকে ‘পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে এফবিআই প্রধান ক্যাশ প্যাটেল বলেন, ‘আমরা কলোরাডোর বোল্ডারে একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে অবগত এবং ঘটনাটির আদ্যোপান্ত তদন্ত করে দেখছি।’
ডেনভার ফিল্ড অফিসের দায়িত্বে থাকা এফবিআইয়ের বিশেষ এজেন্ট মার্ক মিশেলেক জানান, ৬৭ থেকে ৮৮ বছর বয়সী ছয়জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, গায়ে জামা (শার্ট) না থাকা এক ব্যক্তি দুই হাতে স্বচ্ছ স্প্রে বোতল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং তার সামনে ঘাসে আগুন জ্বলছে।
ভিডিওতে ওই ব্যক্তিকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘জায়নবাদীরা নিপাত যাক’, ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’, ‘তারা খুনি’। তিনি লাল টি-শার্ট পরা কয়েকজনের দিকে তাকিয়ে এই কথাগুলো বলছিলেন, যারা মাটিতে পড়ে থাকা একজনের শুশ্রূষা করছিলেন।
বোল্ডার পুলিশপ্রধান স্টিভ রেডফার্ন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুততম সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তিনি বলেন, “আমরা সেখানে পৌঁছানোর পর একাধিক আহত ব্যক্তিকে দেখতে পাই, যাদের শরীরে আগুনে পোড়া ও অন্যান্য ধরনের জখমের চিহ্ন ছিল।”
স্টিভ রেডফার্ন আরো বলেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছেই পুলিশ তাৎক্ষণিক ওই সন্দেহভাজনের মুখোমুখি হয়। কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই তাকে আটক করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রবিবার কলোরাডোতে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা গাজায় চলমান যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় উচ্চ-মাত্রার হামলা।
এর আগে গত ২১ মে, ওয়াশিংটন ডিসির কেন্দ্রস্থলে ক্যাপিটাল ইহুদি জাদুঘরে একটি নেটওয়ার্কিং ইভেন্টের জন্য জড়ো হওয়া লোকদের উপর একজন ব্যক্তি গুলি চালিয়েছিল। এতে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মী নিহত হন। হামলাকারী এলিয়াস রদ্রিগেজকে গ্রেপ্তারের সময় তিনি ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’ বলে স্লোগান দেয়। তার বিরুদ্ধে প্রথম-ডিগ্রি হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ