আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
Published: 3rd, June 2025 GMT
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সচিবালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা এ ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতৃত্বে কর্মচারীরা সকাল ১১টার দিকে সচিবালয়ের চার নম্বর ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিল নিয়ে তারা সচিবালয় চত্বর প্রদক্ষিণ করে ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদাম তলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
আরো পড়ুন:
সচিবালয়ে আন্দোলন
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা, ১ জুন থেকে কর্মবিরতি থাকছে না
বুধবার সচিবালয় চলবে স্বাভাবিক নিয়মে
ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো.
তিনি বলেন, “অধ্যাদেশ বাতিল বা আমাদের সঙ্গে যদি কোনো আপস না করা হয়, আমরা শুধু কর্মবিরতি না অবস্থান কর্মসূচিও দিতে পারি। আমরা সারাদেশে এ কর্মসূচি ছড়িয়ে দেব। আমরা সব সরকারি সেক্টর স্তব্ধ করে দেওয়ার মতো ক্ষমতা রাখি। সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সহযোগিতার জন্য এমন কর্মসূচি দিচ্ছি না। আপনারা আমাদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছেন।”
“আমরা আগামী ১৫ জুনের মধ্যে যদি কোনো ভালো সংবাদ না পাই তা হলে ওইদিন বসে কঠোর কর্মসূচি দেব। আমরা বলতে বাধ্য হব- আপস নয়, সংগ্রাম”, যোগ করেন ফোরামের এই কো চেয়ারম্যান।
ঐক্য ফোরামে কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর বলেন, “বুধবার (৪ জুন) যেহেতু ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস, তাই আমাদের কোনো কর্মসূচি থাকবে না। আগামী ১৬ জুন আপনারা সবাই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন। ওই দিন সকাল ১১টায় কেউ যাতে কর্মস্থলে না থাকেন। আমরা সবাই একত্রিত হয়ে সমস্বরে বলব- অবৈধ কালো আইন, মানি না মানবো না।”
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের মহাসচিব মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, আপনারা মনে কইরেন না কর্মচারীরা বোকা। আপনাদের কাছে আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল, সেটা আর পূরণ হলো না। আপনারা চাচ্ছেন, আপনাদের সঙ্গে সংঘর্ষ। ইনশাআল্লাহ যদি বেঁচে থাকি, ঈদের পরে সংঘর্ষ করেও যদি হয়, তারপরও কালো আইন বাতিল করব।”
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে কর্মচারীরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সামনে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন। এরপর অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।
চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে; এমন বিধান রেখে গত ২৫ মে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত আম দ র আপন র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাদেশের কিছু ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে: আইন উপদেষ্টা
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ কিছু ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। এ বিষয়ে কর্মচারীদের আপত্তিগুলো শোনা ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেওয়ার লক্ষ্যে উপদেষ্টা পর্যায়ে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-কে ‘কালো আইন’ আখ্যায়িত করে এটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। ঈদের পর প্রয়োজন হলে আন্দোলন কর্মসূচি ডিসি অফিস, বিভাগীয় অফিসসহ সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কর্মচারী নেতারা।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।
ওই স্মারকলিপি পাওয়ার পর আইন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, এই অধ্যাদেশের ব্যাপারে তাঁদের (কর্মচারীদের) অনেক আপত্তি আছে। তাঁদের আপত্তিগুলো শোনার পূর্ণ মানসিকতা সরকারের রয়েছে। তিনি (আইন উপদেষ্টা) যত দূর জানেন, এ বিষয়ে উপদেষ্টা পর্যায়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে আপত্তিগুলো ভালো করে শোনা ও বিবেচনা করা এবং সুপারিশ করা। কমিটি প্রস্তাব দেবে। অধ্যাদেশটি উপদেষ্টা পরিষদে পাস হয়েছে, তাই উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপিত হবে।
আরও পড়ুন‘এমন কর্মসূচি দেব, কল্পনা করতে পারবেন না’৬ ঘণ্টা আগেএক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, এমনি আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়েছে কিছু ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে। অপপ্রয়োগের সুযোগ থাকা কখনো প্রত্যাশিত ব্যাপার হতে পারে না। ভালো করে শোনা ও বোঝার জন্যই কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
এর আগে গত রোববার অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন কর্মচারীরা। সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘আমি অধ্যাদেশটি দেখেছি। উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজনের নজরে এই জিনিসটা এনেছি। এখানে কিছু প্রভিশন আছে, যেগুলো অপপ্রয়োগের সম্ভাবনা আছে।’
অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবি জানিয়ে খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের কাছেও স্মারকলিপি দিয়েছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। আন্দোলন চলার মধ্যেই অধ্যাদেশটি জারি করে সরকার। এর পর থেকে বিক্ষোভ, কর্মবিরতি ও স্মারকলিপি দেওয়ার মতো কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।
আরও পড়ুনঅধ্যাদেশের কিছু বিধানের অপপ্রয়োগের আশঙ্কা রয়েছে: উপদেষ্টা ফাওজুল০১ জুন ২০২৫