পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে খুলনা জেলায় পশুর ২২টি অস্থায়ী হাট বসেছে। হাটগুলোতে ইতোমধ্যে জমে উঠতে শুরু করেছে পশু বিক্রি। বিক্রেতারা জানান, ঈদের সময় যত এগিয়ে আসবে ততই বাড়তে থাকবে ক্রেতাদের উপস্থিতি। 

 

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এবার খুলনায় চাহিদার তুলনায় পশুর সরবরাহ রয়েছে পর্যাপ্ত। খুলনা জেলায় কোরবানিযোগ্য গবাদি পশু প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৩১টি। এর বিপরীতে চাহিদা ১ লাখ ৫৬ হাজার ২২৮টি। উদ্বৃত্ত থাকবে ৬৭৪৬টি পশু।

আরো পড়ুন:

বৃষ্টি বাগড়ায় পশুর হাটে ক্রেতা কম, দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা

আগেভাগেই পশুর হাট, দুর্ভোগে নগরবাসী

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.

মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, “গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছরও খুলনায় চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশুর সংখ্যা বেশি আছে। ফলে বাজার স্থিতিশীল থাকবে। এ বছর খুলনা জেলায় ২২টি অস্থায়ী পশুর হাট বসছে।”

খুলনার ৯টি উপজেলায় গড়ে উঠেছে ঈদকে কেন্দ্র করে অস্থায়ী পশুর হাট। এসব হাটে ইতোমধ্যে পশু উঠতে শুরু করেছে। রূপসা, দিঘলিয়া, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া, তেরখাদা, ফুলতলা, কয়রা ও বটিয়াঘাটার হাটগুলোতে গরু-ছাগলের পাশাপাশি ভেড়া ও মহিষও উঠছে।

প্রতিটি হাটেই স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে পশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও দাম নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেখানে থাকছেন ভেটেরিনারি চিকিৎসক, যারা গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সনদ প্রদান করবেন। স্বাস্থ্যসনদ ছাড়া কোনো পশু কেনাবেচা না করতে হাট ইজারাদারদের নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন।

সূত্র জানায়, প্রতিবছরের মতো এবারো নগরবাসী এবং গ্রামাঞ্চলের ক্রেতারা স্থানীয় হাটেই বেশি ভরসা রাখছেন। তবে, এবার দেশি পশুর জোগান বেশি থাকায় দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট

এছাড়াও পড়ুন:

মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে

চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব গত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর এর সরাসরি ফল ভোগ করছেন নগরবাসী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এবার ডেঙ্গুর চেয়েও চিকুনগুনিয়া ঘরে ঘরে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা এক নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। মশা নিধনে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবই এ রোগের দ্রুত বিস্তারের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। চট্টগ্রামে এভাবে জনস্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম নগর এডিস মশাবাহিত রোগের জন্য এখন অতি ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের জরিপ চালিয়েছিল। এই দুই জরিপের তুলনামূলক চিত্র আমাদের সামনে এক ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে—এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটিই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

২০২৪ সালে চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ছিল ৩৬ শতাংশ, যা এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় পৌঁছেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে চট্টগ্রামের এ চিত্র রীতিমতো ভয়াবহ। বাসাবাড়িতেও লার্ভার উপস্থিতি বেড়েছে। গত বছর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলেও এবার তা প্রায় ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিই হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরেই ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এবং ডেঙ্গুতে আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন এই জুলাই মাসে।

সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আইইডিসিআরের সুপারিশগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম দাবি করছেন যে মশকনিধনে ক্রাশ কর্মসূচি চলছে এবং নতুন জরিপ অনুযায়ী হটস্পট ধরে কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন হলো এ উদ্যোগগুলো কি যথেষ্ট? লার্ভার ঘনত্ব যেখানে তিন-চার গুণ বেশি, সেখানে গতানুগতিক কর্মসূচির ওপর নির্ভর করলে চলবে না।

মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। বাসাবাড়িতে নানা জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিও এডিস মশার প্রজননের জন্য যথেষ্ট। ফলে নাগরিকদের সচেতনতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম শহরকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন, নগর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; নগরবাসীকে দ্রুত তৎপর হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে