ক্রিকেট শুধু মাঠের খেলা নয় এটি এখন আবহাওয়া, রাজনীতি আর স্বাস্থ্যঝুঁকির সমন্বিত এক বাস্তবতা। এর প্রমাণ মিলল নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপ ২০২৫ উপলক্ষে। ৬ জুন শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল এই বহুল প্রত্যাশিত টুর্নামেন্টের, তবে সেটি আপাতত ঝুলে গেল অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য।  
এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) এর পক্ষ থেকে টুর্নামেন্ট স্থগিতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার পর ক্রিকেট মহলে শুরু হয়েছে আলোচনা। কারণ একটিমাত্র নয়—জটিলতা সৃষ্টি করেছে একসঙ্গে কয়েকটি ফ্যাক্টর।
শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর শক্তিশালী রূপ ও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল আগেই। দেশটির আবহাওয়া বিভাগ আশঙ্কা করেছিল, টানা বৃষ্টিতে খেলা মাঠে গড়ানো তো দূরের কথা, স্বাভাবিক জীবনযাপনই হবে বিপর্যস্ত। এমন অবস্থায় একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করা যেমন অযৌক্তিক, তেমনি ঝুঁকিপূর্ণও।
আরও উদ্বেগের নাম চিকুনগুনিয়া। ২০১০ সালের পর প্রথমবারের মতো দেশটিতে ভয়াবহভাবে ফিরে এসেছে এই মশাবাহিত ভাইরাসজনিত জ্বর। যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা শ্রীলঙ্কাকে উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ তালিকাভুক্ত করেছে। মে মাসেও বেশ কিছু প্রদেশে এর প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো।
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি) বোর্ডের চেয়ারম্যান শাম্মি ডি সিলভা বিষয়টি নিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন এসিসি সভাপতির কাছে। তাতে টুর্নামেন্ট আয়োজনের অব্যবস্থা, আবহাওয়া ও ভাইরাস পরিস্থিতির বিস্তারিত বিশ্লেষণ তুলে ধরার পরই এসিসি সিদ্ধান্ত নেয় টুর্নামেন্ট স্থগিত করার।
এর আগে কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার কূটনৈতিক উত্তেজনার কারণে ভারত এই টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়াতে পারে। যদিও এসিসির আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে সে বিষয়টি স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি, তবে এটি যে আলোচনার পেছনে থেকেছে, তা অস্বীকার করা যায় না।
নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপের যাত্রা শুরু হয়েছিল হংকংয়ে। প্রথম আসরে ভারত ‘এ’ দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে ৩১ রানে হারিয়ে। সেই আসরের সেরা খেলোয়াড় ছিলেন শ্রেয়াঙ্কা পাতিল। এবার দ্বিতীয় আসরের অপেক্ষায় ছিল পুরো এশিয়া, কিন্তু বাস্তবতা হলো—প্রতীক্ষা আরও দীর্ঘ হলো।
টুর্নামেন্ট পুনঃনির্ধারণের তারিখ এখনো প্রকাশ করেনি এসিসি। তবে তারা জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নতুন সময়সূচি পরে জানানো হবে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফোনে খালেদা জিয়া বললেন, ‘ভাই, জিয়াকে ড্রয়িংরুমে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।’
৭৫-এর উত্তপ্ত নভেম্বর
শেখ মুজিব হত্যার পর বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী ছিল দ্বিধাগ্রস্ত এবং দেশ প্রতিদিন অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। এদিকে খন্দকার মোশতাক ক্ষমতায় এসেই আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা সর্বজনাব নজরুল ইসলাম তাজউদ্দীন আহমেদ, মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামান ও আবদুস সামাদ আজাদকে আটক করেন এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী করে রাখেন। বাতাসে প্রতিনিয়ত নানা গুজব উড়ছিল ও সাধারণ নাগরিকগণ ভয়ভীতির মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন। সেনানিবাসেও অস্থিরতা বিরাজ করছিল এবং ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছিল যে, নিজেদের মধ্যে যে-কোনো সময়ে সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে আর্মিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরি ছিল।
পদাতিক বাহিনীর মধ্যে, বিশেষ করে ঢাকা ব্রিগেডের ১ম, ২য় ও ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টের অফিসারগণ মেজর ফারুক, রশিদ ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠছিল এবং আর্মির চেইন অফ কমান্ড পুনঃস্থাপনের জন্য তৎকালীন ব্রিগেড অধিনায়ক কর্নেল শাফায়াত জামিলও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিলেন। কারণ তাঁর অধীনস্থ অফিসার ও সৈন্যগণই তাঁর সার্বিক কর্তৃত্ব উপেক্ষা করে শেখ মুজিব হত্যায় জড়িত ছিল। এ পরিস্থিতিতে সেনাসদরে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফও সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসারদের অনিয়ম ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির কথা বলে উত্তেজিত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন।
মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী (অব.) বীরবিক্রম