সাগরের নিম্নচাপ চলে গেছে। তবে বৃষ্টি কমেনি। এখন অবশ্য নিম্ন বা লঘুচাপের কারণে নয়। বৃষ্টি হচ্ছে মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার কারণে। বৃষ্টি–ঝরানো এ বায়ু এখন দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রভাবেই আজ রোববার দেশের অন্তত তিন বিভাগের বেশ কিছু স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। বৃস্টি চলতে পারে আরও অন্তত দুই দিন। আর টানা ভারী বৃষ্টিতে বেড়েছে দেশের বিভিন্ন নদ–নদীর পানি। তাতে অন্তত চার জেলায় বন্যা পরস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.

বজলুর রশিদ আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, আজ ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশ কয়েকটি স্থানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যান্য জায়গাতেও বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হতে পারে। আজ রাজধানীতেও বিকেলের দিকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।

বজলুর রশিদের ভাষ্য, এখন বৃষ্টি হচ্ছে কারণ মৌসুমি বায়ু এখন পুরো দেশে সক্রিয় অবস্থায় আছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে এক সতর্ক বার্তায় জানায়, বেলা দুইটার মধ্যে টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বান্দরবান, পটুয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা জেলার কিছু স্থানে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। ⚠এ সময় বজ্রপাতের আশঙ্কা আছে। তাই এ সময় ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের ঘরের বাইরে না যেতে অনুরোধ করেছে।

চলতি বছর নির্দিষ্ট সময়ের অন্তত সপ্তাহখানেক আগে ২৪ মে দেশে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করে। এরই মধ্যে সাগরে লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়। এটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয় এবং একপর্যায়ে ব্যাপক বৃষ্টি ঝরায়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গত বৃহস্পতিবারে ভারী বৃষ্টি হয়। এতে বেড়ে যায় বিভিন্ন এলাকার নদ–নদীর পানি। বিশেষ করে হাওরের সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নদ–নদীর পানি আজও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পকে খুশি করতে ১১০ পণ্যে শুল্ক ছাড়!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা পাল্টা শুল্ক থেকে রেহাই পেতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তাই দেশটি থেকে পণ্য আনা আরও সাশ্রয়ী করতে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে বেশকিছু পণ্যে শুল্ক ছাড় এবং সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার ও ছাড় দেওয়া হয়েছে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর থেকেই এটি কার্যকর হয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী শূন্য শুল্ক বা ছাড় অন্যান্য দেশের জন্যও প্রযোজ্য হবে। 
সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমদানি পণ্যের শুল্ক-কর হার পর্যায়ক্রমে কমানো এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৬৫টি পণ্যের আমদানি শুল্ক হ্রাস, ৯টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার এবং ৪৪২টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব করা হয়েছে। 
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বলবৎ ন্যূনতম ও ট্যারিফ মূল্য পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করার অংশ হিসেবে বিদ্যমান সব ট্যারিফ মূল্য প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৮৪টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য প্রত্যাহার এবং ২৩টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য বৃদ্ধি করে শুল্ক মূল্য যৌক্তিক করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাজেট উপস্থাপনের পর নির্দেশিকা জারি করে আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক-কর বিষয়ক প্রস্তাবগুলো গতকাল থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। শুল্ক প্রত্যাহার হওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সুতা, কাপড়, পেট্রোলিয়াম, কম্বাইন হার্ভেস্টর, কৃষি যন্ত্রপাতি, পোলট্রি ইনকিউবেটর, চিনি পরিশোধন যন্ত্রপাতি, বেকারি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি। তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহারসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে হার কমানো হয়েছে।  
গত ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বিশ্বের ৫৭টি দেশের ওপর বিভিন্ন হারে পাল্টা শুল্ক বসানো হয়। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ঘোষণা করা হয় ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট। যদিও সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর করা হয়েছে। স্থগিত হওয়া শুল্ক যেন আগামীতে আর কার্যকর না হয় সেজন্য ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। সর্বশেষ গত মে মাসের মাঝামাঝিতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) দপ্তরে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ