দেশ প্লাস্টিক দূষণমুক্ত করতে রোডম্যাপের বিকল্প নেই
Published: 1st, June 2025 GMT
দেশকে ২০৪০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত করতে হলে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় এখনই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলেও মত দিয়েছেন তারা। রোববার ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়’ প্রতিপাদ্যে চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার মোড়ে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত এক মানববন্ধনে বক্তারা এই মত দেন। চট্টগ্রামের পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতায় উদ্দ্যোগী বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনের কর্মীরাও মানববন্ধনে অংশ নেন।
সনাক-টিআইবি চট্টগ্রামের সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- ব্রাইড বাংলাদেশ ফোরামের প্রোগ্রাম অফিসার পিকু দাশ জয়, দুঃস্থ সহায়তা কেন্দ্রের প্রোজেক্ট ম্যানেজার আরেফাতুল জান্নাত, ওয়াইডব্লিউসিএর পান্না সেন, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রামের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সনাক-টিআইবি চট্টগ্রামের সদস্য সঞ্জয় বিশ্বাস প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সনাক-টিআইবি চট্টগ্রামের সাবেক দলনেতা মিরাজুল ইসলাম।
বক্তারা বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত করতে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করা ছাড়া উপায় নেই। পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করাও জরুরি। প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করতে হবে। নদী, বন ও পরিবেশের সঙ্গে জড়িত এলাকাগুলোকে প্লাস্টিকমুক্ত রাখতে নিতে হবে আলাদা কর্মপরিকল্পনা। সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরিবেশ-সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো দরকার।
বক্তারা আরও বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় বিশ্ব ব্যাংক প্রণীত একটি অ্যাকশন প্ল্যান নীতিগতভাবে গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি জেলা কার্যালয় ও প্রতিষ্ঠানগুলোতে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বর্জনের যে নির্দেশনা প্রদান করেছে, তা যেন শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না থাকে। সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক হতে হবে। একইসঙ্গে প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় গৃহীত সব কর্মকাণ্ডে সাধারণ জনগণসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের অর্থবহ সচেতনতা ও কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি প্লাস্টিক দূষণ রোধে সার্বিকভাবে পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় আইন ভঙ্গকারী এবং প্লাস্টিক দূষণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের কার্যকর জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য সনাক-টিআইবি জোর দাবি জানায়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫