ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের খুব শিগগিরই বাণিজ্যচুক্তি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি নিশ্চিত করেছেন, পাকিস্তানের একজন প্রতিনিধি আগামী সপ্তাহে আলোচনা করতে ওয়াশিংটন সফরে আসছেন।

গত শুক্রবার বিামানঘাঁটি জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রতিনিধি আসছেন আগামী সপ্তাহে। ভারতের সঙ্গেও আমাদের চুক্তি এই হলো বলে।’ খবর ইকোনমিক টাইমসের

তবে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যদি আবারও সংঘাত হয়, তাহলে এই আলোচনা বিঘ্নিত হতে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘যদি তারা যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে আমরা কারও সঙ্গেই আমার চুক্তির আগ্রহ থাকবে না।’

সম্প্রতি ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে মার্কিন সরকারের ভূমিকা আছে বলে জানা যায়। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত পাকিস্তানের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়। এরপর দেশ দুটির মধ্যে মসামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। পরিস্থিতি আরও গুরুতর হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে শেষমেশ যুদ্ধবিরতি হয়।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছেন, তার প্রভাব পাকিস্তানি পণ্যের রপ্তানিতেও পড়তে পারে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের ৩ বিলিয়ন বা ৩০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্তের কারণে। পাকিস্তানি পণ্যে ২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প।

এই প্রেক্ষাপটে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আলোচনার লক্ষ্যে সম্প্রতি আবারও ওয়াশিংটন সফর করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। উভয় দেশ জুলাইয়ের শুরুতেই অন্তর্বর্তী চুক্তি সই করতে চায়। ২ এপ্রিল ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের ভারতীয় পণ্যে ২৬ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

অন্যদিকে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত তার সরকারি ক্রয়বাজার মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য উন্মুক্ত করবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো ভারতীয় কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর ৫০ বিলিয়ন বা ৫ হাজার কোটি ডলারের বেশি মূল্যের সরকারি ঠিকাদারিতে অংশ নিতে পারবে। এটি ওয়াশিংটনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনারই অংশ।

এর আগেও ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনা পারমাণবিক বিপর্যয় রোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন বাণিজ্য নিয়ে কথা বলি, তখন বলি, যারা একে অপরকে গুলি করছে ও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, তাদের সঙ্গে তো আর বাণিজ্য করা যায় না…তারা এটা বুঝেছে এবং রাজি হয়েছে—তাই সব থেমে গেছে।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমার মতে, সবচেয়ে গর্বের যে চুক্তি তা হলো—আমরা ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে একযোগে কাজ করেছি এবং বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ ঠেকাতে পেরেছি, গুলির বদলে। সাধারণত এটা হয় গুলি দিয়ে, আমরা করেছি বাণিজ্য দিয়ে। এ নিয়ে আমরা খুবই গর্বিত। কেউ এ বিষয়ে কথা বলে না। অথচ তখন পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ভয়ংকর যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। আর এখন দেখুন, তারা মোটামুটি ভালোই আছে।’

এর আগে জানা যায়, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যচুক্তির দিকে ধাপে ধাপে এগোচ্ছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। তিন ধাপে এই চুক্তি সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুই দেশের সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা। আগামী জুলাই মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার সময় অন্তর্বর্তী চুক্তি হতে পারে বলেই মনে করছেন তাঁরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র কর ছ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মার ঘাটে মাছের রেণু বেচাকেনা

২ / ৯রেণু নিয়ে ঘাটে ভিড়ছেন সাবাইরারা

সম্পর্কিত নিবন্ধ