কুলাউড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত
Published: 1st, June 2025 GMT
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রদীপ বৈদ্য (২২) নামের এক বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের দত্তগ্রাম সীমান্তের বিপরীতে ভারতের ভেতর এ ঘটনা ঘটে। তবে আজ রোববার সকালে বিষয়টি জানাজানি হয়।
নিহত প্রদীপ দত্তগ্রামের বাসিন্দা শৈলেন্দ্র বৈদ্যর ছেলে। কুলাউড়ার দত্তগ্রাম সীমান্তের বিপরীতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য অবস্থিত।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিবারে অভাব-অনটনের কারণে প্রদীপ দিনমজুরের কাজ করতেন। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে তাঁর খোঁজ পাচ্ছিলেন না স্বজনেরা। আজ সকালে স্থানীয় কিছু লোকের কাছ থেকে পরিবার খবর পায়, বিএসএফ প্রদীপকে গুলি করে মেরে ফেলেছে। এরপর বিষয়টি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) স্থানীয় দত্তগ্রাম ক্যাম্পে জানানো হয়। বিজিবি বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রদীপের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
শরীফপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জয়নুল ইসলাম আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, প্রদীপের বাবা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। পরিবারটি দরিদ্র। প্রদীপের উপার্জন দিয়ে সংসার চলে। দত্তগ্রামের কিছু লোক দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় পণ্য চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত। তাঁদের পাল্লায় পড়ে প্রদীপ সীমান্তের ওপারে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে মারা যেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। লাশ দেশে আনার জন্য এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কুলাউড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে বিজিবি পরামর্শ দিয়েছে। স্বজনেরা থানায় গেছেন।
দত্তগ্রাম সীমান্ত বিজিবির ৪৬ ব্যাটালিয়নের আওতায় পড়েছে। শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত ওই ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি ভারতের ভেতরে ঘটেছে। প্রদীপ সেখানে কীভাবে, কী উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন জানা যায়নি। তিনি সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে বিএসএফ জানিয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ সেখানকার একটি হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে লাশ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের বিএসএফের হাতে আটক ১৯ বাংলাদেশি মৎস্যজীবী
অবৈধভাবে ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশের অভিযোগে ১৯ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের উত্তাল নদীতে দীর্ঘক্ষণ ধাওয়া করে তাদের আটক করা হয়। ধৃত মৎসজীবীরা বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলার পুরালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। মাছ ধরার ট্রলার ও জালসহ তাদেরকে আটক করা হয়।
আরো পড়ুন:
কলকাতায় সম্মিলিত সেনা সম্মেলন উদ্বোধন নরেন্দ্র মোদির
অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি নরম হওয়ার দিন শেষ: ট্রাম্প
বিএসএফ জানায়, রবিবার সীমান্তের সুন্দরবন অংশে রুটিন টহল দেয়ার সময় গোসাবা রেঞ্জের বাঘমারি জঙ্গল এলাকায় বাংলাদেশি অবৈধ ট্রলারের উপস্থিতি নজরে আসে বিএসএফ জওয়ানদের। বিএসএফ জওয়ানদের পেট্রোল বোট ট্রলারটির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতেই ট্রলারটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। দ্রুততার সঙ্গে ট্রলারের পিছু ধাওয়া করা হয়। দীর্ঘক্ষণ ধাওয়া করে পরবর্তীতে পাকড়াও করা হয় বাংলাদেশি ট্রলারটিকে। অবৈধ অনুপ্রবেশ এর অভিযোগে আটক করা হয় এতে থাকা ১৯ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে। বাজেয়াপ্ত করা হয় ট্রলারটি।
বিএসএফ আরো জানায়, আটকের পর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগের বিপরীতে কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারেনি। ফলে জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাদের স্থানীয় সুন্দরবন কোস্টাল থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আজ সোমবার তাদের আলিপুর আদালতে তোলা হবে।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ