চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন ড. ইউনূস
Published: 3rd, June 2025 GMT
মর্যাদাপূর্ণ ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ নিতে ৯ জুন লন্ডন সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর সফরকে সরকারি সফর হিসেবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। সফরে তিনি রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে। বৈঠকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতে লন্ডনের সহায়তা চাইবে ঢাকা।
চার দিনের সফর শেষ করে ১৩ জুন ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। ১৪ জুন সকালে তাঁর ঢাকা থাকার কথা রয়েছে। ১১ জুন লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে ড.
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের অন্যতম প্রধান গন্তব্য ছিল যুক্তরাজ্য। বৈঠকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের বিষয়টিও আলোচনায় আসতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণসহ সংস্কার কার্যক্রমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক সমর্থনের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের নৃশংসতার বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচনের পরিক্রমায় এগিয়ে যাওয়ার উদ্যোগে যুক্তরাজ্যের সমর্থনের বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে।
১২ জুন বাকিংহাম প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন ড. ইউনূস। ওইদিন বিকেলে সেন্ট জেমস প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের হাত থেকে কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড নেবেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টা লন্ডন সফরের সময় ১১ জুন যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত এক সংলাপে অংশ নেবেন। ওই সংলাপের প্রতিপাদ্য ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যতের পথে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’।
যুক্তরাজ্যের দাতব্য প্রতিষ্ঠান কিংস ফাউন্ডেশন গত বছর কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড চালু করেছে। ২০২৪ সালে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন।
সফরের সঙ্গে জড়িত সরকারি একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ড. ইউনূসের লন্ডন সফর ঘিরে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বর্তমানে সেখানে অবস্থান করছেন। সেখানে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়েও গুঞ্জন রয়েছে।
জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টার সফরে একটা ‘উইন্ডো’ রাখা হতে পারে, যদি তারেক রহমান চান তাহলে যাতে বৈঠক হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড ইউন স য ক তর জ য য ক তর জ য চ র লস ইউন স র সফর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ
বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।
দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।
পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।
বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’
সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসীসম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।
এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।
সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।
রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা