অতিরিক্ত ভাড়ার আবদার পূরণ হয়নি, তাই স্পিডবোট বন্ধ করে দিলেন মালিকেরা
Published: 3rd, June 2025 GMT
কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে ঈদযাত্রার ১০ দিন ২১০ টাকার ভাড়া ৩০০ টাকা নির্ধারণের আবদার করেছিলেন স্পিডবোট মালিকেরা। দাবি না মানা হলে আগামী বুধবার (৪ জুন) থেকে স্পিডবোট চালানো বন্ধ করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা; কিন্তু এর এক দিন আগেই আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল থেকে এই নৌপথে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। এতে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাড়ির পথে রওনা দেওয়া যাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়েছেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও স্পিডবোট মালিকদের সূত্রে জানা গেছে, পাবনার বেড়া উপজেলার কাজীরহাট থেকে মানিকগঞ্জের আরিচা পর্যন্ত নৌপথের দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। ২০১৮ সালে বিআইডব্লিউটিএ এই নৌপথে স্পিডবোটের ভাড়া জনপ্রতি ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। ওই সময় ঘাটের নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে। তাঁরা সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে জনপ্রতি ২৫০ টাকা ভাড়া আদায় করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্পিডবোট ঘাটের নিয়ন্ত্রণ যায় বিএনপির নেতা–কর্মীদের হাতে। তাঁরাও একই হারে অর্থাৎ ২৫০ টাকা করে আদায় করতে থাকেন; কিন্তু গত এপ্রিলে বিআইডব্লিউটিএ দেশের বিভিন্ন নৌপথের সঙ্গে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে এই নৌপথের ভাড়া ২১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়; কিন্তু এবারও সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে বোটমালিকেরা ২৫০ টাকা করে ভাড়া আদায় করতে থাকেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সপ্তাহখানেক আগে বোটমালিকেরা সরকারনির্ধারিত ২১০ টাকা ভাড়া আদায়ে বাধ্য হন। সেই থেকে ২১০ টাকা করেই ভাড়া আদায় চলে আসছিলেন।
পন্টুনে না রেখে যমুনার পাড়ে বেঁধে রাখা হয়েছে অর্ধশতাধিক স্পিডবোট। আজ মঙ্গলবার কাজীরহাট নৌঘাট এলাকায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক জ রহ ট ২১০ ট ক ন পথ র
এছাড়াও পড়ুন:
দৌলতদিয়ায় ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে পন্টুনের কবজা, যানবাহন পারাপার ব্যাহত
তীব্র স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ৩ নম্বর পন্টুনের কবজা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে ঘাটটি। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে দৌলতদিয়ায় শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু আছে। এতে যানবাহন পারাপারে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে এবং সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় ও ঘাট-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে পদ্মায় তীব্র স্রোত দেখা দেয়। সন্ধ্যার পর এর তীব্রতা আরও বাড়ে। রাত ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা রো রো ফেরি শাহ পরান দৌলতদিয়ায় পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় ফেরিটি প্রচণ্ড বেগে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুনে ধাক্কা দিলে কবজা ভেঙে যায়। এর পর থেকে ঘাটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর আগে ২৩ আগস্ট থেকে তীব্র স্রোতের কারণে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটও বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে চারটি ঘাটের মধ্যে কেবল ৪ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে। সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী পরিবহন এবং জরুরি কিছু পণ্যবাহী গাড়ি পার করা হচ্ছে। তবে সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।
দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্টে (৩ নম্বর ঘাট) দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির নিরাপত্তা পরিদর্শক ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া বলেন, গতকাল রাতে ফেরি শাহ পরান ঘাটে ভেড়ার সময় প্রচণ্ড ধাক্কায় পন্টুনের কবজা ভেঙে যায়। তখন থেকে ঘাটটি বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কয়েক দিন ধরে সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা থেকে অনেক গাড়ি দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এ কারণেও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গাড়ির চাপ পড়ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়া প্রান্তে প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন তৈরি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির লাইন আরও লম্বা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় চালকসহ যাত্রীদের বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
সৌহার্দ্য পরিবহনের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, ‘শুধু একটি ঘাট চালু থাকায় যানবাহন স্বাভাবিকভাবে পার হতে পারছে না। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামুখী গাড়ি আটকে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। আমাদের চারটি যাত্রীবাহী বাস চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে আছে। বাসগুলো ফেরিতে উঠতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো সময় লাগছে।’
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে অনেক বেশি সময় লাগছে। গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। যাত্রীবাহী বাস ও কিছু জরুরি গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি আপাতত পার করা যাচ্ছে না।