অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে সর্বমোট ২৪২৩ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন। এর মধ্যে উন্নয়ন খাতে ১৪৪০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা এবং পরিচালন খাতে ৯৮২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। 

২০২৪-২৫ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে উন্নয়ন খাতের পরিমাণ ছিল ৬২৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং পরিচালন খাতের পরিমাণ ছিল ৯৫২ কোটি ৮৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে গত অর্থ বছরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মোট সংশোধিত বাজেট এর পরিমাণ ছিল ১৫৮০ কোটি ৭৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ এবারের প্রস্তাবিত বাজেট গত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪২ কোটি ২১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা বেশি। 

২০২৫-২৬ অর্থবছরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতায় যে সমস্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ (২য় পর্ব) প্রকল্প, নড়াইল বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ স্টেডিয়াম ও টেবিল টেনিস ভবনের অধিকতর উন্নয়ন এবং ইনডোর স্টেডিয়াম ও ভলিবল স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্প, বিকেএসপির প্রশিক্ষণ সুবিধাদির আধুনিকায়ন এবং ভৌত অবকাঠামোর সুবিধাদির উন্নয়ন প্রকল্প, দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে ব্যাপক প্রযুক্তি নির্ভর সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা (৩য় পর্যায়) প্রকল্প, টেকনোলজি এমপাওয়ারমেন্ট সেন্টার অন হুইলস ফর আন্ডার প্রিভিলেজড রুরাল ইয়ং পিপলস অব বাংলাদেশ (২য় পর্যায়), ফিজিবিলিটি স্টাডি ফল নিউ প্রজেক্টস অব ডিওয়াইবি, ৬৪টি জেলায় তথ্য প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প, দেশের ৪৮টি জেলায় কর্মপ্রত্যাশী যুবকদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র, সাভার, ঢাকার প্রশিক্ষণ সুবিধাদি সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ, ‘লিভিং নো ওয়ান বিহাইন্ড : ইম্প্রুভিং স্কিলস এন্ড ইকনোমিক অপরচুনিটিস ফর উইমেন এন্ড ইয়ুথ ইন কক্সবাজার’, বাংলাদেশ প্রকল্প, ইকোনোমিক এ্যাকসিলারেশন এন্ড রিজিলিয়েন্স ফর নিট, লাইফ স্কিলড এডুকেশন ইন ইয়ুথ ট্রেনিং সেন্টার অব ন্যাশনাল ইয়ুল প্ল্যাটফর্ম প্রকল্প।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রতি বছর বাজেটে যে খাতসমূহে বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বেকার যুবকদের আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উন্নয়নমূলক কাজে যুবকদের স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণে উৎসাহিতকরণ, সফল যুবকদের পুরস্কার প্রদান ও যুব সংগঠনকে অনুদান প্রদান, যুব কার্যক্রমের উপর গবেষণার ও জরিপ, জাতি গঠনমূলক কাজে যুবকদের সম্মৃক্তকরণ ও ক্ষমতায়ন, যুবকদের প্রশিক্ষণ, উন্নয়ন ও কল্যাণমুখী যাবতীয় কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও তাদের জাতীয় উন্নয়নে মূলধারার সাথে সম্পৃক্তকরণ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন  অংশগ্রহণ ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান, ক্রীড়াক্ষেত্রে প্রতিভা অন্বেষণ, গ্রামাঞ্চলে ক্রীড়া পরিবেশ সৃষ্টি ও দক্ষ ক্রীড়াবিদ তৈরি, বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থাকে অনুদান প্রদান ও অসচ্ছল ক্রীড়াবিদদের কল্যাণ অনুদান প্রদান ও ক্রীড়া স্থাপনা নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ।

আরো পড়ুন:

ঠিকাদারি কাজে উৎসে কর কমল

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার বিধান সংবিধান পরিপন্থি: টিআইবি

তথ‌্যসূত্র: বাসস

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প য বকদ র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি কর্মচারীরা মহার্ঘ ভাতার বদলে বিশেষ প্রণোদনা পেতে পারেন

আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি আজ সোমবার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘২০১৫ সালের পর কোনো বেতনকাঠামো না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।’

দীর্ঘদিন ধরে সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘মহার্ঘ ভাতার বিষয়টি অ্যাকটিভলি কনসিডার করছি। একটা কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছি। তারা এটা নিয়ে কাজ করছে। মহার্ঘ ভাতা হওয়ার চান্স মোটামুটি। হয়তো একটু সময় লাগবে।’

তবে বাজেট বক্তৃতায় ‘মহার্ঘ ভাতা’ নিয়ে কিছু উচ্চারণ করেননি অর্থ উপদেষ্টা। শুধু বাজেট বক্তব্যেই নয়, তিনি কখনোই মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।

সরকারি কর্মচারীরা বর্তমানে যে বেতনকাঠামো অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন তা ২০১৫ সালের ১ জুলাই কার্যকর করা হয়েছিল। তাঁরা মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এর পর থেকে ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি অর্থাৎ ইনক্রিমেন্ট পেয়ে আসছেন।

তবে মূল্যস্ফীতি আমলে নিয়ে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে সরকারি কর্মচারীরা ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাচ্ছেন। সে প্রণোদনাই এবার আরেকটু বাড়ানো হতে পারে। ১০ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য বিদ্যমান ৫ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি আরও ১০ শতাংশ অর্থাৎ মোট ১৫ শতাংশ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। আর প্রথম থেকে নবম গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য ভাবা হচ্ছে বিদ্যমান ৫ শতাংশের পাশাপাশি আরও ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১০ শতাংশ প্রণোদনা।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর থেকে সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয় ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে। চলতি ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার জন্য একটি কমিটি কাজ শুরু করে। এ নিয়ে বিরূপ সমালোচনা শুরু হলে সরকার পরে পিছিয়ে যায়। নতুন করে আলোচনাটি আবার শুরু হয় গত মাসে। এ বিষয়ক কমিটি প্রথম থেকে নবম গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের জন্য মূল বেতনের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ এবং ১০ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা সুপারিশ করে।

বাজেট সংক্ষিপ্তসার অনুযায়ী, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাবদ ১৩ হাজার ৪৮৩ কোটি ও কর্মচারীদের বেতন বাবদ ৩০ হাজার ৪৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তাঁদের ভাতা বাবদ বরাদ্দ ৪১ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। বেতন-ভাতায় মোট বরাদ্দ করা হয়েছে ৮৪ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ৮২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে বাড়ছে ১ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা।

অর্থ উপদেষ্টা বাজেট বক্তব্যে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করার পর প্রথম আলোর পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলা হয়। অর্থ বিভাগ থেকে এমন আভাস পাওয়া গেছে যে শেষ পর্যন্ত মহার্ঘ ভাতা নামে কিছু না–ও দেওয়া হতে পারে। যে বিশেষ প্রণোদনা বর্তমানে দেওয়া হচ্ছে তার সঙ্গে বাড়তি কিছু যোগ হতে পারে। তবে মহার্ঘ ভাতা বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। আগামী ঈদের পর এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।

মহার্ঘ ভাতার আলোচনা শুরু হলে একদিকে রাজনৈতিক দল বিএনপি, অন্যদিকে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর বিরোধিতা করে। এ বছরের ১৮ জানুয়ারি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘এই সময়ে মহার্ঘ ভাতা দিলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে।’

এক সপ্তাহ আগে গত ২৭ মে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে প্রশ্ন তোলেন, ‘এটা (মহার্ঘ ভাতা) কি সরকারি কর্মকর্তাদের খুশি করতে করা হচ্ছে?’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৩ লাখ ২০ হাজার টন জ্বালানি তেল কিনবে সরকার
  • ‘সামনে হয়তো আম-ছালা দুটাই যাবে’
  • মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প থেকে হবিগঞ্জকে ‘বাদ দেওয়ার চেষ্টার’ প্রতিবাদ
  • প্রস্তাবিত বাজেট জনবান্ধব: অর্থ উপদেষ্টা
  • বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন শুরু
  • নারীর অস্বীকৃত কাজের স্বীকৃতি নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্য, স্বাগত জানিয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
  • বাজেটে পুঁজিবাজার উন্নয়নে সহায়ক নীতিমালা রয়েছে: ডিএসই
  • সরকারি কর্মচারীরা মহার্ঘ ভাতার বদলে বিশেষ প্রণোদনা পেতে পারেন
  • আর্থিক খাতকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা