মাসিকবান্ধব বিশ্বের জন্য পণ্যের সহজলভ্যতা ও সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করা জরুরি
Published: 1st, June 2025 GMT
‘মাসিক—কৈশোরকালীন একটা সাধারণ বিষয়। এর যথাযথ ব্যবস্থাপনা অনুসরণ না করায় নারীদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি নানা সমস্যা হয়ে থাকে। স্বল্পমেয়াদি সমস্যা হলো স্বাস্থ্যগত, ইনফেকশন হওয়া—যা পরবর্তী সময়ে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার রূপ নেয়। সঠিকভাবে মাসিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় মেয়েরা ওই সময়টায় স্কুলে অনুপস্থিত থাকে, মানসিকভাবে দুর্বল হয়, সামাজিকভাবে বদ্ধ হয়ে যায়। কর্মজীবী নারীদের কর্মদক্ষতা কমে যায়। তাই সমাধানের জন্য তাঁদের প্রথমত সচেতন করতে হবে এবং মাসিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পর্কিত পণ্যের সহজলভ্যতা ও সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করতে হবে।’ কথাগুলো বলেন অধ্যাপক কোহিনুর বেগম।
গত মঙ্গলবার (২৭ মে) পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড গাইনোকলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনায় কোহিনুর বেগম এ কথা বলেন। তিনি পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড গাইনোকলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের (পিএজিএসবি) সভাপতি।
মে মাস মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সচেতনতার মাস। এ ছাড়া ২৮ মে ছিল ‘বিশ্ব মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস’। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে আয়োজিত হয় নানা সচেতনতামূলক আলোচনা, সেমিনার, গবেষণা ইত্যাদি। বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সহযোগিতায় ওই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়। বিষয় ছিল—মাসিকবান্ধব বিশ্বের জন্য একতা। অনুষ্ঠানটি সরাসরি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।
গোলটেবিল আলোচনায় মাসিক ব্যবস্থাপনা, এর সচেতনতা, সহায়ক পরিবেশ এবং স্যানিটারি ন্যাপকিনের সহজলভ্যতা ও ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়। আয়োজনটিতে নলেজ পার্টনার হিসেবে ছিল ‘অস্টোক্যাল জিএক্স’ ও ‘জিফল-সিআই’।
এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সহযোগিতায় পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড গাইনোকলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের (পিএজিএসবি) সভাপতি অধ্যাপক কোহিনুর বেগমের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব অধ্যাপক গুলশান আরার মডারেশনে আলোচনা করেন সহসভাপতি অধ্যাপক রওশন আরা বেগম, সায়েন্টিফিক কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এসকে জিন্নাত আরা নাসরিন, ট্রেজারার অধ্যাপক ইফফাত আরা এবং অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক সামিনা চৌধুরী, সভাপতি অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ান, সহসভাপতি অধ্যাপক সালেহা বেগম চৌধুরী ও অধ্যাপক সাবেরা খাতুন, মহাসচিব অধ্যাপক সালমা রউফ, সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি অধ্যাপক ফাতেমা রহমান, পপুলার মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ফেরদৌসি ইসলাম লিপি, প্রসূতি ও গাইনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শামছুন নাহার লাকি, ইমপালস হাসপাতাল লিমিটেডের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট অধ্যাপক নিয়াজ টি পারভীন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রাশিদা খানম, এক্সিকিউটিভ জেনারেল ম্যানেজার ডা.
অনুষ্ঠানের শুরুতেই অধ্যাপক গুলশান আরা বলেন, ‘পিএসজিবির থিম হচ্ছে “কৈশোরের কণ্ঠ শ্রবণযোগ্য”, অর্থাৎ তাঁদের কথা শুনতে হবে, তবেই মাসিকবান্ধব বিশ্ব গড়া যাবে। প্রতিদিন বিশ্বের ৩০ কোটি নারী ঋতুস্রাব অবস্থায় থাকে। তার মধ্যে ৫০ শতাংশই মানসম্মত মাসিক ব্যবস্থাপনা থেকে সুবিধাবঞ্চিত। যেখানে সমস্যা হিসেবে থাকে পানি, স্যানিটেশন, পরিচ্ছন্নতা, সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য প্রাপ্তি এবং সহায়ক পরিবেশ। তাই সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা এ ধরনের সমস্যা থেকে সমাধান দেবে।’
মাসিকবান্ধব বিশ্বের জন্য সচেতনতা কতটা জরুরি—এ প্রসঙ্গে জানান অধ্যাপক রওশন আরা বেগম। তাঁর মতে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, মাসিক শুধু নারীর নয়, এটি একটি মানবিক ও মানবাধিকারের বিষয়। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মাত্র ১৭ শতাংশ নারী প্যাড ব্যবহার করেন, মানে ৮২ শতাংশ বঞ্চিত; যা দুঃখজনক। আর গ্রামগঞ্জে নারীরা কাপড় ব্যবহার করেন। কারণ, তাঁরা দামি প্যাড ব্যবহার করতে পারে না। স্কুলে ৪০ শতাংশ মেয়ে তিন দিন স্কুলে এবং গার্মেন্টসে ছয় দিন কাজে আসে না। যা শিক্ষার ও অর্থনৈতিক ক্ষতি। এ ছাড়া পরিবারের সবাইকে এ সম্পর্কে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, মাত্র ৫ শতাংশ বাবা এবং ১ শতাংশ ভাই স্যানিটারি ন্যাপকিন সম্পর্কে জানেন। তাই এ ব্যাপারে সবার সচেতনতার পাশাপাশি কতক্ষণ ব্যবহার ও কতক্ষণ পরপর প্যাড পরিবর্তন করতে হবে, সেটা জানাতে হবে। পাশাপাশি কম মূল্যে স্কুল, গার্মেন্টস এবং সর্বত্র স্যানিটারি প্যাড পৌঁছাতে হবে।
মাসিক সম্পর্কে যথাযথ শিক্ষা প্রদান প্রসঙ্গে অধ্যাপক এস কে জিন্নাত আরা নাসরিন বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে ঋতুস্রাব বিষয়টি অবহেলিত। এ অবহেলার কারণ হলো বিষয়টি সম্পর্কে যথাযথ শিক্ষা না থাকা। আজকের গোলটেবিলকে অবশ্যই প্রান্তিক মেয়েদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। পাশাপাশি তাঁর পরিবারকেও সচেতন করতে হবে।’
সামাজিক ট্যাবু সম্পর্কে বলতে গিয়ে ফেরদৌসি ইসলাম লিপি বলেন, ‘অনাদিকাল থেকে মাসিক নিয়ে কুসংস্কার চলে আসছে। যার সঙ্গে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় একটা ব্যাপার জড়িয়ে আছে। সেগুলো হলো সে অপবিত্র, খেলাধুলা করতে পারবে না, স্কুলে যেতে পারবে না, অনুষ্ঠানে যেতে পারবে না, মৃত মানুষকে দেখতে যেতে পারবে না, রান্নাবান্না করা যাবে না, তাঁদের হাতে কেউ খাবার খাবে না ইত্যাদি রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য ও বিশেষজ্ঞ মাধ্যম থেকে হতে হবে সচেতন।’
গোলটেবিলের একপর্যায়ে অধ্যাপক ইফফাত আরা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার সময় সম্পর্কে জানান। তাঁর মতে, মেয়েদের মাসিক হওয়ার আগের লক্ষণ এবং রক্তস্রাবের পরিমাণ সম্পর্কে জানতে হবে। তাই মাসিকের প্রভাবে কারও যদি এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে অতিরিক্ত রক্তস্রাব এবং ব্যথা হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মাসিককালীন মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অধ্যাপক সামিনা চৌধুরী বলেন, ‘সাধারণত ১১ থেকে ১৪ বছর বয়সেই মেয়েদের মাসিক শুরু হয়। এ সময় তাঁদের শারীরিক ও হরমোনের পরিবর্তন হয়ে থাকে, যা তাঁকে বিব্রতকর ও চিন্তিত করে। সুতরাং মাসিক শুরুর আগেই যদি মেয়েটি এ নিয়ে জানত, সে এটিকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারত। সমীক্ষায় দেখা গেছে, এ সময় ২৫ শতাংশ মেয়ের ওপরই মানসিক প্রভাব পড়ে। তাই এ সময়ে কিশোরীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে।’
নীতিনির্ধারকদের ভূমিকা প্রসঙ্গে অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ান বলেন, ‘মাসিক স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক পলিসি করতে হবে। যেখানে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে, যাঁরা প্রতিটি পদক্ষেপ নেবেন। এ পলিসির আওতায় স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এ সম্পর্কে জানা বাধ্যতামূলক, শিক্ষকদের প্রশিক্ষিত করা, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে এ সময় মেয়েদের যাতায়াত, পরিচ্ছন্ন স্যানিটেশন ব্যবস্থা, কমিউনিটিকে সচেতন করতে মিডিয়া ও ধর্মীয় নেতাদের অগ্রণী ভূমিকা পালন নিশ্চিত করতে হবে।’
মাসিক যাঁর হয়েছে, তাঁরও কিছু বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এ বিষয়ে অধ্যাপক সালেহা বেগম চৌধুরী বলেন, ‘স্বাস্থ্যসচেতন না হলে যে ধরনের সমস্যা হয়, সেগুলো হলো মাসিকের অস্বাভাবিকতা, এন্ডোমেট্রিওসিস হওয়া, পিসিওএস হওয়া, অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া, প্রজননতন্ত্রে ইনফেকশন হওয়া ইত্যাদি। এর থেকে মুক্তি পেতে স্বাস্থ্যকর খাবার ও মাসিককালীন শারীরিক কসরত করা দরকার।’
মাসিক অব্যবস্থাপনার প্রভাব সম্পর্কে অধ্যাপক সাবেরা খাতুন বলেন, ‘মোটা দাগে বলব, অস্বাস্থ্যকর মাসিক ব্যবস্থাপনায় একজন নারীর জরায়ুমুখের ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই দরকার সঠিক সচেতনতা। তাই মাসিকবিষয়ক অনুষঙ্গকে টিসিবি পণ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যখন প্রথম মাসিক হলে সেটিকে উদ্যাপন করতে হবে। যে প্রতিষ্ঠানগুলো প্যাড তৈরি করে, তারা যেন স্বাস্থ্যকর পরিবেশের প্রস্তুত করে, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।’
তৃণমূল পর্যায়ে মাসিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত প্রসঙ্গে অধ্যাপক সালমা রউফ বলেন, ‘মাসিককালীন নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে পরিবারের খোলামেলা আলোচনা খুব একটা হয় না। মাসিককালীন করণীয় সম্পর্কে মায়েরা তাঁদের মায়েদের থেকে যা শিখেছেন, তা–ই তিনি সন্তানদের শেখান। তাই এ ব্যাপারে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শেখানোর আয়োজন করা দরকার এবং পলিসি তৈরি করে সেটি কাজ করছে কি না, তা মনিটরিং করতে হবে।’
স্যানিটারি প্যাড পাওয়ার ক্ষেত্রে সহজলভ্যতা নিশ্চিত বিষয়ে অধ্যাপক ফাতেমা রহমান বলেন, ‘কম বয়সে কোনো মেয়ের মাসিক হলে তার জন্য যথাযথ মাসিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে, এখানে মায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। দোকান থেকে পরিবারের কোনো সদস্য স্যানিটারি প্যাড দিতে হবে। আর এ প্যাডের দামের ব্যাপারে পরিবার আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে তৎক্ষণাৎ হলে সমাধান দেওয়া যায়। তাই যার যার অবস্থান থেকে ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করলে এ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সহজ হবে।’
অধ্যাপক শামছুন নাহার লাকি সচেতনতার শুরু কোত্থেকে হবে, সে বিষয়ে জানান। তাঁর মতে, ‘এই গোলটেবিলের মাধ্যমে আমরা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানালেই হবে না, তৃণমূল পর্যায়েও এসব তথ্য পৌঁছে দিতে হবে। আর শুরু করতে হবে মেয়েদের প্রথম মাসিকের সময় থেকেই। এ জন্য পরিবারকে সচেতন হতে হবে। নাহয় মেয়েটির ভবিষ্যৎ গর্ভধারণ ঝুঁকিতে পড়বে। তাই আপনার মেয়ের যখন অস্বাভাবিক ব্যথা, অনিয়মিত মাসিক এবং বেশি পরিমাণ রক্তস্রাব হয়, তা হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।’
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য মাসিকবান্ধব কমিউনিটি ও তাঁদের সচেতন বিষয়ে অধ্যাপক নিয়াজ টি পারভীন বলেন, ‘প্রথমে সে কীভাবে তাঁর মাসিক ব্যবস্থাপনায় অভ্যস্ত, সেটি জানতে হবে। সেখানে যদি অস্বাস্থ্যকর পদ্ধতি থাকে, সেটির প্রভাব সম্পর্কে তাকে জানাতে হবে। সর্বশেষ নীতিনির্ধারকদের সহযোগিতা করতে হবে, যাতে ন্যূনতম মূল্যে প্রান্তিক মেয়েরা স্যানিটারি প্যাড পেতে পারে।’
কর্মক্ষেত্রকে মাসিকবান্ধব করার ব্যাপারে অধ্যাপক রাশিদা খানম বলেন, ‘মাসিক নিয়ে খোলাখুলি সম্মানজনক আলোচনা করা, কেউ এটি নিয়ে অসম্মানজনক-বিদ্রূপ কথা বলে তার বিরুদ্ধে কঠোর নীতি অবলম্বন করা, সুপারভাইজারকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষিত করতে হবে, যাতে তাঁর অধস্তনের খেয়াল রাখতে পারে। নারীদের জন্য মাসিকবান্ধব টয়লেট থাকতে হবে, তাঁর প্রতি নমনীয়তা, বিশ্রামের ব্যবস্থা এবং তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নজর ইত্যাদি থাকতে হবে। এ বিষয়গুলো থাকলে কর্মক্ষেত্রও মাসিকবান্ধব হবে।
নারী ও কিশোরী স্বাস্থ্যের জন্য এসকেএফের ভূমিকা সম্পর্কে ডা. মোহাম্মদ মিজানুর রাহমান বলেন, ‘২০২৫ সালে এসেও এটা নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে, এটাই বিব্রতকর। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে মেয়েদের প্রথম মাসিক হয়ে থাকে, তাঁদের মধ্যে ৩২ শতাংশ এর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানেন। বাকিরা জানেন না। এ ব্যাপারে আমাদের এসেকেএফের ভূমিকা হচ্ছে, আমরা আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ সরবরাহ করি এবং জনসচেতনতামূলক কাজগুলো করে থাকি। এ আয়োজনে একাত্ম হতে পেরে নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ধারা অব্যাহত রাখবে বলে আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অ য ন ড গ ইন ক স ব স থ যকর ন শ চ ত কর প রসঙ গ ব যবহ র অন ষ ঠ র জন য পর ব শ স স ইট ন বল ন প রস ত পর ব র ত করত এ সময় প রথম সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
মাসিকবান্ধব বিশ্বের জন্য পণ্যের সহজলভ্যতা ও সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করা জরুরি
‘মাসিক—কৈশোরকালীন একটা সাধারণ বিষয়। এর যথাযথ ব্যবস্থাপনা অনুসরণ না করায় নারীদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি নানা সমস্যা হয়ে থাকে। স্বল্পমেয়াদি সমস্যা হলো স্বাস্থ্যগত, ইনফেকশন হওয়া—যা পরবর্তী সময়ে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার রূপ নেয়। সঠিকভাবে মাসিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় মেয়েরা ওই সময়টায় স্কুলে অনুপস্থিত থাকে, মানসিকভাবে দুর্বল হয়, সামাজিকভাবে বদ্ধ হয়ে যায়। কর্মজীবী নারীদের কর্মদক্ষতা কমে যায়। তাই সমাধানের জন্য তাঁদের প্রথমত সচেতন করতে হবে এবং মাসিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পর্কিত পণ্যের সহজলভ্যতা ও সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করতে হবে।’ কথাগুলো বলেন অধ্যাপক কোহিনুর বেগম।
গত মঙ্গলবার (২৭ মে) পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড গাইনোকলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনায় কোহিনুর বেগম এ কথা বলেন। তিনি পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড গাইনোকলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের (পিএজিএসবি) সভাপতি।
মে মাস মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সচেতনতার মাস। এ ছাড়া ২৮ মে ছিল ‘বিশ্ব মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস’। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে আয়োজিত হয় নানা সচেতনতামূলক আলোচনা, সেমিনার, গবেষণা ইত্যাদি। বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সহযোগিতায় ওই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়। বিষয় ছিল—মাসিকবান্ধব বিশ্বের জন্য একতা। অনুষ্ঠানটি সরাসরি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।
গোলটেবিল আলোচনায় মাসিক ব্যবস্থাপনা, এর সচেতনতা, সহায়ক পরিবেশ এবং স্যানিটারি ন্যাপকিনের সহজলভ্যতা ও ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়। আয়োজনটিতে নলেজ পার্টনার হিসেবে ছিল ‘অস্টোক্যাল জিএক্স’ ও ‘জিফল-সিআই’।
এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সহযোগিতায় পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড গাইনোকলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের (পিএজিএসবি) সভাপতি অধ্যাপক কোহিনুর বেগমের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব অধ্যাপক গুলশান আরার মডারেশনে আলোচনা করেন সহসভাপতি অধ্যাপক রওশন আরা বেগম, সায়েন্টিফিক কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এসকে জিন্নাত আরা নাসরিন, ট্রেজারার অধ্যাপক ইফফাত আরা এবং অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক সামিনা চৌধুরী, সভাপতি অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ান, সহসভাপতি অধ্যাপক সালেহা বেগম চৌধুরী ও অধ্যাপক সাবেরা খাতুন, মহাসচিব অধ্যাপক সালমা রউফ, সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি অধ্যাপক ফাতেমা রহমান, পপুলার মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ফেরদৌসি ইসলাম লিপি, প্রসূতি ও গাইনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শামছুন নাহার লাকি, ইমপালস হাসপাতাল লিমিটেডের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট অধ্যাপক নিয়াজ টি পারভীন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রাশিদা খানম, এক্সিকিউটিভ জেনারেল ম্যানেজার ডা. মোহাম্মদ মিজানুর রাহমান এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স) ডা. মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই অধ্যাপক গুলশান আরা বলেন, ‘পিএসজিবির থিম হচ্ছে “কৈশোরের কণ্ঠ শ্রবণযোগ্য”, অর্থাৎ তাঁদের কথা শুনতে হবে, তবেই মাসিকবান্ধব বিশ্ব গড়া যাবে। প্রতিদিন বিশ্বের ৩০ কোটি নারী ঋতুস্রাব অবস্থায় থাকে। তার মধ্যে ৫০ শতাংশই মানসম্মত মাসিক ব্যবস্থাপনা থেকে সুবিধাবঞ্চিত। যেখানে সমস্যা হিসেবে থাকে পানি, স্যানিটেশন, পরিচ্ছন্নতা, সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য প্রাপ্তি এবং সহায়ক পরিবেশ। তাই সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা এ ধরনের সমস্যা থেকে সমাধান দেবে।’
মাসিকবান্ধব বিশ্বের জন্য সচেতনতা কতটা জরুরি—এ প্রসঙ্গে জানান অধ্যাপক রওশন আরা বেগম। তাঁর মতে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, মাসিক শুধু নারীর নয়, এটি একটি মানবিক ও মানবাধিকারের বিষয়। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মাত্র ১৭ শতাংশ নারী প্যাড ব্যবহার করেন, মানে ৮২ শতাংশ বঞ্চিত; যা দুঃখজনক। আর গ্রামগঞ্জে নারীরা কাপড় ব্যবহার করেন। কারণ, তাঁরা দামি প্যাড ব্যবহার করতে পারে না। স্কুলে ৪০ শতাংশ মেয়ে তিন দিন স্কুলে এবং গার্মেন্টসে ছয় দিন কাজে আসে না। যা শিক্ষার ও অর্থনৈতিক ক্ষতি। এ ছাড়া পরিবারের সবাইকে এ সম্পর্কে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, মাত্র ৫ শতাংশ বাবা এবং ১ শতাংশ ভাই স্যানিটারি ন্যাপকিন সম্পর্কে জানেন। তাই এ ব্যাপারে সবার সচেতনতার পাশাপাশি কতক্ষণ ব্যবহার ও কতক্ষণ পরপর প্যাড পরিবর্তন করতে হবে, সেটা জানাতে হবে। পাশাপাশি কম মূল্যে স্কুল, গার্মেন্টস এবং সর্বত্র স্যানিটারি প্যাড পৌঁছাতে হবে।
মাসিক সম্পর্কে যথাযথ শিক্ষা প্রদান প্রসঙ্গে অধ্যাপক এস কে জিন্নাত আরা নাসরিন বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে ঋতুস্রাব বিষয়টি অবহেলিত। এ অবহেলার কারণ হলো বিষয়টি সম্পর্কে যথাযথ শিক্ষা না থাকা। আজকের গোলটেবিলকে অবশ্যই প্রান্তিক মেয়েদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। পাশাপাশি তাঁর পরিবারকেও সচেতন করতে হবে।’
সামাজিক ট্যাবু সম্পর্কে বলতে গিয়ে ফেরদৌসি ইসলাম লিপি বলেন, ‘অনাদিকাল থেকে মাসিক নিয়ে কুসংস্কার চলে আসছে। যার সঙ্গে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় একটা ব্যাপার জড়িয়ে আছে। সেগুলো হলো সে অপবিত্র, খেলাধুলা করতে পারবে না, স্কুলে যেতে পারবে না, অনুষ্ঠানে যেতে পারবে না, মৃত মানুষকে দেখতে যেতে পারবে না, রান্নাবান্না করা যাবে না, তাঁদের হাতে কেউ খাবার খাবে না ইত্যাদি রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য ও বিশেষজ্ঞ মাধ্যম থেকে হতে হবে সচেতন।’
গোলটেবিলের একপর্যায়ে অধ্যাপক ইফফাত আরা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার সময় সম্পর্কে জানান। তাঁর মতে, মেয়েদের মাসিক হওয়ার আগের লক্ষণ এবং রক্তস্রাবের পরিমাণ সম্পর্কে জানতে হবে। তাই মাসিকের প্রভাবে কারও যদি এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে অতিরিক্ত রক্তস্রাব এবং ব্যথা হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মাসিককালীন মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অধ্যাপক সামিনা চৌধুরী বলেন, ‘সাধারণত ১১ থেকে ১৪ বছর বয়সেই মেয়েদের মাসিক শুরু হয়। এ সময় তাঁদের শারীরিক ও হরমোনের পরিবর্তন হয়ে থাকে, যা তাঁকে বিব্রতকর ও চিন্তিত করে। সুতরাং মাসিক শুরুর আগেই যদি মেয়েটি এ নিয়ে জানত, সে এটিকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারত। সমীক্ষায় দেখা গেছে, এ সময় ২৫ শতাংশ মেয়ের ওপরই মানসিক প্রভাব পড়ে। তাই এ সময়ে কিশোরীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে।’
নীতিনির্ধারকদের ভূমিকা প্রসঙ্গে অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ান বলেন, ‘মাসিক স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক পলিসি করতে হবে। যেখানে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে, যাঁরা প্রতিটি পদক্ষেপ নেবেন। এ পলিসির আওতায় স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এ সম্পর্কে জানা বাধ্যতামূলক, শিক্ষকদের প্রশিক্ষিত করা, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে এ সময় মেয়েদের যাতায়াত, পরিচ্ছন্ন স্যানিটেশন ব্যবস্থা, কমিউনিটিকে সচেতন করতে মিডিয়া ও ধর্মীয় নেতাদের অগ্রণী ভূমিকা পালন নিশ্চিত করতে হবে।’
মাসিক যাঁর হয়েছে, তাঁরও কিছু বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এ বিষয়ে অধ্যাপক সালেহা বেগম চৌধুরী বলেন, ‘স্বাস্থ্যসচেতন না হলে যে ধরনের সমস্যা হয়, সেগুলো হলো মাসিকের অস্বাভাবিকতা, এন্ডোমেট্রিওসিস হওয়া, পিসিওএস হওয়া, অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া, প্রজননতন্ত্রে ইনফেকশন হওয়া ইত্যাদি। এর থেকে মুক্তি পেতে স্বাস্থ্যকর খাবার ও মাসিককালীন শারীরিক কসরত করা দরকার।’
মাসিক অব্যবস্থাপনার প্রভাব সম্পর্কে অধ্যাপক সাবেরা খাতুন বলেন, ‘মোটা দাগে বলব, অস্বাস্থ্যকর মাসিক ব্যবস্থাপনায় একজন নারীর জরায়ুমুখের ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই দরকার সঠিক সচেতনতা। তাই মাসিকবিষয়ক অনুষঙ্গকে টিসিবি পণ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যখন প্রথম মাসিক হলে সেটিকে উদ্যাপন করতে হবে। যে প্রতিষ্ঠানগুলো প্যাড তৈরি করে, তারা যেন স্বাস্থ্যকর পরিবেশের প্রস্তুত করে, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।’
তৃণমূল পর্যায়ে মাসিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত প্রসঙ্গে অধ্যাপক সালমা রউফ বলেন, ‘মাসিককালীন নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে পরিবারের খোলামেলা আলোচনা খুব একটা হয় না। মাসিককালীন করণীয় সম্পর্কে মায়েরা তাঁদের মায়েদের থেকে যা শিখেছেন, তা–ই তিনি সন্তানদের শেখান। তাই এ ব্যাপারে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শেখানোর আয়োজন করা দরকার এবং পলিসি তৈরি করে সেটি কাজ করছে কি না, তা মনিটরিং করতে হবে।’
স্যানিটারি প্যাড পাওয়ার ক্ষেত্রে সহজলভ্যতা নিশ্চিত বিষয়ে অধ্যাপক ফাতেমা রহমান বলেন, ‘কম বয়সে কোনো মেয়ের মাসিক হলে তার জন্য যথাযথ মাসিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে, এখানে মায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। দোকান থেকে পরিবারের কোনো সদস্য স্যানিটারি প্যাড দিতে হবে। আর এ প্যাডের দামের ব্যাপারে পরিবার আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে তৎক্ষণাৎ হলে সমাধান দেওয়া যায়। তাই যার যার অবস্থান থেকে ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করলে এ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সহজ হবে।’
অধ্যাপক শামছুন নাহার লাকি সচেতনতার শুরু কোত্থেকে হবে, সে বিষয়ে জানান। তাঁর মতে, ‘এই গোলটেবিলের মাধ্যমে আমরা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানালেই হবে না, তৃণমূল পর্যায়েও এসব তথ্য পৌঁছে দিতে হবে। আর শুরু করতে হবে মেয়েদের প্রথম মাসিকের সময় থেকেই। এ জন্য পরিবারকে সচেতন হতে হবে। নাহয় মেয়েটির ভবিষ্যৎ গর্ভধারণ ঝুঁকিতে পড়বে। তাই আপনার মেয়ের যখন অস্বাভাবিক ব্যথা, অনিয়মিত মাসিক এবং বেশি পরিমাণ রক্তস্রাব হয়, তা হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।’
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য মাসিকবান্ধব কমিউনিটি ও তাঁদের সচেতন বিষয়ে অধ্যাপক নিয়াজ টি পারভীন বলেন, ‘প্রথমে সে কীভাবে তাঁর মাসিক ব্যবস্থাপনায় অভ্যস্ত, সেটি জানতে হবে। সেখানে যদি অস্বাস্থ্যকর পদ্ধতি থাকে, সেটির প্রভাব সম্পর্কে তাকে জানাতে হবে। সর্বশেষ নীতিনির্ধারকদের সহযোগিতা করতে হবে, যাতে ন্যূনতম মূল্যে প্রান্তিক মেয়েরা স্যানিটারি প্যাড পেতে পারে।’
কর্মক্ষেত্রকে মাসিকবান্ধব করার ব্যাপারে অধ্যাপক রাশিদা খানম বলেন, ‘মাসিক নিয়ে খোলাখুলি সম্মানজনক আলোচনা করা, কেউ এটি নিয়ে অসম্মানজনক-বিদ্রূপ কথা বলে তার বিরুদ্ধে কঠোর নীতি অবলম্বন করা, সুপারভাইজারকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষিত করতে হবে, যাতে তাঁর অধস্তনের খেয়াল রাখতে পারে। নারীদের জন্য মাসিকবান্ধব টয়লেট থাকতে হবে, তাঁর প্রতি নমনীয়তা, বিশ্রামের ব্যবস্থা এবং তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নজর ইত্যাদি থাকতে হবে। এ বিষয়গুলো থাকলে কর্মক্ষেত্রও মাসিকবান্ধব হবে।
নারী ও কিশোরী স্বাস্থ্যের জন্য এসকেএফের ভূমিকা সম্পর্কে ডা. মোহাম্মদ মিজানুর রাহমান বলেন, ‘২০২৫ সালে এসেও এটা নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে, এটাই বিব্রতকর। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে মেয়েদের প্রথম মাসিক হয়ে থাকে, তাঁদের মধ্যে ৩২ শতাংশ এর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানেন। বাকিরা জানেন না। এ ব্যাপারে আমাদের এসেকেএফের ভূমিকা হচ্ছে, আমরা আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ সরবরাহ করি এবং জনসচেতনতামূলক কাজগুলো করে থাকি। এ আয়োজনে একাত্ম হতে পেরে নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ধারা অব্যাহত রাখবে বলে আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই।’