মৌসমি বায়ু দেশজুড়ে সক্রিয়, ৩ বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
Published: 1st, June 2025 GMT
সাগরের নিম্নচাপ চলে গেছে। তবে বৃষ্টি কমেনি। এখন অবশ্য নিম্ন বা লঘুচাপের কারণে নয়। বৃষ্টি হচ্ছে মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার কারণে। বৃষ্টি–ঝরানো এ বায়ু এখন দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রভাবেই আজ রোববার দেশের অন্তত তিন বিভাগের বেশ কিছু স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। বৃস্টি চলতে পারে আরও অন্তত দুই দিন। আর টানা ভারী বৃষ্টিতে বেড়েছে দেশের বিভিন্ন নদ–নদীর পানি। তাতে অন্তত চার জেলায় বন্যা পরস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.
বজলুর রশিদের ভাষ্য, এখন বৃষ্টি হচ্ছে কারণ মৌসুমি বায়ু এখন পুরো দেশে সক্রিয় অবস্থায় আছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে এক সতর্ক বার্তায় জানায়, বেলা দুইটার মধ্যে টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বান্দরবান, পটুয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা জেলার কিছু স্থানে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। ⚠এ সময় বজ্রপাতের আশঙ্কা আছে। তাই এ সময় ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের ঘরের বাইরে না যেতে অনুরোধ করেছে।
চলতি বছর নির্দিষ্ট সময়ের অন্তত সপ্তাহখানেক আগে ২৪ মে দেশে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করে। এরই মধ্যে সাগরে লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়। এটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয় এবং একপর্যায়ে ব্যাপক বৃষ্টি ঝরায়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গত বৃহস্পতিবারে ভারী বৃষ্টি হয়। এতে বেড়ে যায় বিভিন্ন এলাকার নদ–নদীর পানি। বিশেষ করে হাওরের সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নদ–নদীর পানি আজও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।